প্রকাশিত : ২৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ ২০:২৪
বড়াইগ্রামে রাস্তা সংস্কারে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার, নেই জবাব দিহিতা
উপজেলা সংবাদদাতা, বড়াইগ্রাম, নাটোরঃ
নাটোরের বড়াইগ্রামে দুই কিলোমিটার রাস্তা সংস্কার কাজে অত্যন্ত নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় এলাকাবাসীর মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর সুত্রে জানা যায়, উপজেলার নগর ইউনিয়নের কয়েন থেকে মেরিগাছা অভিমুখে দুই কিলোমিটার পাকা রাস্তা সংস্কার কাজের দরপত্র আহ্বান করা হয়। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স পূর্বাচল ট্রেডার্সের স্বত্তাধিকারী ফখরউদ্দিন ৬৪ লাখ ৪৬ হাজার ৬৪০ টাকা ব্যয় বরাদ্দে রাস্তাটি নির্মাণের দায়িত্ব পান। পরে সাব ঠিকাদার মিল্লাত হোসেন মিঠু কিনে নিয়ে কাজটি করছেন।
সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা যায়, বিলের মধ্যে রাস্তার এ অংশটুকু খুবই ভাঙাচোরা হওয়ায় পুনরায় সংস্কার কাজ করা হচ্ছে। রাস্তা সংস্কারে এক নম্বর ইটের খোয়া দেয়ার কথা থাকলেও ঠিকাদারের লোকজন ইটভাটার ভেজা স্যাঁতস্যাতে জায়গায় পড়ে থাকা দুই ও তিন নম্বর ইট কিনে খোয়া বানিয়ে সেগুলো রাস্তায় দিচ্ছেন। এসব খোয়া সাধারণ ভ্যান-রিক্সার চাপেই ভেঙ্গে গুড়ো হয়ে যাচ্ছে। তাছাড়া রোলার করার পর এসব নিম্নমানের খোয়া ভেঙ্গে একেবারে পাউডার হয়ে যাচ্ছে।স্থানীয় লোকজন এসব খোয়া ব্যবহারে প্রতিবাদ করে উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তরকে জানালেও কোন কাজ হয়নি। তারা পরবর্তীতেও একই ধরণের ডাস্টযুক্ত নিম্নমানের ইটের খোয়া ব্যবহার করছেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, অত্যন্ত নিম্নমানের খোয়া রাস্তায় ফেলা হচ্ছে। এ সময় সেখানে লালপুর উপজেলার একটি ইটভাটা থেকে আরো এক ট্রাক নিম্নমানের খোয়া নিয়ে আসেন ঠিকাদারের লোকজন। তবে সংবাদকর্মীদের দেখে সেখানে থাকা স্থানীয় সরকার বিভাগের কার্য্য সহকারী রফিকুল ইসলাম ওই ট্রাকের খোয়া রাস্তায় দিতে নিষেধ করে তা ফেরৎ পাঠাতে বলেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ঠিকাদারের লোকজন তার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। এর ঘন্টা খানেক পরে সাব ঠিকাদার মিঠু নিজে সেখানে এসে নিষেধ উপেক্ষা করে ওই ট্রাকের নিম্নমানের খোয়া আবারও শ্রমিক দিয়ে রাস্তার ফেলেন।
কয়েন গ্রামের রাকিব হোসেন বলেন, রাস্তার এ অংশটুকু ভেঙ্গে যাওয়ায় খুব ভোগান্তি হচ্ছিল। সংস্কার হবে জেনে আমরা খুবই খুশি হয়েছিলাম। কিন্তু যে নিম্নমানের খোয়া দিচ্ছে, তাতে এ রাস্তা কয়েক মাসই টিকবে না। ভ্যানচালক আব্দুস সালাম বলেন, রাস্তায় এতো খারাপ খোয়া দিচ্ছে, আমাদের ভ্যানগাড়ির চাকার চাপেই এসব খোয়া ভেঙ্গে গুড়া হয়ে যাচ্ছে। এ রাস্তা কয়দিন টিকবে?
জানতে চাইলে সেখানে থাকা ঠিকাদারের প্রতিনিধি মাসুম আহমেদ বলেন, ভাল ইটের সঙ্গে কিছু দুই নম্বর ইটের খোয়াও ভাটা থেকে দেওয়া হয়েছে। পুরোপুরি নিয়ম মেনেতো আর কাজ করা যায় না। নিম্মমানের সামগ্রী ব্যবহারের বিষয়টি স্বীকার করে কাজের তদারকির দায়িত্বে থাকা কার্য্য সহকারী রফিকুল ইসলাম বলেন, আমি এসব খোয়ার মান খারাপ হওয়ায় প্রকৌশলী স্যার ও ঠিকাদারের কাছে অভিযোগ করেছি। তারপরও তারা খারাপ খোয়াই নিয়ে এসে রাস্তায় দিচ্ছে।
উপজেলা প্রকৌশলী রবিউল করিম বলেন, আমি একটি প্রশিক্ষণে রাজশাহীতে আছি। ঘটনাস্থলে দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ-সহকারী প্রকৌশলীকে পাঠাচ্ছি। খোঁজ নিয়ে এ ব্যাপারে কি ব্যবস্থা নেয়া যায় দেখছি।