ক্ষেতলালে থামছেই না ফায়ার সার্ভিস স্টেশনে অনিয়ম
ভয়ভীতি দেখিয়ে অতিরিক্ত দামে দোকানীদের কাছে অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র (ফায়ার এক্সটিংগুইশার) সিলিন্ডার বিক্রি, কোল্ডস্টোরেজ ও অটোরাইচ মিল থেকে চাঁদা আদায় এবং অগ্নিলাইসেন্স নবায়নের নামে অর্থ আত্মসাৎ এর অভিযোগ উঠেছে জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্সের কমরত ফায়ারম্যান ও লিডারের বিরুদ্ধে।
এমন অভিযোগে গত ৮জুন দৈনিক যুগান্তরে নিউজ প্রকাশের পর ওই স্টেশনের গাড়ীচালক রায়হান আলীর শাস্তিমূলক বদলি হয়। এর দুইমাস পর একয় অভিযোগ ওঠে ওই স্টেশনের ফায়ারম্যান রেজওয়ান হোসেন ও লিডার তৌফিক হোসেনের বিরুদ্ধে।
জানাগেছে, ক্ষেতলাল ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্সে কমরত গাড়ীচালক রায়হান ও লিডার তৌফিক হোসেনের যোগসাজসে দীর্ঘদিন থেকে উপজেলার বিভিন্ন বাজারে দোকানীদের ভয়ভীতি দেখিয়ে অতিরিক্ত মূল্যে অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র বিক্রয় করতেন। দৈনিক যুগান্তরে নিউজ প্রকাশের পর গাড়ীচালক রায়হানের শাস্তি মুলক বদলি হয় সিলেট বিভাগের জামালপুর। রায়হান যাওয়ার পর ওই ঘটনার সাথে জড়িত ফায়ারম্যান রেজওয়ান হোসেন একয় কায়দায় আবার অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র (ফায়ার এক্সটিংগুইশার) সিলিন্ডার বিক্রি ও অগ্নিলাইসেন্স নবায়নে কথা বলে গ্রাহকদের কাছ থেকে ৩—৪ হাজার টাকা নিয়ে আত্মসাৎ করেছে। ভূক্তভুগীরা ওই ফায়ার স্টেশনে কর্মরত লিডার তৌফিক হোসেনকে একাধিকবার অভিযোগ দিয়ে কোন প্রতিকার পায়নি। বরং লিডার তৌফিক হোসেনের বিরুদ্ধে উপজেলার বিভিন্ন কোল্ডষ্টোরেজ, অটোরাইচ মিল থেকে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
নাম প্রকাশ করার শর্তে ওই স্টেশনে এক ফায়ারম্যান যুগান্তরকে বলেন, গত বৃহস্পতিবার ফায়ারম্যান রেজওয়ান লিডার তৌফিকের স্বাক্ষাতকার নিয়ে যাওয়ার পরের দিন এক ভূক্তভুগীকে স্টেশনে ডেকে তার টাকা ফেরত দিয়েছে।
উপজেলার ফুলদিঘী বাজারের মেসার্স সাকিব ইন্টারপ্রাইজের মালিক আঃ মালেক জানায়, ফায়ারম্যান রেজওয়ান হোসেন অগ্নিলাইসেন্স নবায়ন বা নতুন লাইসেন্স করে দেওয়া কথা বলে এক বছর আগে তার কাছ থেকে চার হাজার টাকা নিয়েছে। এখন পর্যন্ত লাইসেন্স দেয়নি। টাকা ফেরৎ চেয়ে ষ্টেশন লিডার তৌফিকের নিকট কয়েক বার অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার পায়নি। মহা—পরিচালক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছি।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ফায়ারম্যান রেজওয়ান হোসেন বলেন, দু’একটি অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র বিক্রয় করেছি। ফুলদিঘী বাজারের মালেকের নিকট থেকে ফায়ার লাইসেন্স নবায়ন করার জন্য ৩হাজার ছয়শত টাকা নিয়েছিলাম। আগের ডিডি স্যার জানার পর তাকে টাকা ফেরৎ দিতে বলেছিলেন। আমি তাকে টাকা ফেরৎ দেয়নি। কোল্ডষ্টোরেজ ও অটোরাইচ মিল থেকে টাকা আদায়ের সময় আমি ছিলামনা। লিডার তৌফিক স্যার ও ড্রাইভার রায়হান করেছে। আমি যা করেছি একা করেছি লিডার এরসাথে জরিত নাই।
লিডার তৌফিক বলেন, ষ্টেশনের আইপিএস মেরামতের জন্য ক্লোডটোরেজ ও অটোরাইচ মিল গুলো থেকে কিছু টাকা আদায় করেছিলাম। কেউ দুই হাজার কেউ এক হাজার টাকা দিয়েছে। এ অনিয়ম আমার জন্য করিনি স্টেশনের জন্য করেছি। ফায়ারম্যান রেজওয়ানকে মালেক নামে একব্যক্তি লাইসেন্সের জন্য টাকা দিয়েছে। এ বিষয়ে আমার উদ্ধতোনকে জানিয়েছি।
এবিষয়ে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের জয়পুরহাট উপ—পরিচালক সরিফুল ইসলাম বলেন, ফায়ারম্যান বা লিডার নিজ দায়িত্বে সিলিন্ডার ক্রয়—বিক্রয় করতে পারে না। স্টেশনে দায়িত্বে থাকা ইন্সপেক্টর অগ্নিনির্বাপক সিলিন্ডার কিনতে পরামর্শ দিতে পরে। সিলিন্ডার বিক্রয় বা কোন অনিয়মের অভিযোগ থাকলে মহা—পরিচালক বরাবর দিতে বলেন ডিপার্টমেন্ট তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবে।