প্রকাশিত : ২৮ ডিসেম্বর, ২০২৪ ২৩:৩০

নরসিংদীর রায়পুরার সড়কটি ধুলাবালির অভিশাপে বিপর্যস্ত, হুমকির মুখে জনস্বাস্থ্য

সাদ্দাম উদ্দিন রাজ, নরসিংদী:
নরসিংদীর রায়পুরার সড়কটি ধুলাবালির অভিশাপে বিপর্যস্ত, হুমকির মুখে জনস্বাস্থ্য

নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার প্রধান আঞ্চলিক সড়ক বর্তমানে ধুলাবালির কারণে জনজীবন অতিষ্ঠ করে তুলেছে। বিশেষ করে রায়পুরা বাসস্ট্যান্ড থেকে পিটিআই মোড় এবং পান্তশালা ফেরিঘাট পর্যন্ত সড়কে অতিরিক্ত ধুলাবালি উড়ছে, যা সাধারণ মানুষ ও শিক্ষার্থীদের জন্য চরম বিপদ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এই সড়কে যানবাহন চলাচলের ফলে সড়কটি প্রায় প্রতিদিন ধুলায় ছেয়ে যায়, যা শুধু জনস্বাস্থ্যকেই হুমকির মুখে ফেলছে না, বরং দুর্ঘটনাও ঘটাচ্ছে। অনেক সময় শিক্ষার্থী, পথচারী এবং সাধারণ মানুষ দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন।

সরেজমিনে দেখা গেছে, দুর্গম চরাঞ্চলের সাধারণ মানুষ একমাত্র এই প্রধান সড়ক ব্যবহার করে, যার কারণে অতিরিক্ত ধুলাবালি তাদের জন্য বড় সমস্যার সৃষ্টি করেছে। প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাদ্রাসা, সরকারি প্রতিষ্ঠান এবং বিভিন্ন আবাসস্থল এই সড়কের পাশে অবস্থিত, ফলে ধুলাবালির কারণে শিক্ষক-শিক্ষার্থী, শিশু, বৃদ্ধা, এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্য এটি ভয়াবহ হয়ে উঠেছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, এই সড়কে অতিরিক্ত ধুলাবালির প্রধান কারণ হলো কিছু ক্ষমতাশালী লোক মেঘনা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে, যা ট্রাক্টর দিয়ে পরিবহন করা হয়। ফলে বালি সড়কে স্তূপ হয়ে পড়ছে এবং এতে ধুলাবালির পরিমাণ বাড়ছে। এছাড়া শুষ্ক আবহাওয়ার কারণে যানবাহনের চলাচলের সঙ্গে প্রচুর ধুলাবালি ছড়িয়ে পড়ছে, যা শ্বাসকষ্টসহ নানা রোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতামত
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ধুলাবালিতে বিভিন্ন ধরনের জীবাণু থাকে, যা শ্বাসকষ্ট, অ্যালার্জি, সর্দি, কাশি, টনসিল প্রদাহ, গলাব্যথা, এবং অ্যাজমার মতো রোগ সৃষ্টি করতে পারে। দীর্ঘ সময় ধুলাবালির পরিবেশে থাকার ফলে ফুসফুসে রক্তপ্রবাহ দুর্বল হয়ে যায়, যা মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।

স্থানীয় প্রশাসনের প্রতিক্রিয়া
রায়পুরা থানার অফিসার ইনচার্জ আদিল মাহমুদ জানিয়েছেন, তিনি সম্প্রতি এ থানায় যোগ দিয়েছেন এবং কিছু লোক অবৈধভাবে বালুর ব্যবসা করছে বলে শুনেছেন। তিনি অতি শীঘ্রই এসিল্যান্ডের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুদ রানা জানিয়েছেন, তিনি নতুন এসেছেন এবং এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ পাননি। তবে তিনি বলেন, “খোলা ট্রাকে বালু পরিবহন জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর এবং পরিবেশ দূষণ করছে। পরিবেশ ও বায়ুদূষণের এই সমস্যা দণ্ডবিধির ২৯১ ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ।” তিনি আরও জানান, ভ্রাম্যমাণ আদালত এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারে।

এই সমস্যার সমাধানের জন্য দ্রুত প্রশাসনের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানাচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দারা।

উপরে