দিনাজপুরে নিত্যপণ্যের দামের ঊর্ধ্বগতিতে ক্ষোভ ও হতাশা

বছর শেষ হতে চলেছে, আর এ বছরটি সাধারণ মানুষের জন্য ছিলো একটানা মূল্যবৃদ্ধির বছর। নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা হয়ে উঠেছে দুর্বিষহ। ২০২২ সালের আগস্টে যে মূল্যবৃদ্ধির ধাক্কা শুরু হয়েছিল, তা আজ তৃতীয় বছরে পা রেখেও থামেনি। পুরো বছরেই চাল, ডাল, তেল, পেঁয়াজ, আলু, সয়াবিন তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সব পণ্যের দাম বেড়েছে সিন্ডিকেটের কারণে।
নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধির মধ্যে আলু ও পেঁয়াজের দাম সব রেকর্ড ভেঙেছে। আলু একসময় ৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে, যা সাধারিতার ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গিয়েছিল। ভরা মৌসুমেও দাম কমেনি, বরং ৩৫ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। পেঁয়াজও বছরের বড় একটা সময় কাঁদিয়েছে সাধারণ মানুষকে।
ডিমও ছিলো একটি বড় সমস্যার বিষয়, বছরের মাঝামাঝিতে এর দাম ৬০ টাকা হালি পর্যন্ত চলে গিয়েছিল। সয়াবিন তেলও ছিলো আরেকটি সমস্যা; খোলা তেল ১৮৫ টাকা কেজি এবং বোতলজাত তেল ১৮০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা সরকারের শুল্ক কমানোর পরও নিয়ন্ত্রণে আসেনি।
মাংস ও মাছের দামও বেড়েছে
এছাড়া, মাংসের দামও বেড়েছে। বয়লার মুরগির দাম ১৮০-২০০ টাকা কেজি, সোনালি মুরগির দাম ৩০০-৩৫০ টাকা, দেশী মুরগির দাম ৪০০-৪২০ টাকা কেজি। গরুর মাংস ৭০০ টাকা এবং খাসীর মাংস ১০০০-১২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মাছের দামও বেড়েছে; যেমন ইলিশ মাছের দাম ৫০০ টাকা, পাঙ্গাশ ১৫০-১৮০ টাকা, রুই ও কাতল মাছের দাম ২২০-২৮০ টাকা কেজি।
চালের দামও বাড়ছে
চাল, ডাল, চিনি, মশলা সব কিছুতেই দামের ঊর্ধ্বগতির প্রভাব পড়েছে। চালের দাম ৫৬ থেকে ৮৫ টাকা কেজি, ডালও বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে—মুগ ডাল ১৬০ টাকা, ছোলা ১৪০ টাকা, মসুর ডাল ১১০-১৪০ টাকা কেজি দরে।
সরকারের প্রতিক্রিয়া
এমন পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষ সরকারের কাছে বাজার নিয়ন্ত্রণের দাবি জানাচ্ছে। ঘোড়াঘাট উপজেলার কশিগাড়ী গ্রামের আইমা বেগম বলেন, “নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে, এটা আমাদের প্রথম দাবি।” রামেশ্বরপুরের আইয়ুব আলি বলেন, “যতদিন পর্যন্ত দাম কমবে না, ততদিন পর্যন্ত এরকম পরিস্থিতি চলতে থাকবে।”
মুদি দোকানি আব্দুস সামাদ বলেন, "ডিলারদের কারণে সয়াবিন তেলের মূল্য স্থিতিশীল রাখা সম্ভব হচ্ছে না। দোকানে এখন বোতলজাত তেলও পাওয়া যায় না।"
এই পরিস্থিতিতে নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে সরকারের দ্রুত হস্তক্ষেপ প্রত্যাশা করছে সাধারণ জনগণ।