প্রকাশিত : ৬ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১৪:৩৩

বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত সিরাজগঞ্জ সরকারি মুরগি প্রজনন ও উন্নয়ন খামার

ফিরোজ আল আমিন, তাড়াশ, সিরাজগঞ্জঃ
বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত সিরাজগঞ্জ সরকারি মুরগি প্রজনন ও উন্নয়ন খামার

সিরাজগঞ্জে সরকারি মুরগি প্রজনন ও উন্নয়ন খামারের প্রয়োজনীয় জনবল ও অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতির অভাবের কারণে বাচ্চা উৎপাদনে বাধা সৃষ্টি হচ্ছে। ফলে চাহিদা থাকা সত্ত্বেও সেই অনুযায়ী বাচ্চা উৎপাদন করা সম্ভব হচ্ছে না। শুধু তাই নয়, শহরের কাছেই শিয়ালকোল কার্যালয় চত্বরে সামান্য বৃষ্টিতে পানি জমে থাকে বলে জানান দায়িত্বে থাকা কর্মীরা।জানা গেছে, ১৯৮৪ সালে প্রতিষ্ঠিত এই খামারে ১৫ জন কর্মকর্তা ও কর্মচারীর পদ থাকলেও বর্তমানে সেখানে মাত্র ৬ জন কর্মরত রয়েছেন। এই খামারে বার্ষিক বাচ্চা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ১ লাখ। চাহিদা পূরণ হলেও আধুনিক যন্ত্রপাতির অভাবে বাড়তি সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। প্রজনন কেন্দ্রে সোনালি ও ফাওমি মুরগির বাচ্চা উৎপাদিত হয়। এখান থেকে বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে সরবরাহ ছাড়াও গ্রামীণ দরিদ্র পরিবারের সদস্যদের স্বাবলম্বী করার উদ্দেশ্যে মুরগির বাচ্চা কেনা হয়ে থাকে।
এখান থেকে প্রাপ্ত এক দিনের মুরগির বাচ্চা ১৫ টাকায় কিনে পালন এবং ডিম উৎপাদন করে অনেক অস্বচ্ছল পরিবার, বিশেষ করে মহিলারা আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হয়েছে। এ থেকে তারা শুধু ডাল-ভাত নয়, নিজেদের ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার খরচও চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু চাহিদা অনুযায়ী মুরগির বাচ্চা সরবরাহে বিঘ্ন সৃষ্টি হওয়ায় অনেক ক্রেতা আজ বিপদে পড়েছে বলে জানায় শিয়ালকোল গ্রামের ক্ষুদ্র খামারি শেফালি বেগম।

তাছাড়াও আসমা বেগম জানায়, এক দিনের মুরগির বাচ্চা ১৫ টাকায় ক্রয় করে ৪থেকে সাড়ে ৪ মাস পালন করলেই ডিম পাড়া শুরু করে। ৪৮-৫০ টাকা হালি ডিম বিক্রি করেও আমরা অনেকটাই লাভবান হই।

অনেক সময় আর্থিক অনটনের কারণে ২ থেকে আড়াই মাস বয়সেই আমাদের মুরগি বিক্রি করতে হয়। প্রতি কেজি সোনালি, ফাওমি মুরগি ২৭০-২৮০ টাকায় বিক্রি করে থাকি।সিরাজগঞ্জ জেলা পোলট্রি খামার সভাপতি রফিকুল ইসলাম জানান, জেলায় ৮ হাজার মুরগীর খামার রয়েছে। খাদ্যের মূল্য বৃদ্ধির কারণে ইতিমধ্যেই অনেক খামার বন্ধ হয়ে গেছে। খাদ্যের দাম বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে খামারীরা আরও ক্ষতির মুখে পড়বে। তাছাড়াও মুরগি উৎপাদন সমস্যা দূর না হলে মুরগির মূল্য কোনদিনই কমবে না।সিরাজগঞ্জের সরকারি মুরগি প্রজনন ও উন্নয়ন খামারের ব্যবস্থাপক মোঃ বাহালুল করিম জানান, সামান্য বৃষ্টি পাতেই অফিস চত্বরে পানি জমে যায়। যার সমাধানে নিজেরাই পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। জনবল ও অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতির অভাবের কথা জানিয়ে তিনি আরও বলেন, আধুনিক যন্ত্রের অভাবে চাহিদা থাকা সত্বেও চাহিদা অনুযায়ী বাচ্চা উৎপাদন সম্ভব হচ্ছেনা। সমস্যা সমাধানে উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে অভিহিত করা হয়েছে। এখান থেকে ১ দিনের বাচ্চা কিনে অনেক অস্বচ্ছল পরিবারের সদস্যরা স্বাবলম্বি হবার কথাও জানান তিনি।

উপরে