প্রকাশিত : ১৪ মে, ২০২৫ ০০:৩৩

বগুড়ায় কোরবানির পশুর চাহিদার চেয়ে ১২ হাজার বেশি প্রস্তুত

এনামুল হক, বগুড়া:
বগুড়ায় কোরবানির পশুর চাহিদার চেয়ে ১২ হাজার বেশি প্রস্তুত

আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে বগুড়া জেলায় কোরবানির পশুর চাহিদার তুলনায় প্রায় ১২ হাজারের বেশি পশু প্রস্তুত রাখা হয়েছে। দেশের অন্যতম পশু উৎপাদন কেন্দ্র হিসেবে খ্যাত বগুড়ায় এবার চাহিদার তুলনায় ১২ হাজার ৪২৭টি পশু উদ্বৃত্ত রয়েছে।

জেলার প্রাণিসম্পদ দপ্তরের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর কোরবানির জন্য ৭ লাখ ৪৬ হাজার ৮৪২টি পশু প্রস্তুত করা হয়েছে। জেলার চাহিদা ধরা হয়েছে ৭ লাখ ৯ হাজার ১০টি

পশু প্রস্তুতির পরিসংখ্যান:

গরু: ৩ লাখ ১৬ হাজার ৭৭১টি

ষাঁড়: ১ লাখ ৯৩ হাজার ৫৯৯টি

বলদ: ৪২ হাজার ৭৪৬টি

গাভী: ৮০ হাজার ৪২৬টি

মহিষ: ২ হাজার ৩০৪টি

ছাগল: ৩ লাখ ৮০ হাজার ৬৩২টি

ভেড়া: ৪৭ হাজার ১৪০টি

খামারির সংখ্যা ও উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধি

খামারির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫১ হাজার ১৪৬ জন, যা গত বছর ছিল ৪৮ হাজার ৪৫৩ জন। তবে খামারিরা বলছেন, এবার পশু লালন-পালনের ব্যয় ৩০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। ফলে ঈদের বাজারে পশুর দামে প্রভাব পড়তে পারে বলে মনে করছেন তারা।

শেরপুর উপজেলার খামারি নাসির জানান, “গত বছর যে গরু ৫০ হাজার টাকায় প্রস্তুত করেছি, এবার সেটির খরচ পড়ছে ৬৫ থেকে ৭০ হাজার টাকা। খাদ্য, ওষুধ ও শ্রমিকের মজুরি সবই বেড়েছে।”

শেরপুরের প্রস্তুতি

শুধুমাত্র শেরপুর উপজেলায়ই কোরবানির জন্য ৭৫ হাজার ১৪২টি পশু প্রস্তুত রাখা হয়েছে, যেখানে চাহিদা ৬৭ হাজার ৩৫২টি। প্রস্তুত পশুর মধ্যে রয়েছে:

ষাঁড়: ২৩ হাজার ২৩৭টি

বলদ: ৭ হাজার ৪৭৩টি

গাভী: ৪ হাজার ৩৩৯টি

ছাগল: ৩৬ হাজার ৪১২টি

ভেড়া: ৩ হাজার ৫২১টি

মহিষ: ১৬০টি

প্রশাসনের পদক্ষেপ ও নির্দেশনা

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ড. আনিছুর রহমান জানান, “রাস্তার পাশে হাট বসানো নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ঈদ সামনে রেখে জেলায় ৮৭টি স্থায়ী ও অস্থায়ী পশুর হাট নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রতিটি উপজেলায় প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাদের হাট ব্যবস্থাপনায় সক্রিয়ভাবে কাজ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।”

শেরপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা নিয়ায কাযমীর রহমান বলেন, “খামারিরা এখন অনেক বেশি সচেতন। নিয়মিত প্রশিক্ষণ, চিকিৎসা ও পরামর্শ দিয়ে আমরা সহায়তা করছি। এতে স্থানীয়ভাবে পশু উৎপাদন বেড়েছে, যা কোরবানির চাহিদা পূরণে সহায়ক হবে।”

সারসংক্ষেপ:

বগুড়ায় কোরবানির পশু উৎপাদনে এবারও নজরকাড়া সাফল্য পাওয়া গেছে। তবে উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধির কারণে বাজারে মূল্যবৃদ্ধির আশঙ্কা থাকলেও দেশীয় উৎপাদনের ওপর ভরসা রাখছেন খামারিরা। প্রশাসনের তৎপরতায় হাট ব্যবস্থাপনা নিয়ন্ত্রিত ও নিরাপদ রাখার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।

উপরে