সোনা চোরাচালান চক্রের হোতা জাভেদ আক্তার গ্রেফতার
ঢাকার বিমানবন্দর থানা পুলিশের অভিযানে সোনা চোরাচালান চক্রের হোতা, কথিত সাংবাদিক জাভেদ আক্তার (৪৩) গ্রেফতার হয়েছেন। তার গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিমানবন্দর থানার এসআই আজহারুল ইসলাম।
আটককৃত জাভেদ আক্তারের বাড়ি নীলফামারীর সৈয়দপুরে। সাংবাদিক পরিচয়ে দীর্ঘদিন সোনা চোরাচালান চক্রে সম্পৃক্ত থাকায়, শহরজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে।
জানা যায়, জাভেদ আক্তার সৈয়দপুর শহরে সাংবাদিক পরিচয়ে থানায় আটককৃত ব্যক্তিদের তদবির বাণিজ্য করতেন। এর ফলে তিনি থানা-পুলিশ ও স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত ছিলেন। কিন্তু সোনার চোরাচালানে তার সম্পৃক্ততা এতদিন প্রকাশ পায়নি, যেহেতু এ বিষয়ে যথেষ্ট প্রমাণ ছিল না।
সম্প্রতি শাহজালাল বিমানবন্দরে ৬ কোটি টাকার সোনাসহ আটক হওয়া এক ব্যক্তির স্বীকারোক্তির পর, গ্রেফতারকৃতের আসল পরিচয় উন্মোচিত হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ৩০ নভেম্বর রাতে ঢাকার ডিবি পুলিশ সৈয়দপুর থেকে জাভেদ আক্তারকে গ্রেফতার করে।
বিমানবন্দর থানার তদন্তকারী কর্মকর্তা ২৭ নভেম্বর সিএমএম আদালতে দাখিলকৃত রিমান্ড আবেদনে উল্লেখ করেন যে, সৈয়দপুরের ধলাগাছ এলাকার জিয়াউল ইসলাম (৫৮) গত ১৬ আগস্ট সিঙ্গাপুর থেকে দেশে ফেরার পথে বিমানবন্দর পুলিশের হাতে আটক হন। তার ব্যাগে অবৈধভাবে আনা ১২টি স্বর্ণবার পাওয়া যায়, যার ওজন ছিল ৫ কেজি ৯শ’ ৮০ গ্রাম এবং বাজারমূল্য প্রায় ৬ কোটি টাকা। তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়।
রিমান্ডে জিয়াউল ইসলাম ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেন, যার মাধ্যমে সোনার চোরাচালানের আসল রহস্য প্রকাশ পায়। তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী, স্বর্ণ চোরাচালানের মূলহোতা সৈয়দপুর শহরের নতুন বাবুপাড়া এলাকার মো. জামিল আক্তারের ছেলে, কথিত সাংবাদিক মো. জাভেদ আক্তার। পাসপোর্টে তার ঠিকানা নতুন বাবুপাড়া উল্লেখ থাকলেও, তিনি শহরের ইসলামবাগ সেরু হোটেল এলাকায় শ্বশুড়বাড়িতে বসবাস করতেন।
সূত্র জানায়, সোনা চোরাচালান চক্রের মূল হোতা হলেও জাভেদ আক্তারের সিন্ডিকেটে সৈয়দপুর শহরের গালামাল ব্যবসায়ী, স্টিল আসবাবপত্র ব্যবসায়ী এবং এক হোটেল মালিকও জড়িত থাকতে পারে।
জিয়াউল ইসলামের পরিবারের সদস্যরা জানান, জাভেদ আক্তার তাদের বৃদ্ধ এবং অসুস্থ পিতাকে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসার জন্য প্রলোভন দেখিয়ে পাঠিয়েছিলেন।
জাভেদ আক্তারের গ্রেফতার হওয়ার পর, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিটেকটিভ ব্রাঞ্চ (ডিবি) ২০ নভেম্বর রাতে তাকে সৈয়দপুর শহরের ইসলামবাগ সেরু হোটেল এলাকা থেকে আটক করে ঢাকায় নিয়ে যায়। তাকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আজ (সোমবার) আদালতে তোলা হতে পারে বলে জানা গেছে।
এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন সৈয়দপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফইম উদ্দিন।