আত্রাইয়ে ছাত্রী হেনস্থার অভিযোগে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে মানববন্ধন, অপসারণের দাবি

নওগাঁর আত্রাই উপজেলার বান্দাইখাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দিলীপ কুমার মন্ডলের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের প্রতি অসদাচরণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) সকাল ১০টায় বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকাবাসী বান্দাইখাড়া বাজারে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন করেন। তারা অভিযুক্ত শিক্ষকের অপসারণ ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এর আগেও ২০১৪ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি দিলীপ কুমার মন্ডলের বিরুদ্ধে একই ধরনের অভিযোগ ওঠে। সে সময় তিনি নিজের দোষ স্বীকার করলে বিদ্যালয়ের তৎকালীন প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটি সাধারণ ক্ষমা করে সতর্ক করে দেন। কিন্তু অভিযোগ রয়েছে, এরপরও তিনি তার আচরণে পরিবর্তন আনেননি।
সবশেষ গত ১২ মার্চ ২০২৫ তারিখে ছাত্রীরা অভিভাবকদের মাধ্যমে নওগাঁ জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন। এতে দিলীপ কুমার মন্ডলকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব না দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানানো হয়।
অভিযোগ সত্ত্বেও গত ১৬ মার্চ বিদ্যালয়ের তৎকালীন প্রধান শিক্ষক দিলীপ কুমার প্রামানিক অবসরে গেলে জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে দিলীপ কুমার মন্ডল ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পান, যা ঘিরে ব্যাপক অসন্তোষ দেখা দেয়।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, “এই শিক্ষক দীর্ঘদিন ধরে ছাত্রীদের সাথে অশোভন আচরণ করে আসছেন। আমরা চাই প্রশাসন দ্রুত পদক্ষেপ নিক এবং মেয়েদের জন্য নিরাপদ শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত করুক।”
সাবেক ম্যানেজিং কমিটির সদস্য মো. জাহিদ বলেন, “মেয়েদের নিরাপত্তা ও ভবিষ্যৎ নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের হস্তক্ষেপ চাই।”
ছাত্রী কামরুন নাহার বলেন, “তার বিরুদ্ধে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হোক।”
তবে অভিযুক্ত ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দিলীপ কুমার মন্ডল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “এগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং ষড়যন্ত্রমূলক অভিযোগ। আমাকে দায়িত্ব থেকে সরাতে একটি পক্ষ ষড়যন্ত্র করছে।”
মানববন্ধনে আরও উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় ব্যক্তিবর্গ মো. আকরাম হোসেন সরদার, মো. আনোয়ার হোসেন তরফদার, মো. মামুনুর রশিদ, অভিভাবক মো. ওহিদুর রহমান এবং শিক্ষার্থীরা—তাসমিয়া, তাফসিয়া, ফারহানা ইয়াসমিন প্রমুখ।
ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের দাবি, এ ঘটনায় প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।