প্রকাশিত : ১১ অক্টোবর, ২০২৪ ২৩:৩১
Kuakata
দুর্গা পূজার ছুটিতে পর্যটকের পদভারে মুখরিত সাগর কন্যা কুয়াকাটা
এ এম,মিজানুর রহমান বুলেট, কলাপাড়া, পটুয়াখালী
দুর্গা পূজার ৪ দিনের ছুটি উপলক্ষে পটুয়াখালীর সাগরকন্যা কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে ভিড় জমিয়েছে হাজারো পর্যটক। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকাল থেকেই সৈকতে এ সকল পর্যটকের আগমন ঘটে।
আগত পর্যটকরা সৈকতের বালিয়াড়িতে নোনা জলে গাঁ ভাসিয়ে আনন্দ উন্মাদনায় মেতেছেন। অনেকে আবার ঘুরছেন ঘোড়া মোটরসাইকেল কিংবা ওয়াটার বাইকে। অনেকে আবার সৈকতের বেঞ্চিতে বসে উপভোগ করছেন প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। দীর্ঘ প্রায় তিন মাস পর পর্যটকের এমন বাড়তি উপস্থিতিতে অনেকটা উচ্ছসিত ব্যবসায়ীরা। বিক্রি বেড়েছে পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতে। বুকিং রয়েছে কুয়াকাটার শতভাগ হোটেল-মোটেল। পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তা দিতে তৎপর রয়েছে থানা ও ট্যুরিষ্ট পুলিশের সদস্যরা।
শুক্রবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কুয়াকাটার জিরো পয়েন্ট থেকে শুরু করে আশেপাশের ১কিঃমিঃ জায়গা জুড়ে পর্যটকদের হৈ-হুল্লোড়। সমুদ্রের বুকে কেউ ঝাঁপিয়ে পড়ছে কেউ বা আবার দলবেঁধে সাতার কাটছে। আনন্দ উপভোগের দৃশ্য স্মৃতিপটে ধারণের জন্য কেউ বা আবার ছবি তুলছে।
অন্যদিকে দুর্গাপূজার এই চার দিনের ছুটিতে পর্যটক বাড়ায় ব্যস্থতা দেখা গেছে কুয়াকাটার সকল রেস্তোরাঁসহ পর্যটননির্ভর সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে। হোটেল মোটেলের কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে তাদের আবাসিক হোটেলে বুকিং ভালো আছে। পর্যটকদের উপস্থিতিতে স্বস্তি ফিরছে। তাদের আশা এখন থেকে এমন পর্যটকদের আনাগোনা থাকলে তাদের সংকট কাটিয়ে উঠবে খুব শ্রীঘ্রই।
সৈকতে বেঞ্চি ব্যবসায়ী মো. সগির বলেন, বৃহস্পতিবার থেকে চোখে পড়ার মত পর্যটক কুয়াকাটায় আসছে। আজকে শুক্রবার সৈকতে পর্যটকে মুখরিত। অনেকদিন পর আমরা অনেক পর্যটক দেখতেছি।
ক্যামেরাম্যান আলমাছ বলেন, পূজার ছুটিতে ভাল পর্যটক আসতেছে। আজ ভালোই পর্যটক বাড়ছে। এভাবে পর্যটক আসলে আমরা আমাদের সংকট কাটাতে পারব।
আচার বিক্রেতা আ: রহিম বলেন, পর্যটকরা এখন বেশি ক্রয় করেনা। শুধুই তাদের পুজামন্ডপে ঘুরে ফিরে চলে যায়। তবে আগের চাইতে বেচা-বিক্রি কিছুটা বাড়ছে।
খাবার হোটেলের ব্যবস্থাপক মো. সেলিম মিয়া বলেন, বিগত দুইমাস যাবৎ বেচা কিনা খুবই খারাপ ছিল ।বৃহস্পতিবার থেকে ভালোই বিক্রি করতে পারছি। আজ শুক্রবার আরো বাড়ছে। এখন আমাদের দুশ্চিন্তা কাটবে।
আবাসিক হোটেল কানসাই ইন'র ব্যবস্থাপক ফরাজি মো. জুয়েল বলেন, পরিবেশ স্বাভাবিক হওয়ায় পর্যটকের আগমন শুরু হয়েছে। বুকিং ৭০ শতাংশ আছে। স্বস্তি বিরাজমান করছে।
পর্যটক দম্পতি তামিম-সিবরা বলেন, দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ঠিক হওয়ায় পূজার লম্বা ছুটিতে কুয়াকাটায় আসা,তবে পাখিমারা থেকে শেখ রাসেল সেতু পর্যন্ত রাস্তার বেহাল দশা দেখে অনেক কষ্ট পেলাম। এটাকে জরুরী মেরামত করা উচিত। তারা বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে দাবি জানান, কুয়াকাটাকে আন্তর্জাতিক পর্যটনে উন্নিত করতে হলে ভাঙ্গা-কুয়াকাটা ফোরলেন কাজ অতিব জরুরী।
কুয়াকাটা হোটেল মোটেল ওনার্স অ্যাসেসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোঃ মোতালেব শরীফ বলেন, পুজার ছুটিতে পর্যটক বাড়তে শুরু করছে । প্রায় হোটেলের ৭০ শতাংশ রুম বুকিং রয়েছে। আসা করছি এখন থেকে আর পর্যটক খরায় পড়তে হবে না। দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ঠিক হয়েছে তার সাথে পর্যটকের আগমন ঘটেছে।
কুয়াকাটা পৌর প্রশাসক ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো: কৌশিক আহমেদ বলেন, আমরা দূর্গা পুজা উপলক্ষে সম্পুর্ন ভাবে পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য প্রস্তুত। দেশে চলমান অস্থিরতা কেটে যাওয়ার ফলে পুজার ৪ দিনের ছুটির কারনে পর্যটক বাড়ছে কুয়াকাটায়। তাদের নিরাপদ ভ্রমন ও হিন্দুদের পুজার নিরাপত্তার জন্য মহিপুর থানা পুলিশ, কুয়াকাটা টুরিস্ট পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসন আরো জোরদার করা হয়েছে।।