প্রকাশিত : ১৪ নভেম্বর, ২০২৪ ০৯:৪৫
হাতীবান্ধায় ফার্মাসিস্ট দিয়েই চলছে দইখাওয়া উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের স্বাস্থ্য সেবা
মোস্তাফিজুর রহমান, লালমনিরহাটঃ
লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার দইখাওয়া উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে উপসহকারী কমিউনিটি চিকিৎসা কর্মকর্তা পদ থাকলেও শুধু মাত্র একজন ফার্মাসিস্ট দিয়েই চলছে উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রটি। হেদায়েত হোসেন নামে একজন ফার্মাসিস্ট প্রায় ১ মাস ধরে ওই উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে প্রেসক্রিপশন থেকে শুরু করে রোগীকে ঔষধ বুঝিয়ে দেয়ার দায়িত্ব একাই পালন করছেন। ডাক্তারের অবহেলার কারণে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগী দিনদিন কমে গেলেও দইখাওয়া উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। প্রসূতি সেবা নিতে আসা রোগীরা সেবা পেলেও ডাক্তারের অভাবে চিকিৎসা সেবা না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন রোগীরা। এর পরেও প্রতিদিন ৪০-৫০ জন সাধারণ রোগীকে সামাল দিতে হয় হেদায়েত হোসেন নামের ওই ফামাসিস্টকে।
আইন অনুসারে চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী ফার্মাসিস্ট রোগীকে ঔষধ সরবরাহ করবেন।
রোগীকে ঔষধ খাওয়ার নিয়ম বলে দেবেন। স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বরাদ্দকৃত ঔষধ তাঁর হেফাজতে সংরক্ষিত থাকবে। রোগী দেখা বা রোগীর ব্যবস্থাপত্র লেখা তাঁর এখতিয়ারবহির্ভূত।
কিন্তু দইখাওয়া উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে ফার্মাসিস্ট হেদায়েত হোসেন নিজেই প্রেসক্রিপশন করেন এবং রোগীকে সেবা দেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অফিস সূত্রে জানা যায়, দইখাওয়া উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের উপসহকারী কমিউনিটি চিকিৎসা কর্মকর্তা রাকিব হাসান গেল মাস থেকে বদলি নিয়ে নিজ জেলায় যোগ দেন। ফলে গত ১ মাস ধরে ফার্মাসিস্ট হেদায়েত হোসেনকে একাই সব দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে।
সরেজমিনে সোমবার দুপুরে ওই উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, ফার্মাসিষ্ট হেদায়েত হোসেন নিজেই একজনের পর একজন রোগী দেখছেন। দিচ্ছেন ব্যবস্থাপত্র এমন কি রোগীর প্রেশার মেপে রোগীকে প্রেশার নিয়ন্ত্রণের ওষুধ সেবন করারও পরামর্শ দিচ্ছেন তিনি।
তবে হেদায়েত হোসেন নামের ওই ফার্মাসিস্ট দাবি করে বলেন, আমি এনাটমি ফিজিওলজি পড়ে এখানে এসেছি। এর আগেও কয়েকটি বড়বড় মেডিকেলে ডিউটি করেছি সেখানেতো কোন সমস্যা হয়নি আর এটাতো গ্রাম। কতৃপক্ষ এই উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ভিতরে এবং বাইরে(পারসোনাল চেম্বার) প্রেসক্রিপশন করার মৌখিক অনুমতি দিয়েছেন।
আপনি প্রেশার মেপে রোগীকে তা নিয়ন্ত্রণের ঔষধ প্রেসক্রিপশন করে সেবনের পরামর্শ দিলেন এটা কতটুকু যৌক্তিক হলো সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের উত্তরে ওই ফার্মাসিস্ট দাবি করে বলেন, পল্লী চিকিৎসকরা তিন মাস ছয় মাস কোর্স করে যদি প্রেসক্রিপশন করতে পারেন তাহলে আমরা পারবো না কেন।
তবে তিনি বলেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা যদি চান তাহলে আমি আর প্রেসক্রিপশন করবো না।
এ বিষয়ে গোতামারী ইউপি চেয়ারম্যান মোনাব্বেরুল হক মোনা বলেন,জনবলের সংকটে উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রটি ধুঁকছে। শুধু ফার্মাসিস্ট ছাড়া কোনো কর্মকর্তা নেই। তিনি প্রেসক্রিপশন করেন এ বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে এ ইউনিয়নের চল্লিশ হাজার মানুষসহ আশেপাশের প্রায় এক লক্ষ মানুষ এ উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের উপর নির্ভরশীল। দ্রুত সময়ের মধ্যে উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রটিতে একজন ডাক্তার দেয়ার দাবী করছি।
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃপঃ কর্মকর্তা মাসুদ পারভেজ বলেন, ওই উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে সাময়িক সমস্যা চলছে। শীঘ্রই সেখানে একজন কমিউনিটি চিকিৎসা কর্মকর্তা দেওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ফার্মাসিস্টকে আপাতত দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তবে তিনি উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের বাইরে পার্সোনাল কোনো চেম্বারে প্রেসক্রিপশন করতে পারবেন না।