প্রকাশিত : ৯ নভেম্বর, ২০২৪ ২৩:৪১
বিরামপুরে ২ ভাই-বোনের পরিবারে ১২ জন প্রতিবন্ধী। মানবেতর জীবন যাপন
জাহিনুর ইসলাম, বিরামপুর, দিনাজপুরঃ
বিরামপুর শহর থেকে প্রায় ২২ কিলোমিটার পশ্চিমে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া গ্রামের নাম বগড়া। এই গ্রামের সনাতন (হিন্দু) ধর্মীয় ভাই অনিল চন্দ্র সরকার ও বোন সুনতী বালার পরিবারে ১২ জন বাক প্রতিবন্ধী । প্রতিবন্ধী ভাতায় একমাত্র ভরসা; খাবার জোটে না ঠিকমত। এদের মধ্যে প্রদীপ(১৮) শারীরিক ও বাকপ্রতিবন্ধী, একটি হুইল চেয়ারের অভাবে পারছেনা চলাফেরা করতে।
উপজেলা সমাজ সেবা অফিসার আব্দুল আউয়াল বলেন, ১২ জনের মধ্যে ১০ জনই ভাতাভোগী, বাকী ২ জনকেও ভাতার আওতায় নেয়া হবে। শারীরিক প্রতিবন্ধী প্রদীপকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে হুইল চেয়ার দেয়া হবে।
বিরামপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার নুজহাত তাসনীম আওন বলেন, বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে অসহায় পরিবার দুটির জন্য সহযোগিতার আন্তরিক প্রচেষ্ঠা থাকবে। তিনি অসহায় পরিবারের পক্ষে কথা বলতে পারে এমন একজনকে যোগাযোগ করতে অনুরোধ করেন।
স্থানীয় বিনাইল ইউপি চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবীর বাদশা বলেন, তার এলাকায় ২ পরিবারে ১২ জন প্রতিবন্ধী আছে আজকেই জানলেন। গনমাধ্যমের দ্বায়িত্বশীল ভুমিকা রাখায় তিনি ধন্যবাদ জানান। তিনি ব্যক্তিগত ভাবে ও ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে অসহায় পরিবার দুটিকে সহযোগিতা করবেন বলে জনান।
ভাই অনিল চন্দ্র সরকার নিজে, ২ মেয়ে ১ ছেলে ও তাদের ৪ সন্তান সহ ৮ জন বাক প্রতিবন্ধী । তারা হলেন-অনিল চন্দ্র সরকার(৬০),মেয়ে সোহাগী রায় (৩২) ও তপতী (২২), ছেলে অনিল (৩৫), বাক প্রতিবন্ধী সোহাগী রায়ের স্বামী ফটেন রায় সংসার ফেলে পালিয়ে গেছে ১ যুগেরও বেশী। তাদের পুত্র সন্দীপ রায় (১৮) ও কন্যা ইতি রায় (১২) দুজনই বাক প্রতিবন্ধী। বাক প্রতিবন্ধী অনিলের ২ ছেলে আপন (৮) ও পরন (৫) তারাও বাক প্রতিবন্ধী ।
অনিল চন্দ্র সরকারের বোন সুনতী বালা (৭০), তার ছেলে নেপাল সরকার (৪৫), নেপালের ২ ছেলে প্রদীপ (১৮), চন্দন (১৬) বাক প্রতিবন্ধী। আবার এদের মধ্যে প্রদীপ বাক প্রতিবন্ধী ও শারীরিক প্রতিবন্ধী।
এলাকাটিতে নিম্ন ও মধ্যবৃত্ত পরিবারের বসবাস। তাই এলাকাবাসী কষ্ট নিয়েই বলেন, এই অসহায় ২ টি পরিবারকে তারা যেটুকু করেন, তাদের প্রয়োজনের তুলনায় সেটা নগন্য। তারা সরকারী দপ্তর ও সমাজের বিত্তবানদের এই অসহায় পরিবার দুটির সহযোগিতায় এগিয়ে আসার আহবান জানান।
বাকপ্রতিবন্ধী নেপালের স্ত্রী মল্লিকা বলেন, ২ পরিবারে মাত্র ৪জন কর্মক্ষম, তাও সব সময় কাজ জোটে না। সরকারী ভাতা কিছুটা উপকার হয়েছে, তবে খেয়ে-না খেয়ে দিন পার হচ্ছে। সমাজের লোক আমাদের আর কতই দেখবে তারাও তো খেটে খাওয়া মানুষ। তিনি সরকারের অন্যান্য দপ্তর ও মানবতার কাজে নিয়োজিতদের সহযোগিতা কামনা করেছেন।