খেজুর রস সংগ্রহে ব্যস্ত নন্দীগ্রামের গাছিরা
শীত যত বাড়ছে নন্দীগ্রামে খেজুরের রসের চাহিদাও ততো বাড়ছে। নন্দীগ্রামে গ্রামীণ এই জনপদের ঘরে ঘরে খেজুর গাছের রস দিয়ে তৈরি হচ্ছে নানা ধরনের পিঠা ও পায়েস। তাই তীব্র শীত উপেক্ষা করে খেজুরের রস সংগ্রহের জন্য ব্যস্ত সময় পার করছেন বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলার গাছিরা। সুস্বাদু এই রস আগুনে জ্বাল দিয়ে বানানো হয় বিভিন্ন রকমের পাটালি ও লালি গুড়। ফলে খেজুর রস সংগ্রহের কাজে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে তারা। খেজুর ও রস বিক্রি করেও আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন নন্দীগ্রামের গাছিরা।গাছিরা প্রতিদিন বিকেলে খেজুর গাছের সাদা অংশ পরিষ্কার করে ছোট-বড় কলসি (মাটির পাত্র) বেঁধে রাখে রসের জন্য। পরদিন সকালে সেই গাছ গুলো থেকে রস সংগ্রহ করে। কেউ কেউ এই কাঁচা রস বাজারে বিক্রি করেন। অনেকেই আবার এই রস দিয়ে পাটালি ও লালি গুড় তৈরি করে থাকেন। উপজেলার ১নং বুড়ইল ইউনিয়নের এক গাছি জানান, শীত মৌসুমের শুরুতেই খেজুর গাছের রস সংগ্রহ করি। এ রস থেকে বিভিন্ন রকমের পাটালি ও লালি গুড় তৈরি করে বাজারে বিক্রি করে অনেক লাভবান হওয়া যায়। এই উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ঘুরে আরো বিভিন্ন গাছিদের সাথে কথা বললে তারা জানান, হেমন্ত, শীত ও বসন্তকালে খেজুরগাছ থেকে রস সংগ্রহ করা হয়ে থাকে। এই রস সংগ্রহ করার জন্য আগেই খেজুরগাছ ছাটাই করে হাড়ি লাগানোর জন্য গাছ প্রস্তুত করতে হয়। খেজুর রস প্রায় সাবারই প্রিয়। খেজুর রস দিয়ে তৈরি পিঠা-পুলি, ক্ষীর ও পায়েসসহ নানা রকমের রসালো খাবার রয়েছে অনেকের পছন্দের তালিকায়। গ্রাম-বাংলায় পিঠা-পুলিতে খেজুর রস ছাড়া জমেই না। এছাড়া খেজুর রস দিয়ে তরল ও পাটারী গুড়েরও ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। তাই খেজুর রস ও গুড় খুব জনপ্রিয়। বর্তমানে নন্দীগ্রাম উপজেলায় অসংখ্য খেজুরগাছ রয়েছে। যা থেকে বিপুল পরিমাণ খেজুর রস ও গুড় পাওয়া যায়। উপজেলার ১নং বুড়ইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান জিয়া বলেন, আমাদের এলাকায় অনেক খেজুরগাছ থেকে রস সংগ্রহ করা হয়ে থাকে। এখন খেজুরগাছ থেকে রস সংগ্রহ করছে গাছিরা। শীতের পিঠা ও পায়েসের জন্য খেজুরের রস ও গুড়ের বাড়তি চাহিদা রয়েছে। বাজারে প্রতি কেজি খেজুরের গুড় বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ২০০ টাকায়। তবে খেজুর গাছ দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে তাই একসময় হয়তো খেজুর রসের ঐতিহ্য হারিয়ে যাবে। এজন্য সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে বেশি বেশি খেজুর গাছ রোপণ করা প্রয়োজন বলেও জানান তিনি।