সিরাজগঞ্জে ৬টি গুদামে একমুঠো ধানও সংগ্রহ হয়নি
চলতি আমন মৌসুমে সিরাজগঞ্জে ধান ও চাল সংগ্রহ অভিযান শুরু হলেও লক্ষ্যমাত্রা পূরণে বড় ধরনের অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। সরকারি খাদ্য অধিদপ্তরের উদ্যোগে ৩৯ দিনের এ অভিযানে জেলায় ৬টি গুদামে এখন পর্যন্ত একমুঠো ধানও সংগ্রহ করা হয়নি। বাকি ৩টি গুদামে মাত্র ১.৫৫ শতাংশ ধান সংগ্রহ করা সম্ভব হয়েছে। এ সময়ে চাল সংগ্রহ হয়েছে মাত্র ৪০ শতাংশ।
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের ১৭ নভেম্বর থেকে ৩৩ টাকা কেজি দরে ধান এবং ৪৭ টাকা দরে সিদ্ধ চাল সংগ্রহ কার্যক্রম শুরু হয়। সরকারের লক্ষ্য ছিল ৫ হাজার ৪৩৩ টন ধান এবং ৮ হাজার ৯৮.৬৮০ টন চাল সংগ্রহ করা। তবে সংগ্রহ কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর থেকে কৃষকদের আগ্রহ কম থাকায় লক্ষ্যমাত্রা অর্জন কঠিন হয়ে পড়েছে।
কেন কৃষকদের আগ্রহ নেই?
সরকারি সংগ্রহমূল্যের তুলনায় বাজারে ধানের দাম বেশি হওয়ায় কৃষকরা গুদামে ধান বিক্রিতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। সিরাজগঞ্জের ধানকুন্টি গ্রামের কৃষক আনোয়ার হোসেন বলেন, "বাজারে ধানের দাম বেশি পাওয়া যাচ্ছে। তাই সরকারকে ধান বিক্রি করছি না। তবে ভবিষ্যতে যদি বাজারের চেয়ে বেশি দাম দেওয়া হয়, তাহলে গুদামে ধান বিক্রি করব।"
গুদামে শ্রমিকদের অলস সময়
সিরাজগঞ্জ সদর খাদ্য গুদামে দেখা গেছে, শ্রমিকরা কাজের অভাবে অলস সময় কাটাচ্ছেন। গুদামের শ্রমিক জহুরুল ইসলাম ও নান্নু সেখ জানান, "আমরা ২৮ জন শ্রমিক এখানে কাজ করি। ধান না আসায় কাজের চাপ নেই।"
সংগ্রহের বর্তমান অবস্থা:
সদর উপজেলার খাদ্য গুদামে লক্ষ্যমাত্রার ৮৭৬ টনের বিপরীতে সংগ্রহ হয়েছে মাত্র ৩ টন ধান এবং ২৬৭.৫৪ টন চাল।
তাড়াশ উপজেলার খাদ্য গুদামে ৯৯৯ টনের বিপরীতে সংগ্রহ হয়েছে মাত্র ২ টন ধান এবং ৩,২০০ টন চালের বিপরীতে ১০ টন চাল।
প্রশাসনের বক্তব্য:
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক হারুন অর রশিদ বলেন, "জেলায় ৩৯১টি চালকলের মধ্যে ২৮৫টি আমাদের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ। তাদের কাছ থেকে ৪০ শতাংশ চাল সংগ্রহ করেছি। তবে ধান সংগ্রহ আশানুরূপ নয়। আমরা লক্ষ্যমাত্রা পূরণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।"
কৃষকদের ধান গুদামে আনার জন্য বাজারমূল্যের সাথে সামঞ্জস্য রেখে সরকারি মূল্য নির্ধারণ এবং কার্যকর নীতিমালা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।