কৃষকদের ১০ দফা দাবিতে বগুড়ায় কৃষক ঐক্য পরিষদের লং মার্চ শুরু

“যে কৃষক যোগায় ক্ষুধায় অন্ন, সে কৃষক আজ কেনো বিপন্ন”—এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে কৃষকদের অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে কৃষক ঐক্য পরিষদ বাংলাদেশ বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) বগুড়ার শেরপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে সপ্তাহব্যাপী লং মার্চ কর্মসূচির সূচনা করেছে।
সকাল ১০টায় শেরপুর বাসস্ট্যান্ডে আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বগুড়া জেলা কৃষক নেতা জেলাল শফি। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কৃষক ঐক্য পরিষদ বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় চেয়ারম্যান কৃষিবিদ মনজুর, মহাসচিব সুলতান হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম, কৃষি বিষয়ক সম্পাদক সাহাবুদ্দিন ফরাজীসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
বক্তারা বলেন, কৃষি খাত দেশের অর্থনীতির মেরুদণ্ড হলেও কৃষকেরা আজ নানা দুর্ভোগের শিকার। তারা সরকারের প্রতি আহ্বান জানান, যেন দ্রুত কৃষকের সমস্যা সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়।
লং মার্চে কৃষকদের পক্ষ থেকে ১০ দফা দাবি উপস্থাপন করা হয়, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য দাবিগুলো হলো:
আলু ও পেঁয়াজ কমিশন গঠন এবং উপজেলা ভিত্তিক সংরক্ষণাগার ও রপ্তানি কেন্দ্র স্থাপন
ঢাকাসহ সারা দেশে কৃষকের বাজার প্রতিষ্ঠা
কৃষিঋণ ও প্রণোদনা সহজীকরণ
কৃষিপণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতকরণ
কৃষিপণ্য পরিবহনে চাঁদাবাজি ও টোল প্রথা বন্ধ
খাস ও পতিত জমি কৃষকদের মাঝে বিতরণ
কৃষকদের জন্য বিশেষ ভাতা চালু
সরকারিভাবে কৃষি বীমা ও আর্থিক সহায়তা ব্যবস্থা
সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে কৃষকদের জন্য বিশেষ চিকিৎসা সেবা
জাতীয় সংসদসহ বিভিন্ন কমিটিতে কৃষক প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত এবং আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি সরবরাহ
সমাবেশ শেষে অংশগ্রহণকারীরা শেরপুর থেকে নয় মাইল বাজার, পল্লী উন্নয়ন একাডেমি, বনানী মোড়, চারমাথা বাসস্ট্যান্ড, মাটিডালি বিমান মোড় ও মহাস্থান হাট এলাকায় পথসভা, মতবিনিময় ও সদস্য সংগ্রহ কার্যক্রম পরিচালনা করেন। রাত যাপন শেষে শুক্রবার তাদের পরবর্তী গন্তব্য মোকামতলা। এরপর লং মার্চ পর্যায়ক্রমে গাইবান্ধা, রংপুর, লালমনিরহাট, নীলফামারী, ঠাকুরগাঁও হয়ে পঞ্চগড় পর্যন্ত চলবে।
বগুড়া জেলা কৃষকনেতা জেলাল শফি বলেন, “এই লং মার্চ কৃষকদের ন্যায্য অধিকার আদায়ে একটি ঐতিহাসিক পদক্ষেপ হয়ে থাকবে। আমরা বিশ্বাস করি, এই কর্মসূচির মাধ্যমে সরকার ও জনগণের দৃষ্টি আমাদের দাবিগুলোর দিকে আকৃষ্ট হবে।”