গঙ্গাচড়ায় পাটক্ষেত থেকে ৮ বছরের শিশুর লাশ উদ্ধার, গ্রেপ্তার ১

রংপুরের গঙ্গাচড়ায় পাটক্ষেত থেকে জিসান হোসেন রাহিম (৮) নামের এক শিশুর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নির্মম এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে সোহেল রানা (২৮) নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে গঙ্গাচড়া থানা পুলিশ।
শুক্রবার (৩১ মে) সকালে উপজেলার লক্ষ্মীটারী ইউনিয়নের মহিপুর গ্রামের পুরাতন ক্যানেলের পাশে পাটক্ষেত থেকে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
নিহত শিশুর পরিচয়
জিসান হোসেন রাহিম গঙ্গাচড়া উপজেলার সদর ইউনিয়নের চেংমারী গ্রামের বেলাল হোসেন সাগর এর ছেলে। সে স্থানীয় মরহুম বীর মুক্তিযোদ্ধা সাদিকুল ইসলাম এতিমখানা ও হাফিজিয়া মাদরাসা-তে পড়াশোনা করত। বয়স মাত্র ৮ বছর।
হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা
গঙ্গাচড়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আল এমরান গণমাধ্যমকে জানান, বৃহস্পতিবার (৩০ মে) সন্ধ্যায় মাগরিবের নামাজের সময় জুতা কিনে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে সোহেল রানা শিশুটিকে মাদরাসা থেকে ডেকে নেয়। এরপর জুতা কিনে দেওয়ার পর সোহেল রানা রাহিমকে কৌশলে পার্শ্ববর্তী একটি পাটক্ষেতে নিয়ে যায়।
সেখানে সে নির্মমভাবে রাহিমকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। শুধু তাই নয়, হত্যার আগে-পরে তার দুই হাত ভেঙে ফেলা হয় এবং মুখে মাটি ঢুকিয়ে লাশ গুমের চেষ্টা করা হয়। ঘটনাটি ছিল অত্যন্ত নৃশংস এবং পূর্বপরিকল্পিত বলে পুলিশ ধারণা করছে।
লাশ উদ্ধার ও অভিযান
পরদিন সকালবেলা স্থানীয় বাসিন্দারা পাটক্ষেতে শিশুটির নিথর দেহ দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে এবং ময়নাতদন্তের জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
একইদিন সকালে জরুরি অভিযান চালিয়ে লালমনিরহাট জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার সুন্দ্রাহবি এলাকা থেকে অভিযুক্ত সোহেল রানাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আইনি প্রক্রিয়া ও তদন্ত
গঙ্গাচড়া থানার ওসি আল এমরান বলেন, “ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে সোহেল রানাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। হত্যাকাণ্ডের পেছনে অন্য কোনো উদ্দেশ্য বা ব্যক্তি জড়িত আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
তিনি আরও বলেন, “শিশু হত্যার পেছনের পূর্ণ রহস্য উদঘাটনে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে। তদন্তের স্বার্থে প্রয়োজনীয় তথ্য যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে।”