প্রকাশিত : ২৯ ডিসেম্বর, ২০২৪ ০০:১০

রাজনৈতিক প্রতিংহিংসার সৈয়দপুর বিটিসিএল: সেবা পরিস্থিতি ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

মোঃ মাইনুল হক, নীলফামারীঃ
রাজনৈতিক প্রতিংহিংসার সৈয়দপুর বিটিসিএল: সেবা পরিস্থিতি ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

 

নীলফামারীর সৈয়দপুরে অবস্থিত বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ কোম্পানি লিমিটেড (বিটিসিএল)-এর টেলিফোন এক্সচেঞ্জটি দীর্ঘদিন ধরে নানা সমস্যার মধ্যে রয়েছে। ২০০৬ সালের ১৭ আগস্ট তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া এর উদ্বোধন করেন। তবে তার পরবর্তী সময়ে, বিশেষত আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে এই সেবার কার্যক্রমে কিছুটা শ্লথ গতি দেখা দেয়। বর্তমানে, জনবল সংকট এবং যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে শহর ও গ্রামাঞ্চলের টেলিফোন সেবা একেবারে ঢিলেঢালা অবস্থায় চলছে।

এছাড়া, পুরাতন সিস্টেমের পাশাপাশি আন্ডারগ্রাউন্ড কপার কেবল ড্যামেজ হওয়ার কারণে গ্রাহকদের বিভিন্ন সমস্যা হচ্ছে। বিশেষত টেলিফোন এক্সচেঞ্জে পুরাতন ডিজিটাল ফাইবার লাইনের ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া এবং নতুন সংযোগ স্থাপন না হওয়া অন্যতম কারণ।

টেলিফোন সংযোগের সংকট
সৈয়দপুর উপজেলায় মোট ১৮০০টি টেলিফোন সংযোগ ছিল, যার মধ্যে অধিকাংশ গ্রাহকের বিল বকেয়া থাকায় সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এছাড়া, পৌরসভার আরসিসি ড্রেনেজ নির্মাণের সময় টেলিফোন এক্সচেঞ্জের ডিজিটাল ফাইবার লাইন একাধিক জায়গায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যার কারণে বেশ কিছু পুরাতন সংযোগও বিচ্ছিন্ন রয়েছে। বর্তমানে সচল থাকা সংযোগের সংখ্যা মাত্র ৫০১টি। অভিযোগ রয়েছে যে, অফিসে অভিযোগ না করলে সহজে সেবা পাওয়া যায় না এবং টেলিফোন সংযোগ সচল রাখতে গ্রাহকদের অনেক কষ্ট করতে হচ্ছে।

গ্রাহকদের অভিজ্ঞতা
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কিছু গ্রাহক জানাচ্ছেন, “নামেই ডিজিটাল, তবে বাস্তবে এটি কার্যকরী নয়। কয়েক মাস ধরে আমাদের টেলিফোন সংযোগ বিচ্ছিন্ন। অফিসে অভিযোগ না করলে সংযোগ পুনঃস্থাপন করা হয় না।” এমনকি বিল পরিশোধের পরও অনেক সময় গ্রাহকদের যথাসময়ে সেবা পাওয়া যায় না।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বক্তব্য
টেলিফোন এক্সচেঞ্জের দুই লাইনম্যান আবুল কালাম আজাদ এবং নুর আলম সর্দার জানান, পৌরসভা এলাকার আরসিসি ড্রেনেজ নির্মাণের সময় ডিজিটাল ফাইবার লাইনের অনেক জায়গায় ক্ষতি হয়েছে। তারা বলেন, "পৌরসভার কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েও সমস্যার সমাধান হয়নি। ফাইবার ক্যাবল আবার নতুন করে স্থাপন করা যাচ্ছে না, কারণ এক্সচেঞ্জ ভবনে জনবল সংকট রয়েছে।"

ভবিষ্যত পরিকল্পনা
স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা টেলিফোন এক্সচেঞ্জের কার্যক্রম দ্রুত গতিতে চালু করার জন্য জনবল বৃদ্ধি এবং নতুন প্রযুক্তি সংযোগ চালু করার পরামর্শ দিয়েছেন। এই বিষয়টি নিয়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য বিলকিস ইসলাম বলেন, “আগামীতে বিএনপি সরকার গঠন করলে প্রযুক্তিগত উন্নয়ন ঘটানো হবে।” এছাড়া, সৈয়দপুর রাজনৈতিক জেলা বিএনপির সভাপতি অধ্যক্ষ আবদুল গফুর সরকার জানান, "রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে সৈয়দপুর উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত হয়েছিল, কিন্তু এখন উন্নয়ন অব্যাহত থাকবে।"

বিটিসিএলের আশাবাদ
বাংলাদেশ টেলি কমিউনিকেশনস কোম্পানি লিমিটেড (বিটিসিএল)-এর জুনিয়র সহকারী ব্যবস্হাপক আবদুল হান্নান জানান, “অকটিক্যাল ফাইবারের মাধ্যমে ওয়াইফাই ও জি-পন সংযোগ দ্রুত চালু করার জন্য কর্তৃপক্ষ আশাবাদী, যা সরকারের রাজস্ব আয় বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।”

উপরে