আদমদীঘিতে পাঁচ বছরেও শেষ হয়নি স্কুলের চারতলা ভবনের কাজ
বগুড়ার আদমদীঘির গোড়গ্রাম মডেল আইডিয়াল স্কুলের চার তলাবিশিষ্ট নতুন ভবনের নির্মাণ কাজ পাঁচ বছর অতিবাহিত হলেও শেষ হয়নি। নির্ধারিত সময়ের চেয়ে সাড়ে তিন বছর অতিবাহিত হলেও আশি শতাংশ নির্মাণ শেষে বাঁকি অংশের কাজ ফেলে রেখেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। শ্রেণিকক্ষের সংকটের কারণে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের।
জানা যায়, উপজেলা সদরে গোড়গ্রাম মডেল আইডিয়াল স্কুলটি ১৯৯৯ সালে স্থাপিত হয়। বর্তমানে এই বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী রয়েছে ২৬০ জন। শিক্ষক ও কর্মচারী ১০ জন। বিদ্যালয়ের পুরাতন ভবনটি জরাজীর্ণ হয়ে পড়ায় ২০১৮ সালে সারা দেশে ৩ হাজার নতুন স্কুল নির্মাণ প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত হয় গোড়গ্রাম মডেল আইডিয়াল স্কুলটি। গত ২০১৮—১৯ অর্থবছরে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর থেকে একটি চার তলাবিশিষ্ট ভবন নির্মাণ করতে বলা হয়। এ জন্য প্রায় পৌনে তিন কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। ভবনের কাজ শেষ করার জন্য ১৮ মাস সময় নির্ধারণ করে ২০১৯ সালের ২১ জুলাই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেওয়া হয়। এরপর থেকে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি কচ্ছপ গতিতে কাজ করলেও প্রায় চার বছরে ভবনের ৮০ ভাগ কাজ শেষ করে বর্তমানে বাঁকি কাজ বছর খানেক ধরে এক বন্ধ রেখেছেন।
বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী ফাইম মাহাবুব ও সুরাইয়া আক্তার জানায়, শ্রেণিকক্ষ সংকটের কারণে ছোট ছোট রুমে গাদাগাদি করে ক্লাস করানো হচ্ছে। এসব রুমে ক্লাস করতে তাদের ভালো লাগে না। পুরাতন টিনশেড ঘরে ক্লাস নেওয়ার সময় ঝড় হলে খুবই ভয় লাগে। অনেক সময় বৃষ্টির পানি বইয়ে পড়ে ভিজেও যায়। তারা আরো জানায়, বিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থীর স্বপ্ন ছিল নতুন ভবনে ক্লাস করবে। কিন্তু এরই মধ্যে শিক্ষার্থীদের অনেকেই এসএসসি দিয়ে বিদ্যালয় ছেড়েছে। মাত্র ২০ শতাংশ কাজ শেষ না করলে আমাদের স্বপ্নও হয়তো পূরণ হবে না।
গোড়গ্রাম মডেল আইডিয়াল স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক আব্দুর রহিম বলেন, ‘অনেক কষ্ট করে আমরা একটি ভবন পেয়েছিলাম। পাঁচ বছর আগে ভবনের কাজ শুরু হলেও গত এক বছর ধরে কাজ একদমই বন্ধ আছে। আমরা জানি না, কেন কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। অবকাঠামো সংকটের কারণে শিক্ষার্থীদের পাঠদানে সমস্যা হচ্ছে।’
জানতে চাইলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তনু কন্সট্রাকশনের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক আরিফুল ইসলাম জানান, নির্মাণ সামগ্রী আনা নেওয়ার জন্য বিদ্যালয়ে যাওয়ার রাস্তাটি অত্যান্ত সরু ছিলো। তাছাড়া বৃষ্টি আর স্থানিয়দের অসহযোহিতার জন্য ভবন নিমার্ণ করতে সময় বেশি লেগেছে। তাঁর আপন বড় ভাই ছিলেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক। তিনি হঠাৎ মারা যান। একারনে এখন কাজটি বন্ধ রয়েছে। তবে অল্প দিনের মধ্যে তিনিই এই বিদ্যালয়ের অসমাপ্ত কাজ শেষ করতে চান।
বগুড়া জেলা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুজ্জামান বলেন, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সঠিক সময়ে অর্থ পাচ্ছিলেন না। এই প্রকল্পের অর্থ ছাড়ের বিষয়টি অনেক খারাপ ছিলো। তাছাড়া সেই সাথে ঠিকাদারেরও গাফিলতি ছিলো। একারনেই ভবন নির্মাণে বিলম্ব হয়েছে। এখন আর সমস্যা নেই। আগামী শনিবার থেকে বাঁকি অংশের কাজ শুরু হবে।