প্রকাশিত : ১ জুন, ২০২৫ ০০:২৮

সিংড়ায় মসজিদ কমিটি নিয়ে সংঘর্ষে অগ্নিদগ্ধ জাকির, অবস্থা আশঙ্কাজনক

উপজেলা সংবাদদাতা, সিংড়া, নাটোরঃ
সিংড়ায় মসজিদ কমিটি নিয়ে সংঘর্ষে অগ্নিদগ্ধ জাকির, অবস্থা আশঙ্কাজনক

নাটোরের সিংড়া উপজেলার বড় আদিমপুর গ্রামে মসজিদ, মাদ্রাসা ও কবরস্থান কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে গরম তেলে অগ্নিদগ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হয়েছেন জাকির হোসেন (৪৫)। বর্তমানে তিনি বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন, এবং তার শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ২৭ মে (সোমবার) সন্ধ্যায় উপজেলার বিয়াশ মাবিয়া মোড় এলাকায় পূর্ব বিরোধের জেরে আসাদ গ্রুপের লোকজন নাহিদ গ্রুপের কর্মী জাকির হোসেনের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। পিঁয়াজু ভাজার দোকানে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় জাকিরকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে মারধরের পর তার শরীরে গরম তেল ঢেলে দেয় হামলাকারীরা। এতে তার শরীরের অধিকাংশ অংশ পুড়ে যায়।

জাকির হোসেন, বড় আদিমপুর গ্রামের মৃত ওমর আলীর ছেলে এবং তিনি নাহিদ গ্রুপের সমর্থক।
এ ঘটনায় জাকিরের ছোট ভাই আশরাফুল ইসলাম (৪০), একই গ্রামের আজিম (৪৫) এবং আব্দুল বারি (৪২) নামের আরও তিনজন আহত হন। তাদের মধ্যে আজিম প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফিরলেও জাকির ও অপর দুইজন এখনও হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।

স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, ওই গ্রামের মসজিদ, মাদ্রাসা ও কবরস্থানের বিপুল পরিমাণ অর্থ সম্পদ থাকায় আসাদ ও নাহিদ গ্রুপ দীর্ঘদিন ধরে কমিটি গঠনে বিরোধে লিপ্ত। এ বিরোধেরই জেরে সোমবারের এ রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ঘটে।

এসময় আহত আব্দুল বারির দোকানে ভাঙচুর এবং নাহিদ গ্রুপের নেতা জাকির হোসেনের ইলেকট্রনিক শো-রুমেও হামলা ও অগ্নিসংযোগের চেষ্টা করে দুর্বৃত্তরা, তবে স্থানীয়দের বাধায় হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।

ঘটনার পরদিন ২৮ মে (মঙ্গলবার) নাহিদ গ্রুপের পক্ষ থেকে সিংড়া থানায় ১৪ জনকে আসামি করে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়, যাদের মধ্যে রয়েছেন আসাদ গ্রুপের মো. আবজাল হোসেন (৪৮) ও তার ছেলে মো. শাওন। তবে এখন পর্যন্ত কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়নি, যা নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে।

বিয়াশ মাবিয়া মোড় বাজার কমিটির সভাপতি মো. বেলাল হোসেন, স্থানীয় ব্যবসায়ী রমিজুল ইসলাম এবং পল্লী চিকিৎসক মামুন হোসেন ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন,

“এটি অত্যন্ত নির্মম ও ন্যাক্কারজনক ঘটনা। আমরা দ্রুত দোষীদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।”

সিংড়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) রফিকুল ইসলাম বলেন,

“অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত চলছে। আইনানুগ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশ দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করবে—এমন প্রত্যাশায় দিন গুনছেন ভুক্তভোগী পরিবার ও এলাকাবাসী।

উপরে