প্রকাশিত : ১ জুন, ২০২৫ ০০:১৬

ধামইরহাটে হাঁস পালনে স্বাবলম্বী নাজিমুল-সেফালী দম্পতি

উপজেলা সংবাদদাতা, ধামইরহাট, নওগাঁঃ
ধামইরহাটে হাঁস পালনে স্বাবলম্বী নাজিমুল-সেফালী দম্পতি
নওগাঁর ধামইরহাটে হাঁস পালনে স্বাবলম্বী নাজিমুল ও সেফালী দপ্ততি। ছবি- সংবাদদাতা

অভাবের তাড়নায় জীবনের কঠিন সময় পার করেছেন নওগাঁর ধামইরহাট উপজেলার দক্ষিণ ফার্শিপাড়ার কৃষক নাজিমুল ইসলাম। দুই মেয়ে সন্তান ও স্ত্রীকে নিয়ে দিনের পর দিন সংগ্রাম করেছেন। তবে ভাগ্যকে জয় করে বর্তমানে হাঁস পালনের মাধ্যমে আর্থিক স্বাবলম্বিতা অর্জন করেছেন তিনি। সফলতায় পাশে ছিলেন তার জীবনসঙ্গিনী সেফালী বেগম। এখন তাদের সংসার চলছে হাঁস খামারের উপার্জনে, আর এই গল্প স্থানীয়দের জন্য রোল মডেল হয়ে উঠেছে।

প্রায় পাঁচ বছর আগে মাত্র ২০-৩০টি হাঁস দিয়ে শুরু হয় তাদের এই খামার যাত্রা। ধামইরহাট ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি (আইএইচটি) কলেজের পাশে নিজের জমিতে তারা গড়ে তোলেন হাঁসের ছোট্ট খামার। শুরুতে নানা আর্থিক সংকট থাকলেও ধৈর্য ও পরিশ্রম ছিল তাদের মূল পুঁজি। সময়ের সঙ্গে খামারের পরিসর বাড়ে, বাড়ে আয়ও।

নাজিমুল ইসলাম জানান,

“একসময় ভাঙা ঘরে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে দুঃখ-কষ্টে জীবন যাপন করেছি। হাঁস পালন শুরু করার পর ধীরে ধীরে অভাব দূর হয়েছে। এখন আমরা নিজেদের কেনা জমিতে নতুন বাড়ি করেছি, দুই মেয়েকে বিয়ে দিয়েছি এবং সংসার স্বাচ্ছন্দ্যে চলছে।”

বর্তমানে তার খামারে রয়েছে প্রায় ২ হাজার হাঁসের বাচ্চা, যার পেছনে তিনি বিনিয়োগ করেছেন প্রায় ৭০ হাজার টাকা। তিনি আশা করছেন, তিন মাস পর এগুলো ৪ লক্ষাধিক টাকায় বিক্রি করতে পারবেন। খামারে তার স্ত্রী সেফালী বেগম সবসময় পাশে থাকেন। সেফালী বলেন,

“অনেক কষ্ট আর ধৈর্য নিয়ে এই খামার গড়ে তুলেছি। এখন দু’জন মিলে হাঁসের যত্ন নিই, যেন তারা আমাদের পরিবারেরই এক সদস্য।”

এদিকে তাদের সাফল্য দেখে আশপাশের অনেকেই হাঁস পালনে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন এবং পরামর্শ নিচ্ছেন এই দম্পতির কাছ থেকে।

ধামইরহাট উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. ওয়াজেদ আলী জানান,

“এই উপজেলায় অনেক খাল-বিল রয়েছে, যা হাঁস পালনের জন্য খুবই উপযোগী। হাঁস পালন একটি লাভজনক ও সম্ভাবনাময় খাত। আমরা প্রাণিসম্পদ দপ্তর থেকে নিয়মিত পরামর্শ ও সহযোগিতা দিয়ে থাকি।”

এই সফলতার গল্প আরও অনেককে হাঁস পালনের মাধ্যমে উদ্যোক্তা হয়ে ওঠার অনুপ্রেরণা দেবে—এমনটাই আশা স্থানীয়দের।

উপরে