প্রকাশিত : ২৪ অক্টোবর, ২০২৪ ২৩:২৮

রংপুরে বৈষম্যবিরোধী মেডিকেল টেকনোলজি ও ফার্মেসি ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের মানববন্ধন

নিজস্ব সংবাদদাতা, রংপুরঃ
রংপুরে বৈষম্যবিরোধী মেডিকেল টেকনোলজি ও ফার্মেসি ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের মানববন্ধন

 ৬ দফা দাবিতে রংপুরে বৈষম্যবিরোধী মেডিকেল টেকনোলজি ও ফার্মেসি ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের মানববন্ধন । গতকাল [২৪ অক্টোবর] বৃহস্পতিবার দুপুরে নগরীর কাচারী বাজার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে এ মানববন্ধ করেন শিক্ষার্থীরা। মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা বলেন,  নিয়োগ কার্যক্রম বন্ধ থাকায় সরকারি চাকরিতে কর্মরত মেডিকেল টেকনোলজিস্টদের সংখ্যা মাত্র ৪১০৬ এবং মোট পদের সংখ্যা ৫৯৭৫ টি। চিকিৎসক ও নার্সের বিদ্যমান সংখ্যার অনুপাতে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট হওয়ার কথা ছিল ৮০ হাজারেরও বেশি। নিয়োগ জটিলতা শেষ হয়ে ২০২৩ সালের ১ আগষ্ট নবসৃষ্ট পদে ৮৮৯ জনকে নিয়োগ দেয় স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ যা প্রয়োজনের তুলনায় নিতান্তই নগণ্য। দীর্ঘদিন নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ থাকায় একটি বৃহৎ অংশের সরকারি চাকরিতে আবেদন বয়সসীমা পার হয়ে গেছে। নিজস্ব কোন দপ্তর না থাকায় এ দক্ষ অথচ বেকার জনগোষ্ঠী একপ্রকার হতাশাগ্রস্ত জীবন যাপন করছে। নিয়োগ জটিলতা কেটে গেলেও ২০১৩ সালে নিয়োগ প্রক্রিয়াটি এখনও নানাবিধ খেঁাড়া অযুহাতে আটকে রাখা হয়েছে। বিদ্যমান স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে কেবলমাত্র চিকিৎসক কেন্দ্রীক দাপ্তর হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে। এর যাবতীয় সুবিধাদি, পদ পদবী, পদোন্নতি সামগ্রিক ক্ষেত্রসমূহে কেবলমাত্র চিকিৎসকদের নিয়ন্ত্রণে ও তাদেরকেই প্রদানের জন্য রাখা হয়েছে। নীতিনির্ধারণী সকল জায়গায় অন্য স্টেকহোল্ডারদের কোনপ্রকার অংশগ্রহণ না থাকা এবং একপেশে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা বাকি সব জনবলকে কোনঠাসা করে রাখা হয়েছে। অথচ স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনার সুষ্ঠু বণ্টনে সকলের অংশগ্রহণ গুরুত্বপূর্ণ এবং নায্য বিষয়। মেডিকেল টেকনোলজি শিক্ষায় ডিপ্লোমার পাশাপাশি বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে মেডিকেল টেকনোলজি বিষয় সমূহে উচ্চ শিক্ষা চালুর বিশ বছর পেরিয়ে গেলেও গ্র্যাজুয়েটদের জন্য কোন প্রকার পদসৃজন করা হয়নি। ২০১৪ সালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে গঠিত একটি উচ্চ পর্যায়ের (হাই— ভোল্টেজ) কমিটি মেডিকেল টেকনোলজি শিক্ষায় সনদপ্রাপ্ত গ্র্যাজুয়েট মেডিকেল টেকনোলজিস্টেদের জন্য একাডেমিক, ক্লিনিক্যাল ও এডমিনিস্ট্রেটিভ শাখায় উপজেলা থেকে বিভাগীয় হাসপাতাল, ইন্সটিটিউটে ও প্রশাসনিক দপ্তরগুলোতে পদ সৃজন সংক্রান্ত অর্গানোগ্রাম প্রস্তুত ও চূড়ান্ত সুপারিশ করলেও নানাবিধ বল প্রয়োগের মাধ্যমে তা আটকে আছে বছরের পর বছর। সরকারি চাকরিতে মেডিকেল টেকনোলজিস্টদের ও ফার্মাসিস্টদের দশম গ্রেডে উন্নীতকরণের বিষয়টি নতুন কোন বিষয় নয়। স্বাধীনতা পূর্ববর্তী সময়েই এ পেশার পথচলা শুরু হলেও ১৯৮৯ সাল পরবর্তী মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্ট পেশাজীবিদের দশম গ্রেড বা দ্বিতীয় শ্রেণীর পদমর্যাদা দাবীটি অব্যাহতভাবে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোতে বারংবার উপস্থাপিত হয়ে আসছে। অধিকার বাস্তবায়নে নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে আন্দোলন, সংগ্রাম, সহায়ক কর্মসূচি পালন, দাপ্তরিক চিঠি চালাচালি, আবেদন, সর্বোপরি জনপ্রশাসন বিধি শাখার সমস্ত চাহিদা পূরণ করা হয়েছে তা সত্ত্বেও সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতনদের সদিচ্ছার অভাব, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা ও নানাবিধ উদ্দেশ্যে মন্ত্রণালয় অবিরতভাবে কোয়ারি দেয়ার মাধ্যমে সময়ক্ষেপণ ও জটিলতাই তৈরি করেছে। মেডিকেল টেকনোলজি শিক্ষার বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো এটি অত্যন্ত প্রযুক্তিগত এবং বিষয়ভিত্তিক জ্ঞান এবং দক্ষতার ওপর নির্ভরশীল। বিষয়ভিত্তিক দক্ষ টেকনোলজিস্ট শিক্ষকদের অভাবে শিক্ষার্থীরা সঠিকভাবে শিক্ষা পাচ্ছে না এবং প্রয়োজনীয় ব্যবহারিক দক্ষতা অর্জনে ব্যর্থ হচ্ছে। ফলে, তাদের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা এবং কর্মক্ষেত্রের বাস্তব অভিজ্ঞতার মধ্যে বড় একটি ফাঁক থেকে যাচ্ছে। এই ফাঁক পূরণের জন্য বিষয়ভিত্তিক শিক্ষক নিয়োগ অপরিহার্য। 

 

উপরে