প্রকাশিত : ১ নভেম্বর, ২০২৪ ১৭:৫৫

নলডাঙ্গায় গ্রামবাসীদের উদ্যোগে ২ কিলোমিটার রাস্তার সংস্কার কাজ

মনিরুল ইসলাম ডাবলু, নাটোরঃ
নলডাঙ্গায় গ্রামবাসীদের উদ্যোগে ২ কিলোমিটার রাস্তার সংস্কার কাজ
কতৃপক্ষকে জানিয়েও কোন কাজ না হওয়ায় নিজেদের উদ্যোগেই ২ কিলোমিটার রাস্তার সংস্কার করলেন নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলার ৫ নং বিপ্রবেল ঘড়িয়া ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর দীঘা গ্রামবাসী। বিপ্রবেল ঘড়িয়া ইউনিয়নের কৃষ্ণপুরদীঘা ইক্ষু সেন্টার হতে মোমিনপুর গ্রাম পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা রয়েছে। উর্ধোতন কতৃপক্ষের কাছে এ রাস্তাটি পাকা করনের জন্য আবেদন নিবেদন করেও কোন কাজ হয়নি। এই কাঁচা রাস্তা দিয়ে মোমিনপুর হাট,স্থানীয় স্কুল -মাদ্রাসা, কবরস্থানসহ বিভিন্ন জায়গায় যাতায়ত করে চার-পাঁচ গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ। এছাড়াও মাঠ থেকে এ সড়ক দিয়ে ফসল ঘরে তোলেন কৃষকেরা। সামান্য বৃষ্টি হলেই এ রাস্তাটি চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ে। ফলে যানবাহন চলাচল তো দূরের কথা, হেঁটে চলাফেরা করাই দূস্কর হয়ে যায়। অসুস্থ রোগীদের দ্রুত চিকিৎসার জন্য হাসপাতাল বা ক্লিনিকে নেওয়াও কষ্টকর হয়ে যায়। সম্পরতি কৃষ্ণপুরদীঘা গ্রামের রুমা নামের এক গৃহবধূ তাকে কাঁদাযুক্ত রাস্তা দিয়ে হাসপাতালে নেওয়ার সময় মারা যান তিনি। এ ঘটনায় এলাকার মানুষের মধ্যে হতাশা বিরাজ করতে থাকে। পরে স্থানীয়ভাবে এ রাস্তাটি সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়। কৃষ্ণপুরদীঘা গ্রামের সাবেক পুলিশ সদস্য আব্দুল মান্নান জানান, কৃষ্ণপুরদীঘাসহ আশপাশের ৫/৬টি গ্রামের মানুষের জন্য এ রাস্তাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু পরিতাপের বিষয় হচ্ছে আশপাশের অনেক রাস্তা পাকা করা হলেও কতৃপক্ষ  এ জনগুরুত্বপূর্ণ  রাস্তাটি পাকা করেনি। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও গ্রামের মানুষ এ রাস্তাটি পাকা করনের জন্য দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছিল। কিন্তু কতৃপক্ষ এ ব্যাপারে নজর দেননি। 
এ কারণে এলাকার কৃষ্ণপুরদীঘা, আসামপাড়া,মধ্যপাড়া, কবিরাজপাড়া,মোমিনপুরসহ কয়েকটি গ্রামের মানুষের ভোগান্তি বেড়েই চলছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই রাস্তাটি কাঁদা হয়ে মাঝে মধ্যে গর্তের সৃষ্টি হয়ে পানি জমে থাকায় রাস্তাটি চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ে। তাই নিজেদের ভোগান্তি কমাতে গ্রামবাসীরা রাস্তাটি সংস্কারের উদ্যোগ নেয়। এজন্য প্রতি বাড়ি থেকে নগদ অর্থ ও চাল সংগ্রহ শুরু করে। গ্রামবাসীরা যে যার মতো অর্থ সহায়তা দিয়েছেন। এতে প্রায় ২০ হাজার টাকার মতো সংগ্রহ হয়। এ টাকা দিয়ে ইটভাটা থেকে ২২ ট্রলি রাবিশ বা সুরকি সংগ্রহ করে রাস্তার বিভিন্ন অতি গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় বিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। যাতে সড়কটি চলাচলের উপযোগী হয়েছে। 
বিপ্রবেল ঘড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের ৩ নং ওয়ার্ড সদস্য মোঃ মারুফ হোসেন বলেন, স্থানীয়দের এ উদ্যোগের সঙ্গে তিনিও একাত্বতা প্রকাশ করেছেন। এজন্য তিনি স্বাধ্যমতো অর্থ সহায়তা দিয়েছেন। এ কাজে সবারই সহযোগিতা পাওয়া গেছে। যে কাজটি সরকারিভাবে করার কথা সে কাজটি নিজেদের প্রয়োজনে, নিজেদের সম্মিলিত অর্থ এবং শ্রম দিয়ে বাস্তবায়ন করেছে গ্রামবাসীরা। তবে ভবিষ্যতে এই জনগুরুত্বপূর্ণ রাস্তাটি পাকা করার দাবি জানিয়েছেন অত্র এলাকার জনসাধারণ।
উপরে