প্রকাশিত : ৭ মে, ২০২৫ ০০:১৮

এপ্রিলে ৫৬৭ সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৫৮৩, আহত ১২০২: যাত্রী কল্যাণ সমিতি

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিঃ
এপ্রিলে ৫৬৭ সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৫৮৩, আহত ১২০২: যাত্রী কল্যাণ সমিতি

বিদায়ী এপ্রিল মাসে সড়ক, রেল ও নৌ-পথে ৬১০টি দুর্ঘটনায় ৬২৮ জন নিহত এবং ১২০৭ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি। আজ মঙ্গলবার (৬ মে) সংগঠনের মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরীর স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য প্রকাশ করা হয়।

গণমাধ্যমে প্রকাশিত জাতীয়, আঞ্চলিক ও অনলাইন সংবাদপত্রে দুর্ঘটনার খবর পর্যবেক্ষণ করে যাত্রী কল্যাণ সমিতির দুর্ঘটনা মনিটরিং সেল এই প্রতিবেদন প্রস্তুত করে।

সড়কে ভয়াবহ চিত্র:

প্রতিবেদন অনুযায়ী, এপ্রিল মাসে দেশে ৫৬৭টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৫৮৩ জন নিহত এবং ১২০২ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে ২১৫টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ২২৯ জন, যা সড়ক দুর্ঘটনার ৩৭.৯১% ও মোট নিহতের ৩৯.২৭%।

রেল ও নৌ পথেও প্রাণহানি:

এ মাসে ৩৫টি রেল দুর্ঘটনায় ৩৫ জন নিহত ও ৫ জন আহত, এবং ৮টি নৌদুর্ঘটনায় ১০ জন নিহত ও ১ জন নিখোঁজ হন।

বিভাগভিত্তিক চিত্র:

চট্টগ্রাম বিভাগে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা: ১৩৮টি দুর্ঘটনায় ১৩৬ জন নিহত ও ৩৭৭ জন আহত।

সিলেট বিভাগে সবচেয়ে কম: ২৮টি দুর্ঘটনায় ৩১ জন নিহত ও ৫১ জন আহত।

পেশাভিত্তিক নিহতের তালিকা:

নিহতদের মধ্যে আছেন—

২ জন পুলিশ সদস্য

১ সেনা সদস্য

২ আনসার সদস্য

১ সাংবাদিক

১ চিকিৎসক

১ মুক্তিযোদ্ধা

২ প্রকৌশলী

১১৩ জন চালক

১০৭ জন পথচারী

৬৭ জন নারী

৫৫ জন শিশু

৪৫ জন শিক্ষার্থী

১৯ জন পরিবহন শ্রমিক

১৩ জন শিক্ষক

৩ জন রাজনৈতিক কর্মী

যানবাহনের ধরন:

৮৩৯টি দুর্ঘটনাগ্রস্ত যানবাহনের বিশ্লেষণে দেখা যায়—

মোটরসাইকেল: ৩০.৩৯%

ট্রাক-পিকআপ-লরি: ১৭.৬৪%

বাস: ১৩.৭১%

ব্যাটারিচালিত রিকশা/ইজিবাইক: ১৬.৬৯%

সিএনজি: ৭.৭৪%

নছিমন-করিমন-মাহিন্দ্রা-ট্রাক্টর: ৭.২৭%

প্রাইভেট কার-মাইক্রোবাস: ৬.৫৫%

দুর্ঘটনার কারণ:

৫০.৯৭% গাড়ি চাপা

২৩.৮০% মুখোমুখি সংঘর্ষ

১৮.৫১% নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে যাওয়া

৫.৯৯% বিবিধ কারণ

০.৩৫% ওড়না পেঁচিয়ে

০.৩৫% ট্রেন-যান সংঘর্ষ

রাস্তার ধরনভিত্তিক বিশ্লেষণ:

জাতীয় মহাসড়কে: ৩১.৭৪%

আঞ্চলিক মহাসড়কে: ২৯.১০%

ফিডার রোডে: ৩৩.৬৮%

ঢাকা মহানগরীতে: ৪.০৫%

চট্টগ্রাম মহানগরীতে: ১.০৫%

রেলক্রসিংয়ে: ০.৩৫%

প্রধান কারণ:

১. অবাধ মোটরসাইকেল ও ইজিবাইক চলাচল
২. রোড সাইন, রোড লাইটের অভাব
৩. টার্নিং চিহ্ন না থাকা
৪. মহাসড়কের নির্মাণ ও যানবাহনের ত্রুটি
৫. উল্টোপথে চলাচল, চাঁদাবাজি, পণ্যবাহী যানে যাত্রী
৬. অদক্ষ চালক, ফিটনেসবিহীন ও অতিরিক্ত যাত্রী বহনকারী যানবাহন

প্রতিরোধে সুপারিশ:

১. মোটরসাইকেল ও ইজিবাইক আমদানি ও রেজিস্ট্রেশন বন্ধ
২. মহাসড়কে আলোকসজ্জা
৩. দক্ষ চালক ও ডিজিটাল ফিটনেস সার্টিফিকেট
৪. দ্রুত ও ধীরগতির যানবাহনের আলাদা লেন
৫. চালকদের সুনির্দিষ্ট কর্মঘণ্টা
৬. পথচারী পারাপার ও রোড মার্কিং
৭. ডিজিটালভাবে ট্রাফিক আইন প্রয়োগ
৮. উন্নতমানের বাস সার্ভিস
৯. মানসম্মত সড়ক নির্মাণ ও রোড সেফটি অডিট
১০. মেয়াদোত্তীর্ণ ও ফিটনেসবিহীন যান স্ক্যাপ করা

উপরে