প্রকাশিত : ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ২১:৩৭

নওগাঁর পত্নীতলায় বাগানের ৮শ আম গাছ কেটে ফেললো প্রভাবশালীরা

নওগাঁ সংবাদদাতাঃ
নওগাঁর পত্নীতলায় বাগানের ৮শ আম গাছ কেটে ফেললো প্রভাবশালীরা

নওগাঁর পত্নীতলায় জোরপূর্বক আম বাগান দখল করে গাছ কেটে ফেলার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছেন এক ফল ব্যবসায়ী। শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে শহরের ঐতিহ্যবাহী প্যারিমোহন গ্রন্থাগারে লিখিত বক্তব্যে নিজের অসহায় অবস্থ্যার কথা তুলে ধরেন তিনি।
ভুক্তভোগী ওই ব্যবসায়ীর নাম আলহাজ¦ আবুল হোসেন (৫০)। তিনি ঢাকার সাভার জালেম্বর মহল্লার নিরাজ উদ্দীন দেওয়ানের ছেলে। তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নাম দেওয়ান এন্টারপ্রাইজ।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, নওগাঁর পত্নীতলা উপজেলার ব্যবসায়ী আনিছুর মোল্লার সঙ্গে ব্যবসায়িক সূত্রে দীর্ঘ বছরের বন্ধত্ব রয়েছে তার। ওই বন্ধুর মাধ্যমে ১২ বছর আগে পত্নীতলা উপজেলার পাটিচোরা ইউনিয়নের ছালিগ্রাম মৌজায় অবস্থিত ৪ দশমিক ৩২ একর জমি কেনেন তিনি। উপজেলার ঘোষপাড়া গ্রামের মৃত গোপেন্দ্রনাথ ঘোষ এর ছেলে গৌতম ঘোষ ও মেয়ে মিতালী রাণী ঘোষ এর কাছ কেনা এই সম্পত্তিটির ক্রয়মূল্য ছিলো ৬০ লাখ টাকা। পরে ওই জমিতে তিনি ১ হাজার ২০০টি বারী—৪ জাতের আম গাছের চারা রোপণ করে ভোগদখল করে আসছিলেন। আম গাছগুলো বড় হয়ে গত চার বছর যাবত ফল দিয়ে আসছিলো। প্রতি বছর ওই জমি থেকে প্রায় ১০ লাখ টাকার আম বিক্রি করে সাংসারিক খরচ বহনের পাশাপাশি সন্তানদের ভবিষ্যতের জন্য সঞ্চয়ের পরিকল্পনা ছিলো তার। এরই মধ্যে গত ১৫ সেপ্টেম্বর পূর্ব পাটিচোরা গ্রামের নাইম হোসেন ও তার দুই ভাই লেমন হোসেন এবং ছেলিম হোসেনসহ আরো ২০/২৫জন হাসুয়া, দা, কুড়াল, লাঠি—সোঠা নিয়ে ওই আম বাগানে ঢুকে ৮শ টির বেশী আম গাছ কেটে ফেলে। 

তিনি আরও বলেন, বাগানের কাছ কেটে ফেলার ওই মুহুর্তে বর্গাদার আব্দুস সামাদ এ তান্ডবে বাঁধা দিতে গেলে তাকেও মেরে ফেলার হুমকি দেয় তারা। এতে প্রায় ১ কোটি টাকার ক্ষতির মুখে পড়ায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেও প্রতিকার পাচ্ছেন না তিনি। ঢাকার বাসিন্দা এবং ব্যবসায়িক কাজে ব্যস্ত থাকার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে সন্ত্রাসীরা তার কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা চাঁদা নেওয়ার পায়তারা করছে। তাই দ্রুত তদন্ত সাপেক্ষে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানান ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী। 

সংবাদ সম্মেলনে ব্যবসায়ী আবুল হোসেনসহ তার ছেলে শফিউল্লাহ দেওয়ান এবং ভাতিজা শোভন শাহারিয়ার উপস্থিত ছিলেন।

এবিষয়ে জানতে অভিযুক্ত নাইম হোসেন হোসেন এর মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ভূমিহীন হওয়ায় ১৯৮৮ সালে জমিটি পত্তনী চেয়ে সরকারের কাছে আবেদন করেছিলাম। সেই আবেদনের প্রেক্ষিতে ১৯৯১ সালে পত্তনি পাওয়ার পর জমিটি আমাদের নামে খারিজ করা হয়। পত্তনি মূলে আমাদের নামে হোল্ডিং রয়েছে। আবুল হোসেনের জমির দাগ আলাদা হওয়া সত্বেও সে জোরপূর্বক আমাদের জমি দখলে নেওয়ার চেষ্টা করছিলো। যেহেতু জমিটি আমাদের, তাই আমরাই দখলে নিয়েছি। কেটে ফেলা আম গাছগুলো আমাদের।

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে পত্নীতলা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এনায়েতুর রহমান বলেন, বাগানের মালিকানা সংক্রান্ত জটিলতায় হুমকি ধামকি ও ভয়ভীতির বিষয়ে বেশ কিছুদিন আগে থানায় থানায় অভিযোগ করেছিলেন ব্যবসায়ী আবুল হোসেন। এর কিছুদিন পর গাছ কেটে ফেলা ও অবৈধ দখল সংক্রান্ত বিষয়ে আবারো মৌখিক অভিযোগ করলে তাৎক্ষণিক থানা থেকে একটি টিম পাঠিয়ে সেটি বন্ধ করা হয়। পরবতীর্তে যতটুকু জেনেছি তিনি আদালতের শরণাপন্ন হয়েছেন। বিজ্ঞ আদালতের নিদের্শনা আসলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থ্যা গ্রহন করা হবে।

উপরে