প্রকাশিত : ২৪ ডিসেম্বর, ২০২৪ ০১:১১

আদমদীঘির রক্তদহ বিলে চায়না দুয়ারি জালের ফাঁদে পড়ে ধ্বংস হচ্ছে দেশীয় প্রজাতির মাছ

মিহির কুমার সরকার, আদমদীঘি, বগুড়া:
আদমদীঘির রক্তদহ বিলে চায়না দুয়ারি জালের ফাঁদে পড়ে ধ্বংস হচ্ছে দেশীয় প্রজাতির মাছ
বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার রক্তদহ বিল। ছবি: মিহির কুমার সরকার/চাঁদনী বাজার

বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার রক্তদহ বিলে নিষিদ্ধ চায়না দুয়ারি জাল (রিং জাল) দিয়ে অবাধে চলছে মাছ শিকার। কারেন্ট জালের পর এবার এই চায়না দুয়ারি জাল দ্বারা খাল, বিল, নদী ও জলাশয়ে দেশীয় মাছ নিধন করা হচ্ছে। এই জালের ফাঁদে পড়ে ধ্বংস হচ্ছে ছোট-বড় দেশীয় প্রজাতির মাছসহ নানা জলজ প্রাণী। বড় মাছ থেকে শুরু করে রেণু পোনা পর্যন্ত এই জালে আটকা পড়ে, ফলে ক্রমেই মাছশূন্য হয়ে পড়ছে এসব জলাশয়।

নিষিদ্ধ জালের ব্যবহার এবং তার ক্ষতিকর প্রভাব

জানা গেছে, বর্ষা মৌসুমের শুরু থেকেই অসাধু মৎস্য শিকারীরা চায়না দুয়ারি জাল ব্যবহার করে নদী ও খাল বিলে মাছ শিকার করছে। এই জালের বিশেষত্ব হলো, এতে বড় মাছের পাশাপাশি রেণু পোনা এবং বিভিন্ন জলজ প্রাণীও ধরা পড়ে। বড় মাছ সংগ্রহ করার পর শিকারীরা রেণু মাছ ও জলজ প্রাণীদের শুকনো জায়গায় ফেলে রেখে যায়, যার কারণে সেগুলো মারা যায়।

প্রজাতির ধ্বংস ও প্রজনন সংকট

এ কারণে মাছের প্রজনন হ্রাস পাচ্ছে। হাটবাজারে দেশীয় প্রজাতির মাছের সংকট দেখা দিয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, চায়না দুয়ারি জালের ব্যবহার না থামালে আরও বেশি ক্ষতি হবে এবং ভবিষ্যতে দেশীয় প্রজাতির মাছ পাওয়া দুরূহ হয়ে পড়বে।

জেলেদের জীবিকা এবং প্রতিবন্ধকতা

এছাড়া, চায়না জাল ব্যবহারের কারণে স্থানীয় জেলেরা তাদের প্রচলিত জাল দিয়ে মাছ ধরতে পারছে না। ফলে অনেক জেলে বেকার হয়ে পড়েছে এবং তাদের জীবিকা নির্বাহের পথ সংকুচিত হয়েছে।

প্রতিবন্ধকতা মোকাবেলায় ব্যবস্থা

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা নাহিদ হোসেন জানিয়েছেন, তারা চায়না জাল ব্যবহার বন্ধ করতে নানা ধরনের অভিযান পরিচালনা করছে। ইতোমধ্যে বেশ কিছু অভিযান চালিয়ে নিষিদ্ধ জাল আটক করা হয়েছে এবং ভ্রাম্যমাণ আদালতে জরিমানা করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রোমানা আফরোজ জানিয়েছেন, তারা নিষিদ্ধ চায়না জাল ব্যবহার বন্ধে অভিযান অব্যাহত রাখছেন।

এখনও যদি এই নিষিদ্ধ জাল ব্যবহারের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তবে ভবিষ্যতে দেশীয় মাছের প্রজনন ও জীববৈচিত্র্য রক্ষা কঠিন হয়ে পড়বে।

উপরে