শেরপুর উপজেলা হাসপাতাল: ৫০ শয্যার স্বপ্ন পূরণের পথে

বগুড়ার শেরপুর উপজেলার ৩১ শয্যার হাসপাতালটি ২০১৮ সালে প্রশাসনিকভাবে ৫০ শয্যায় উন্নীত করার অনুমোদন পেলেও দীর্ঘ সাত বছর পর ২০২৫ সালে এসে মিলেছে জনবল নিয়োগের অনুমোদন। এতে স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়নে নতুন করে আশার আলো দেখছেন স্থানীয়রা।
সরাসরি ঘুরে দেখা গেছে, হাসপাতালটিতে বর্তমানে ১৯টি মেডিকেল অফিসারের পদ থাকলেও কর্মরত রয়েছেন মাত্র ৭ জন চিকিৎসক। রোগীর চাপ বেশি থাকলেও জরুরি বিভাগসহ প্রতিটি ইউনিটে দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসকরা আন্তরিকভাবে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।
উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার (স্যাকমো) হিসেবে ৮টি পদের বিপরীতে কর্মরত আছেন ৭ জন। হাসপাতালটিতে ৩৪ জন নার্স রয়েছেন, যা মোটামুটি সুষম থাকলেও অন্যান্য কিছু পদে রয়েছে ঘাটতি। যেমন, ওয়ার্ড বয়ের ৫টি পদের বিপরীতে কর্মরত আছেন মাত্র ২ জন। এছাড়া মালি, ক্লিনার, নাইট গার্ড ও জুনিয়র মেকানিক না থাকায় বিদ্যুৎ বিভ্রাট, পরিচ্ছন্নতা ও নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজে ব্যাঘাত ঘটছে।
বগুড়ার নন্দিগ্রামসহ অন্যান্য উপজেলা হাসপাতালের সাথে তুলনা করে দেখা গেছে, শেরপুরের চিত্র অনেকটা কাছাকাছি।
সেবা নিতে আসা গর্ভবতী নারী রহিমা বেগম জানান, “আমি নিয়মিত চেকআপ করতে এখানে আসি। চিকিৎসকরা ভালোভাবে পরামর্শ দেন।”
ডায়াবেটিসে আক্রান্ত আব্দুস সাত্তার জানান, “এখানে ডায়াবেটিস পরীক্ষা করালাম, প্রয়োজনীয় ওষুধও ফ্রি পেয়েছি।”
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক চিকিৎসক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, “জরুরি বিভাগে প্রতিদিন গড়ে ১৫০-২০০ জন রোগী সেবা নিতে আসেন। মা ও শিশুর স্বাস্থ্যসেবা, জ্বর, সর্দি, ছোটখাটো আঘাত, নিউমোনিয়া, গর্ভবতী নারীর নিয়মিত পরীক্ষা, ডায়রিয়া, পেটের সমস্যা, উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস—এসব রোগীর সংখ্যাই বেশি।”
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ইউএইচএফপিও) ডা. সাজিদ হাসান সাদ্দিকী বলেন, “আমাদের এখানে জনবল ও অবকাঠামোর কিছু ঘাটতি রয়েছে, তবে আমরা চেষ্টা করছি সাধ্যমতো সেবা দেওয়ার। স্থায়ী নিয়োগ এবং বেড বৃদ্ধির ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি।”
তিনি আরও বলেন, “২০১৮ সালে ৫০ শয্যায় উন্নীত করার প্রশাসনিক অনুমোদন পাওয়া গেলেও জনবলের অনুমোদন মিলেছে সম্প্রতি ২০২৫ সালে। আমরা আশা করছি, শিগগিরই নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হবে এবং হাসপাতালের অবকাঠামোগত উন্নয়নের মাধ্যমে বেডের সংখ্যা বাড়ানো সম্ভব হবে।”