রাজশাহীতে ডেঙ্গুর ভরা মৌসুমেও মশক নিধনে ধীর গতি
রাজশাহীতে এখন চলছে ডেঙ্গুর ভরা মৌসুম। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে প্রতিদিনই বাড়ছে ডেঙ্গু রোগির সংখ্যা। এমন পরিস্থিতিতে রাজশাহী সিটি করপোরেশন এলাকায় একেবারেই চোখে পড়ে না মশক নিধন কার্যক্রম। সিটি করপোরেশনের তথ্যমতে, প্রতি বছর ৫৪ লাখ ৮০ হাজার টাকার লার্ভিসাইড ও ১৮ লাখ ৪৮ হাজার টাকার অ্যাডাল্টি সাইড কিনতে হয় রাসিককে। এসব প্রয়োগ ও কেরোসিন ডিজেল মিলে গড়ে প্রতিবছর মশা মারতেই রাসিকের খরচ হয় এক কোটি টাকা। কিন্তু বর্তমান সময়ে খুব সীমিত ওষুধ আছে সিটি করপোরেশনের হাতে। বর্তমানে মজুত আছে ১০০ লিটার লার্ভিসাইড ও ২০০ লিটার অ্যাডাল্টি সাইড। তা নিয়েই আপাতত মশক নিধনের যুদ্ধ চালিয়ে যেতে হবে। তবে ওষুধ কেনার জন্য যে বরাদ্দ সিটি করপোরেশন থেকে চাওয়া হয়েছে তা পাওয়া গেছে। দ্রুত সময়ের মধ্যেই মশক নিধনের ওষুধগুলো কেনা হবে বলে জানিয়েছে রাসিক কর্তৃপক্ষ।
রাজশাহী বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের তথ্যমতে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত ২ হাজার ৮৯৪ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন। এদের মধ্যে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২৪০ জন। শুধুমাত্র রামেক হাসপাতালেই ভর্তি আছেন ৭০ জন। এবছর ডেঙ্গু আক্রান্ত পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। তার মধ্যে দু'জনই রামেক হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন।
রাজশাহী বিভাগীয় স্বাস্থ্য উপ-পরিচালক ডা. মো. হাবিবুর রহমান বলেন, গত বছরের চেয়ে এবার মশার উপস্থিতি বেশি পাওয়া গেছে। স্থানীয়ভাবে পরীক্ষার মাধ্যমে ডেঙ্গুর লার্ভাও পাওয়া গেছে। এবছর অন্য বছরের চেয়ে রোগীর সংখ্যা বেশি।
নগরীর নওদাপাড়া ছায়ানীড় এলাকার বাসিন্দা আমজাদ হোসেন বলেন, দিনরাত মশা। চারিদিকে যেখানে ডেঙ্গু ছড়াচ্ছে তাতে বেশ আতঙ্ক লাগে। মশক নিধন কার্যক্রমটা দ্রুত সময়ের মধ্যেই বাড়ানো প্রয়োজন।
নগরীর উপশহর এলাকার তুহিন জানান, কয়েল জ্বালিয়েও মশা দুর করা যাচ্ছে না। এ সময়টা দুর্যোগের সময়। সিটি করপোরেশনকে এগিয়ে আসা দরকার।
এ বিষয়ে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা শেখ মো. মামুন বলেন, আমাদের চাহিদা মতো ওষুধ নাই। মাত্র সাতদিন আমরা অ্যাডাল্টি সাইড প্রয়োগ করতে পারবো। এজন্য এবার আমরা ওষুধ প্রয়োগ করতে পারিনি। সামনে ব্রিডিং মৌসুমে এটি প্রয়োগ করা হবে। লার্ভিসাইড আমরা প্রয়োগ করছি। এটিও ডিসেম্বর পর্যন্ত চালাতে পারবো। এরপর আমাদের ওষুধ নেই।
এ বিষয়ে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনার দেওয়ান মো. হুমায়ুন কবির বলেন, আমাদের ডিসেম্বর পর্যন্ত ওষুধ আছে। আমরা সরকারের কাছে আবেদন করছি। এসব ওষুধ কিনতে এক কোটি ৪৩ লাখ টাকা পেয়েছি। এখন আমরা দরপত্র দেবো এবং দ্রুতই ওষুধ কিনে নেবো।