প্রকাশিত : ১৮ এপ্রিল, ২০২৫ ০০:৩৬
Rajshahi News

রাজশাহীতে বাবার লাশ রেখে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিলেন রাকিয়া

উত্ত্যক্তকারীর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় বাবাকে হত্যা, হত্যার বিচার চান স্বজনরা
মো. ফয়সাল আলম, রাজশাহী
রাজশাহীতে বাবার লাশ রেখে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিলেন রাকিয়া

রাজশাহীতে মেয়েকে উত্ত্যক্ত করার প্রতিবাদ করায় নির্মমভাবে খুন হয়েছেন বাসচালক আকরাম আলী (৫২)। বাবার লাশ ঘরে রেখেই এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে বাধ্য হয়েছেন তাঁর মেয়ে রাকিয়া আলফি।

বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) ইংরেজি দ্বিতীয় পত্রের পরীক্ষায় রাজশাহীর শিরোইল উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে অংশ নেন রাকিয়া, যিনি অগ্রণী বিদ্যালয় ও মহাবিদ্যালয়ের ছাত্রী।

নিহত আকরাম আলী নগরীর তালাইমারী শহীদ মিনার এলাকার বাসিন্দা ও রাজশাহী জেলা মোটরশ্রমিক ইউনিয়নের সদস্য। তাঁর ছেলে হাসান ইমাম অনন্ত বোয়ালিয়া মডেল থানায় সাতজনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত চার-পাঁচজনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আসামি নান্টু সম্প্রতি তার স্ত্রীকে মারধর করলে প্রতিবাদ করেন আকরাম আলী। পরে সে ক্ষিপ্ত হয়ে আকরামের মেয়ে রাকিয়াকে উত্ত্যক্ত করতে শুরু করে। ঘটনার আগের দিন রাকিয়াকে গালিগালাজ করায় আকরাম অভিযুক্তের পরিবারের কাছে নালিশ করেন। এর জেরে বুধবার (১৬ এপ্রিল) রাতে তালাইমারী শহীদ মিনার এলাকায় আকরাম ও তাঁর ছেলেকে অতর্কিত হামলার শিকার হতে হয়। ইটের আঘাতে গুরুতর জখম হয়ে আকরাম রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান।

নিহতের স্ত্রী মুক্তি বেগম বলেন, “আমার স্বামী শুধু মেয়েকে রক্ষা করতে গিয়ে খুন হলো। মেয়েটা বাবার লাশ রেখে কাঁদতে কাঁদতে পরীক্ষা দিতে গেল। আমি এর বিচার চাই, ওদের ফাঁসি চাই।”

রাকিয়ার স্কুলের অধ্যক্ষ সাইফুল ইসলাম বলেন, “আমাদের শিক্ষার্থী রাকিয়ার বাবাকে শুধু প্রতিবাদ করায় হত্যা করা হয়েছে। আমরা এই ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।”

এ ঘটনায় মামলার আসামিদের মধ্যে রয়েছেন—নান্টু (২৮), বিশাল (২৮), খোকন (২৮), তাসিন (২৫), অমি (২০), নাহিদ (২৫) ও শিশির (২০)।
রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার সাবিনা ইয়াসমিন জানান, মামলার পরিপ্রেক্ষিতে আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

উপরে