প্রকাশিত : ৩ অক্টোবর, ২০২৪ ০২:০৯

নিয়ামতপুরে ধানক্ষেতে বিএলবি রোগের হানা ফলন বিপর্যয়ের আশঙ্কা

ইমরান ইসলাম, নিয়ামতপুর, নওগাঁঃ
নিয়ামতপুরে ধানক্ষেতে বিএলবি রোগের হানা ফলন বিপর্যয়ের আশঙ্কা
নওগাঁর নিয়ামতপুরে গত কয়েক দিনের বৃষ্টি ও প্রতিকূল আবহাওয়াজনিত কারণে থোর হওয়া আমন ক্ষেতে ব্যাকটেরিয়াল লিফ ব্লাইট (বিএলবি) বা পাতা ঝলসানো রোগ দেখা দিয়েছে। আমন মৌসুমে ধানক্ষেতে বিভিন্ন কীটনাশক প্রয়োগে পঁচন ও মাজরা পোকায় আক্রমণ কমলেও থোর হওয়া ধানে বিএলবি রোগের কারণে ফলন কম হওয়ার আশঙ্কা করছে কৃষকেরা।
সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন ফসলের মাঠ ঘুরে দেখা গেছে ধানক্ষেতে পাতা ঝলসানো রোগের চিত্র। থোর হওয়া আমন ধানক্ষেতের জায়গায় জায়গায় পাতা মরে গেছে। আবার কোনো কোনো ক্ষেতের ফসল পুরোটাই আক্রান্ত হয়েছে। ধানের জমিগুলোতে প্রথমে খয়েরি রং ধারণ করে এবং আস্তে আস্তে সকল স্থানে ছড়িয়ে পড়ছে। এক পর্যায়ে ধানের পাতাগুলো শুকিয়ে যাচ্ছে। ফসল বাঁচাতে তাঁরা বিভিন্ন ছত্রাকনাশক প্রয়োগ করেছেন।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় এবার আমন চাষ হয়েছে ৩০ হাজার ৬৯৫ হেক্টর জমিতে। বেশির ভাগ স্থানীয় জাতের ধানক্ষেতে বিএলবি বা পাতা ঝলসানো রোগ দেখা দিয়েছে। 
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা জানান, এবার আমন মৌসুমে গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টি ও প্রতিকূল আবহাওয়াজনিত কারণে আমন ক্ষেতে পাতা ঝলসানো রোগ দেখা দিয়েছে। বাতাসের মাধ্যমে তা এক ক্ষেত থেকে অন্য ক্ষেতে বিস্তারলাভ করে। আমন ধান থোর হওয়ার সময় এমন রোগে আক্রমণে ফলন তেমন একটা কম হওয়ার সম্ভাবনা নেই। তবে এন্টি ব্যাকটেরিয়া কীটনাশক প্রয়োগের মাধ্যমে এ রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব। কৃষি বিভাগের পরামর্শ নিয়ে আক্রান্ত ক্ষেতে সঠিক মাত্রায় ওষুধ প্রয়োগ করতে কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছেন তারা।
উপজেলার শ্রীমন্তপুর এলাকার কৃষক রতন মিয়া বলেন, চার বিঘা জমিতে এবার আমন আবাদ করেছি। টানা বৃষ্টির পরই কোনো কিছু বুঝে উঠার আগেই জমির ধানের পাতাগুলো শুকিয়ে গেছে। এই জমিগুলোতে নিশ্চিত ফলন বিপর্যয় ঘটবে বলে জানান তিনি।
কৃষক আহসান হাবিব বলেন, নিয়ামতপুরে পাতা ঝলসানো রোগ সবচেয়ে বেশি দেখা দিয়েছে। এ অবস্থা দেখে অনেক কৃষকই দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। কৃষি কর্মীদের পরামর্শ না পেলেও সার কীটনাশক ব্যবসায়ীদের পরামর্শে বাজারে বিভিন্ন কোম্পানির ছত্রাকনাশক ব্যবহার করছেন তিনি।
নিয়ামতপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কামরুল হাসান বলেন, এই রোগকে ব্যাকটেরিয়াল লিফ ব্লাইট বা সংক্ষেপে বিএলবি বলা হয়। জমিতে এমওপি (পটাশ) সারের অভাবে এই রোগের লক্ষ্মণ দেখা যায়। এই রোগে আক্রমণ হলে দিশেহারা না হয়ে জমি শুকনো রাখতে হবে। কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শে ওষুধ স্প্রে করলে দ্রুত ফল পাওয়া যাবে। মাঠ পর্যায়ে কৃষি কর্মকর্তারা কৃষকদের পরামর্শ প্রদান করছে। এই রোগের কারণে আমনের ফলনে তেমন একটা প্রভাব পড়বে না।
 
উপরে