প্রকাশিত : ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৪ ২৩:৫০
নাটোরে অবৈধ ইটভাটা- আবাদি জমিসহ জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ চরম হুমকিতে
নাটোর জেলা সংবাদদাতাঃ
সরকারি অনুমতি ও পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমোদন ছাড়াই নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে নাটোরের লালপুরে গড়ে উঠেছে প্রায় ত্রিশোর্ধ অবৈধ ইটের ভাটা। এসব ইট ভাটার কারণে আবাদি জমি কমে যাচ্ছে এবং জমির উর্বরতা হ্রাস পাচ্ছে। এতে স্থানীয় কৃষকরা চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
ইট প্রস্তুত ও ভাটা নিয়ন্ত্রণ আইন-২০১৯ অনুযায়ী লাইসেন্স ছাড়া ইট ভাটা চালানো শাস্তিযোগ্য অপরাধ। কিন্তু আইন অমান্য করে ফসলি জমি, রাস্তার পাশে ও জনবসতিপূর্ণ এলাকায় ইটভাটা গড়ে উঠেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ ভাটার মালিকেরা সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের অনুমোদন ছাড়াই কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
ইট ভাটায় কাঠ পোড়ানোর ফলে সৃষ্ট কালো ধোঁয়ার কারণে রবিশস্য সহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষতি হচ্ছে। কৃষক মোস্তাফিজুর রহমান, মোবারক আলী, মুকুল হোসেন এবং লিটন জানান,ধোঁয়ার কারণে ফসলের উৎপাদন কমে যাচ্ছে। আখ চাষী ইসমাইল হোসেন বলেন, ধোঁয়ার কারণে গাছের ডোগা ও পাতার সতেজতা নষ্ট হয়ে যায়। তাছাড়া আমের মুকুল নষ্ট ও গুটিতে কালো দাগ দেখা দেয় এবং পচন ধরে। ফলে কাঙ্ক্ষিত ফলনের লক্ষ্যমাত্রা বিনষ্ট হয়ে পড়ে।
অন্যদিকে মানবদেহে নানা রোগের লক্ষণ দেখা দেয়। শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ছে স্থানীয় জনগণ। লালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.একে এম শাহাব উদ্দিন বলেন, " ইট ভাটা থেকে সৃষ্ট ধোঁয়া বাতাসে মিশে দুষিত হয়ে যায়। যা শ্বাস-প্রশ্বাসের সঙ্গে মানবদেহে প্রবেশ করে ফুসফুসে পৌঁছে রক্তের রক্তের মাধ্যমে দেহে ছড়িয়ে পড়ে। এ থেকে বমি, মাথাব্যথা, বুক ব্যথা, এ্যাজমা, এলার্জি, স্নায়ুবিক দূর্বলতা, এমনকি মরণব্যাধি ক্যানসারের মতো জটিল রোগপ আক্রান্ত হওয়ার আশংকা দেখা দেয়।
এ বিষয়ে লালপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মেহেদী হাসান বলেন," পরিবেশ অধিদপ্তরের সাথে যোগাযোগ করা হয়েছে। অবৈধ ইটভাটার তালিকা অনুসন্ধান করা হচ্ছে। তালিকা হাতে পেলে এসব ভাটার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে "।
সচেতন মহল বলছে, প্রশাসনের নাকের ডগায় অবৈধ এসব ভাটা গড়ে তোলে কার্যক্রম চালিয়ে গেলেও পরিবেশ দূষন রক্ষায় কোন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না। তারা দ্রুত পরিবেশ বিনষ্টকারী এসব অবৈধ ভাটা বন্ধে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।