প্রাক্তন স্ত্রীর সাংবাদিক সম্মেলনের পাল্টা সাংবাদিক সম্মেলন মাহবুব সাইদীর
প্রাক্তন স্ত্রী মোছাঃ রিমুর সািংবাদিক সম্মেলনের বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার দুপুরে বগুড়া প্রেসক্লাবে পাল্টা সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন মাহবুব সাঈদী। তিনি লিখিত বক্তব্যে বলেন, “আমার প্রাক্তন স্ত্রীর আনিত অভিযোগ প্রত্যেকটির জবাব দেওয়ার জন্য পরিস্কার তথ্য প্রমান সহ বলতে চাই তিনি আমার দ্বিতীয় স্ত্রী। একটি বিশেষ পরিস্থিতিতে আমি তাকে বিয়ে করি। মূলত সোশ্যাল মিডিয়া ফেসবুক সুত্রে পরিচিত হয়ে তার সাথে আমার ঘনিষ্ঠতা হয়। তার পিতা মাতা ও দুই মেয়ে সহ ৪ জনের অভাবি সংসারের বিবরণ শুনে আমি রিমুকে আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান [এ্যাপোলো পাওয়ার লিংক] এ ১২ হাজার টাকা বেতনে চাকুরি দেই। এই চাকুরির সুবাদে পূর্বের পরিচয় আরও ঘনিষ্ঠ হয় এবং এক পর্যায়ে আমরা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হই। এখানে না বললেই নয় যে আমি বিবাহিত দুই সন্তানের জনক সেটা জেনেই আমার দ্বিতীয় স্ত্রী রিমু ১০ লক্ষ টাকা মোহরানায় আমার সাথে বিবাহে সম্মত হয়। বিবাহের পর পরই আমার দ্বিতীয় স্ত্রী রিমুর হাবভাবে পরিবর্তন লক্ষ্য করি। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য উভয় পক্ষের সম্মতির ভিত্তিতে তাঁর ও তার মায়ের ইচ্ছাতে তাদের মনোনিত কাজী অফিসে খোলা তালাকের মাধ্যমে আত্মীয় স্বজনের উপস্থিতিতে মোহরানার প্রাপ্য নগদে পরিশোধ করা হয়। সুষ্ঠুভাবে তালাক সম্পন্ন হওয়ায় হয়তো সে এবং তার মা কিছু দুষ্টু প্রকৃতির মানুষের প্ররোচনায় পড়ে আমার কাছ থেকে আরও অর্থ হাতানোর জন্য আমার ওপর প্রচন্ড চাপ প্রয়োগ ও মানসিকভাবে হেনস্থা করতে থাকে। কিন্তু আমি আমার সিদ্ধান্তে অনড় থাকায় সে ওই দুষ্টুলোকদের প্ররোচনায় গত ১৮ মে ২০২২ ইং তারিখে বগুড়ায় সদর চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট কোর্টে [মামলা নং— ৮৩১/সি—২০২২ মামলা করে। যেখানে আমার বিরুদ্ধে তার প্রাপ্য ১০ লক্ষ টাকা পরিশোধ না করায় অভিযোগ আনা হয়। অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিজ্ঞ বিচারক অভিযোগ তদন্তের জন্য সি.আই.ডি কে দায়িত্বদেন। সি.আই.ডি কর্তৃপক্ষ মামলাটি তদত্তের জন্য ইন্সপেক্টর সাইফুল ইসলামকে তদন্তভার দেন। উক্ত ইন্সপেক্টর মামলাটির তদন্ত রিপোর্ট কোটে দাখিল করলে রিপোর্টটি রিমুর বিরুদ্ধে যায়। ফলৈ রিমুর আইনজীবীর মাধ্যমে এই দাখিলকৃত রিপোর্টের বিরুদ্ধে আদালতে নারাজি পিটিশন দাখিল করে। ফলে আদালত অভিযোগটি পুনরায় তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন [পি.বি.আই] এর কাছে পাঠিয়ে দেন। যতারীতি পিবিআই কর্তৃপক্ষ তাদের একজন কর্মকর্তা এস.আই জাকারিয়া সাহেবকে তদন্তভার অর্পন করে। তিনিও যথাসময়ে তদন্তকাজ শেষ করে আদালতে তদন্তরিপোর্টটি দাখিল করেন। এই রিপোর্টে আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি। বিষয়টি এখন বিজ্ঞবিচারকের আদেশের অপেক্ষায় আছে। তিনি যে আদেশ দিবেন আমি তা মেনে নেব বলে ঘোষণা করছি। মোছাঃ রিমু আমার বিরুদ্ধে মোহরানা দেওয়ার অভিযোগ প্রমাণে ব্যর্থ হওয়ায় তার কাছ থেকে কথিত “এ্যাপোলো ইঞ্জিনিয়ারিং এ্যন্ড কন্সট্রাকশন” নামক ঠিকাদারি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চালানোর নামে ৫০ লক্ষ টাকা আত্মসাথের অভিযোগে চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে [বগুড়া সদর] নতুন মামলা [৫৩৫/সি—২০২২] দায়ের করে। এই মামলাটির তদন্তভার পুনরায় পি.বি.আই কর্মকর্তা এস.আই. জাকারিয়া সাহেবের হাতেই যায়। তিনি এই মামলটিও তদন্ত করে কোর্টে দাখিল করেছেন। অভিযোগটির সত্যতা না থাকায় এই রিপোর্টও রিমুর মনঃপুত হয়নি। ফলে এ ব্যাপারেও তিনি আদালতে নারাজি পিটিশন দিয়েছেন। এই দুটি মামলা ছাড়াও সে বগুড়ার পারিবারিক আদালতে ৪৫৮/সি—২০২২ মামলা করেছে। মামলাটি চলমান রয়েছে। এই মামলা প্রসঙ্গে ও আমার বক্তব্য যে রায় হবে আমি তা মেনে নেব। আমার বিরুদ্ধে কোর্টে সুবিধা করতে না পেরে এখন সে সংবাদ সম্মেলনে মানহানিকর বক্তব্য প্রচার করে আমাকে কাবু করার চেষ্টা চালাচ্ছে। ৫০ লক্ষ টাকা যে কোম্পানির নামে দেওয়ার কথা বললেও ওই নামে আসলে কোন কোম্পানির অস্তিত্বই নেই। তাই ৫০ লক্ষ টাকা লেনদনের কোন সুযোগও নেই। যে ব্যবসা করার জন্য ৫০ লক্ষ টাকা দিতে পারে তার সকল ব্যাংক একাউন্ট চেক করা উচিত নয় কি? যে ব্যবসা করার জন্য ৫০ লক্ষ টাকা দিতে পারে সে বিগত ১০ বছর যাবত ৩ হাজার থেকে ৪ হাজার টাকার ভাড়া বাসায় থাকে এটা কি প্রশ্নবিদ্ধ নয়? তার কাছে আমার প্রশ্ন যদি তার মা তার পরিবারের ৫০ লক্ষ টাকা ইনভেষ্ট করার মত আর্থিক সামর্থ থাকতো তাহলে কি সে আমার কোম্পানীতে মাত্র ১২ হাজার টাকা বেতনে চাকরী করতো, অথবা ১০ লক্ষ টাকা কাবিনে বিয়ে করতে রাজি হতো? আমি বাধ্য হইয়ে তার চাকুরীকালীন সময়ে আমার অফিসের ১,৯৮,৯৫২ টাকার একটি তহবিল তছরুপের অভিযোগ গত ২২ সেপ্টেম্বর ২০২২ ইং তারিখে বগুড়া সদর কোর্টে মামলা করেছি [মামলা নং— ১৭৩৯/সি—২০২২] মামলাটির তদন্ত শেষে বগুড়া সদর থানার এস.আই জুলহাস চার্জশিট ও দাখিল করেছেন সেইটির বিচারকাজ চলছে। আদালতেই প্রমাণ হবে রিমু আসলেই অপরাধী/আত্মসাতকারী কি না? প্রকৃত অর্থেই সে এবং তার মা একজন ব্লাকমেইলর বিধায় আদালতে/পুলিশি তদন্তে পেরে উঠতে না পেরে সাংবাদিক সম্মেলন করে সে থেমে থাকেনি। গত বুধবার তার পাঠানো কয়েকজন মুখোসধারী সন্ত্রাসী এসে আমার অফিসে হুমকি দিয়ে বলেগেছে তার সাথে যেন আমি আপোষে যাই আর আপোষ অর্থই হলো তার কথা মতো দেনমহরে বাহিরে আরও কিছু নতুন করে অর্থ প্রদান করি। যেটা আমার পক্ষে মেনে নেওয়া অসম্ভব।” - খবর বিজ্ঞপ্তির