প্রকাশিত : ২৮ ডিসেম্বর, ২০২৪ ২৩:৫২

দেশী-বিদেশী পাখির কলকাকলিতে মুখরিত চলনবিল

তাড়াশ সিরাজগঞ্জ সংবাদদাতা:
দেশী-বিদেশী পাখির কলকাকলিতে মুখরিত চলনবিল

দেশের উত্তর অঞ্চলের বৃহত্তম বিল হিসেবে পরিচিত চলনবিল। বিলটি সিরাজগঞ্জ, পাবনা, নাটোর ও নওগাঁর জেলার বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে অবস্থিত। উত্তর জনপদের এক বিরল প্রাকৃতিক জলসম্পদ এটি। এ বিল এক সময় বছরের নয় মাস পানিতে ডুবে থাকতো। রূপ ধারণ করত সমুদ্রের মতো। চলনবিলের আগের সেই রূপ আর নেই। প্রকৃতির হলুদ ও সবুজ রং ছড়িয়ে পড়েছে চলনবিলের চারদিকে। সেই সাথে দেশী-বিদেশী নানা প্রজাতির রং-বেরঙের পাখির কলরব, খুনসুটি, ওড়াউড়ি ও পানিতে ডুব দেয়া আর দলবেঁধে সাঁতার কাটার দৃশ্য দেখে মুগ্ধ হন পর্যটকরা।


গত ক’বছর ধরে শীতের অনেকটা আগেই পরিযায়ী পাখি বিশেষ করে সিলেট, সুনামগঞ্জ ও মৌলভীবাজারের হাওড়গুলোয় বেশি আসত। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য চর মনপুরা, উড়িরচর মুহুরী ড্যাম, নিঝুম দীপসহ টাঙ্গুয়ার হাওড়ে। ক’বছর ধরে এর বাইরে আরো অনেক এলাকা যুক্ত হয়েছে। পাখি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. আতিকুর রহমান বলেন, শুধু চলনবিলই নয়, রাজশাহী অঞ্চলে পদ্মা নদীতে পাখির আনাগোনা বিগত বছরগুলোর তুলনায় বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি বলেন গবেষণায় দেখা গেছে, ‘দেহজ গ্রন্থি, আলোকরশ্মি, বাতাসের গতি, রাতে আকাশের তারা, ভূমির গন্ধ ও আকৃতির সাথে জিও ম্যাগনেটিজম বিষয়টি পাখিদের একটি জিনগত প্রক্রিয়া। এরা কয়েক হাজার মাইল পাড়ি দেয়ার আগে শরতে বেশি করে খাবার খেয়ে পালকে শক্তি সঞ্চয় করে। সরেজমিনে চলনবিলের বিভিন্ন পেশার মানুষের সাথে কথা বলে জানা যায়, ‘জলবায়ু পরিবর্তন ও প্রাকৃতিক কারণে কমে গেছে জলজ উদ্ভিদ। পরিযায়ী পাখীদের বড় একটি অংশ পানিফল, হেলেঞ্চা, বল্লুয়া, চাল্লিয়া ও শাপলাপাতাকে ঘিরে বসবাস করে। কিন্তু ফসল আবাদে প্রচুর পরিমাণ রাসায়নিক সার,  কীটনাশক প্রয়োগ ও কচুরিপানার কারণে জলজ উদ্ভিদ কমে গেছে অন্তত ৪০ শতাংশ। গত বছর চলনবিলে ৩০ প্রজাতির পাখির দেখা মিললেও এ বছর ৪২ প্রজাতির দেখা মিলেছে। বিশিষ্ট পাখিবিদ (অব:) অধ্যাপক ড. জাকির হোসাইন জানান, এ বছর আমি ৪২ প্রজাতির পাখির দেখা পেয়েছি। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য রাজ সরালি, বালিহাঁস, পাতি তিলি হাঁস, গিরিহাঁস, পিয়ং হাঁস, গয়ার বা সাপপাখি, পাতি পানমুরগি, লালফিদ্দা, বড়গুটি ঈগল, পুরের পানকাপাস, পালাসি, কুরাঈগল, সঙ্খচিল, ৫-৭ প্রজাতির ফুটকি, তিলা লালপা, বিল বাটান, কালাপাখ ঠেঙি, লাল লতিকা টিটি, রাঙাচ্যাগা ইত্যাদি। চলনবিল জীববৈচিত্র্য রক্ষায় কাজ করেন সাংবাদিক প্রভাষক মো: আখতারুজ্জামান। তিনি বলেন,  জলজ উদ্ভিদের ভেতর খাবার সংগ্রহসহ জলজ বনে অনেক প্রজাতির পাখি ডিম পাড়ে। তাই জলজ উদ্ভিদ রক্ষায় প্রশাসনিক তৎপরতা বাড়ানো জরুরি।
 

উপরে