আদমদীঘির রক্তদহ বিলে বিলুপ্তির পথে দেশীয় মাছ
বগুড়ার আদমদীঘির রক্তদহ বিলে বিলুপ্তির পথে দেশীয় মাছ। প্রায় ৯ শত একর এলাকা জুরে বিস্তৃত আদমদীঘির ঐতিহাসিক রক্তদহ বিলে এক সময় পানি পরিপুর্ণ হয়ে প্রচুর দেশীয় মাছ পাওয়া যেত। এই বিল থেকে মাছ আহরনকারী জেলেরা মাছ ধরে এলাকার চাহিদা পূরন করে পার্শ্ববর্তী নওগাঁ,নাটোর,জয়পুরহাট,রাজশাহী এলাকায় মাছের চাহিদা পূরন হতো। ঐতিহাসিক এই রক্তদহ বিলে এক সময় পুুুুটি, টেংরা, কৈ, ভেদা, শোল, কাকিলা, ইছামাছ, পাতাশি, বাইলা, চোপড়া, বোয়াল, মলা, ঢেলা,বাতাসি, পবা, চিংড়ি, গুচি, কানছ, মাগুর সহ বিভিন্ন প্রকার দেশীয় মাছ পাওয়া যেত। সাধারনত বর্ষা কাল শেষে আশ্বিন,কার্তিক অগ্রহায়ন মাসে প্রচুর পরিমানে দেশীয় মাছ ধরা পড়ে। এখন আর জেলেরা দেশীয় মাছ বিলে পাচ্ছে না। বিলে মাছ আহরনকারী জেলেরা জানান,এলাকার বিছু অসাধু লোকজন বিলে চায়না ডুয়ারী জাল,কারেন্ট জাল ফেলে দেশীয় মাছ আহরন করায় বিলে দেশীয় মাছের সংকট সৃষ্টি হয়েছে। তাছাড়া দীর্ঘদিন রক্তদহ বিল খনন না করায় তলদেশ উচুঁ হয়ে বিলের অর্ধেক এলাকা বর্তমানে ধান চাষে পরিনত হয়েছে। এসব নানা কারনে আগের মতো ঐতিহ্যবাহী বিলে দেশীয় মাছ না হওয়ায় চরম সংকট সহ বিল পাড়ের অনেক জেলেরা বেকার হয়ে পড়েছে। বিল পাড়ের বাসিন্দারা বলেন, ঐতিহ্যবাহী বিলটিতে কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তির বিভিন্ন স্থানে পুকুর খনন করে দখল করে নিয়েছে। এতে করে বিলটি অনেক ছোট হয়ে গেছে। এছাড়াও কয়েক বছর ধরে বন্যা না হওয়ায় দেশীয় মাছের সংকট দেখা দিয়েছে। বিলটি জরুরী ভিত্তিতে খনন করা প্রয়োজন। বর্তমানে বিলটিতে দেশীয় মাছ আর দেখা যাচ্ছেনা। নিষিদ্ধ মাছ ধরার চায়না ডুয়ারী জাল, কারেন্ট জাল বিষয়ে জেলেরা সচেতন না হলে দেশীয় মাছ বিলপ্তি হয়ে পড়বে। এদিকে ঐতিহ্যবাহী রক্তদহ বিলে দেশীয় মাছের সংকট দেখা দেওয়াতে উপজেলা বিভিন্ন বাজার গুলোতে দেশীয় মাছে অপ্রতুল হয়ে পড়েছে। বিভিন্ন হাট-বাজারে দেশীয় মাছ আমদানী কমে যাওয়ায় ক্রেতাদের মধ্যে হতাশা সৃষ্টি হয়েছে। হাট-বাজার গুলোতে যদি বিলপ্তি প্রায় দেশীয় মাছ আমদানী হয় তাহলে ক্রেতাদের ভিড় পড়ে যায়। আর এ সুযোগে বিক্রেতারাও চড়া দাম চেয়ে বসে। বর্তমানে হাট-বাজার গুলোতে টেংরা মাছ ৭শ টাকা,পুটি মাছ ৩শ টাকা,মলা মাছ ৬শ টাকা,চোপড়া ৪শ টাকা,গুচি মাছ ১ হাজার টাকা,বোয়াল মাছ ৮শ টাকা,শোল মাছ ১ হাজার টাকা,মাগুর মাছ ১২শ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। বিলটিতে যদি আগের মত দেশীয় মাছ পাওয়া যেত তাহলে হয়তো কিছুটা হলেও ক্রেতারা কম দামে মাছ কিনতে পারতো।