প্রকাশিত : ১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ০১:১৪

শহীদ সাজ্জাদের রক্তের বিনিময়ে নতুন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখছি – বেবী নাজনীন

নীলফামারী জেলা সংবাদদাতাঃ
শহীদ সাজ্জাদের রক্তের বিনিময়ে নতুন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখছি – বেবী নাজনীন

“বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শহীদ সাজ্জাদের রক্তের বিনিময়ে আমি দেশে ফিরে আসার সুযোগ পেয়েছি। আমি এখন নতুন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখছি। মুক্ত বাতাসে স্বস্তির নিঃশ্বাস নিচ্ছি।"—এমনই আবেগঘন বক্তব্য দিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ও প্রখ্যাত সংগীতশিল্পী বেবী নাজনীন।

শনিবার (২৯ নভেম্বর) নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার বাঙ্গালীপুর ইউনিয়নের বাড়াইশালপাড়া গ্রামের শহীদ সাজ্জাদের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় তিনি আরও বলেন, “ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকার আমাদের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছিলো। দিনের ভোট রাতে করেছে। দেশের অর্থনীতির মেরুদণ্ড ভেঙে দিয়েছে। শহীদ সাজ্জাদের রক্তের ঋণ শোধ করতে বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার জন্য আমরা বদ্ধপরিকর।”

সাজ্জাদের পরিবারের অবস্থা করুণ

শহীদ সাজ্জাদের বাবা মাওলানা মো. আলমগীর হোসেন অভিযোগ করেন, সরকারের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো ধরনের সহযোগিতা বা সমবেদনা প্রকাশ করা হয়নি। সাজ্জাদ ছিলেন তাদের পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। তিনি বলেন, “এ বছরই সাজ্জাদের পড়াশোনা শেষ হতো। সে পরিবারের হাল ধরতো। কিন্তু এখন আমরা নিঃস্ব। স্থানীয় ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা আমাদের জমিজমা কেড়ে নিয়েছে। এখন ভাড়া বাসায় কোনো রকমে দিন কাটাচ্ছি। আমরা সরকারের প্রতি সাজ্জাদের হত্যাকারীদের বিচার এবং তাদের সহযোগীদের শাস্তির দাবি জানাই।”

বেবী নাজনীনের সফরসঙ্গী ও কর্মসূচি

বেবী নাজনীন শহীদ সাজ্জাদের পরিবারের হাতে আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন। সফরসঙ্গী হিসেবে তার সঙ্গে ছিলেন সৈয়দপুর উপজেলা বিএনপির শীর্ষ নেতৃবৃন্দ, যাদের মধ্যে ছিলেন সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট ওবায়দুর রহমান, জেলা যুবদলের আহ্বায়ক তারিক আজিজ, এবং অধ্যক্ষ রেজাউল করিম রেজা প্রমুখ।

পরে বেবী নাজনীন শহরের নিয়ামতপুর সরকারপাড়ায় নিজের পৈত্রিক বাড়িতে গিয়ে দাদা-দাদীর কবর জিয়ারত করেন। দুপুরে তিনি সৈয়দপুর শহরের দলীয় কার্যালয়ে আয়োজিত কোরআনখানি ও দোয়া মাহফিলে অংশগ্রহণ করেন।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য

বিমানযোগে সৈয়দপুরে পৌঁছানোর পর বিমানবন্দর চত্বরে স্থানীয় বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান। এ সময় এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, “উত্তরাঞ্চলের মানুষের জন্য কাজ করতে চাই। নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে এ অঞ্চলের আর্থিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে চাই।”

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, “এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে দলের হাই কমান্ড। তবে আমি শহীদ জিয়ার আদর্শ বাস্তবায়নে এবং দেশের উন্নয়নে কাজ করতে অঙ্গীকারবদ্ধ।”

বিএনপির এই নেত্রী আরও বলেন, বৈষম্যহীন, গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ে তোলা শহীদ সাজ্জাদের মতো তরুণদের প্রতি আমাদের দায়বদ্ধতা। তার রক্তের যথার্থ মূল্যায়ন করতেই আমাদের নতুন বাংলাদেশ গড়ার পথ সুগম করতে হবে।

দোয়া মাহফিল ও উপস্থিত নেতৃবৃন্দ

দোয়া মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন সৈয়দপুর জেলা বিএনপির সভাপতি অধ্যক্ষ আবদুল গফুর সরকার, সহ-সভাপতি জিয়াউল হক জিয়া, সাধারণ সম্পাদক শেখ বাবলু, কৃষকদলের সাদেকুজ্জামান দিনার, যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক রেজওয়ান আক্তার পাপ্পু, ছাত্রদল সভাপতি হোসাইন মোহাম্মদ আরমানসহ অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা।

বেবী নাজনীনের এই সফর শহীদ সাজ্জাদের পরিবার এবং উত্তরাঞ্চলের জনগণের প্রতি তার দায়বদ্ধতার উদাহরণ হিসেবে উল্লেখযোগ্য হয়ে থাকবে।

উপরে