প্রকাশিত : ২৮ জুন, ২০২৫ ০০:৩০

যমুনা সেতু থেকে রেললাইন অপসারণ শুরু, সড়ক প্রশস্ত হবে সাড়ে তিন মিটার

ফিরোজ আল আমিন, চলনবিল, সিরাজগঞ্জঃ
যমুনা সেতু থেকে রেললাইন অপসারণ শুরু, সড়ক প্রশস্ত হবে সাড়ে তিন মিটার
যমুনা সেতু থেকে খুলে ফেলা হচ্ছে রেললাইন। ছবি- সংবাদদাতা।

যমুনা নদীর ওপর নির্মিত যমুনা সেতুর ওপর থাকা পুরনো রেললাইন সরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু করেছে সেতু বিভাগ। ডুয়েলগেজ ডাবল লাইনের নতুন যমুনা রেলসেতু চালু হওয়ার পর সড়ক সেতুর ওপর থাকা এই পরিত্যক্ত রেললাইনটি সরিয়ে ফেলা হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) দুপুরে সেতুর টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা প্রান্ত থেকে রেললাইনের নাট-বল্টু খুলে ফেলার কাজ শুরু করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

পুরনো সেতুর রেললাইন সরিয়ে সড়ক প্রশস্তকরণ পরিকল্পনা

বাংলাদেশ রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অবকাঠামো) এবং যমুনা রেলসেতু প্রকল্পের পরিচালক আল ফাত্তাহ মো. মাসুদুর রহমান জানান,

“গত ১৮ মার্চ নতুন যমুনা রেলসেতু চালু হওয়ার পর পুরনো সড়ক সেতুর ওপর দিয়ে আর ট্রেন চলাচল করছে না। ফলে আগের রেললাইনের আর প্রয়োজনীয়তা নেই।”

সেতু বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল কবির পাভেল জানান,

“রেললাইন সরিয়ে নেওয়া হলে সেতুর ওপর সাড়ে তিন মিটার বাড়তি জায়গা পাওয়া যাবে। এটি সড়ক সেতুর সঙ্গে সংযুক্ত করে উভয় লেনকে ১.৭৫ মিটার করে প্রশস্ত করা হবে। এতে যানজট ও দুর্ভোগ অনেকটাই কমে আসবে।”

বর্তমানে প্রতিটি লেনের প্রস্থ ৬.৩ মিটার, যা আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী (৭.৩ মিটার) কম। রেললাইন সরিয়ে ফেলার পর লেনপ্রতি প্রস্থ ৮ মিটার হবে বলে জানান তিনি।

তবে প্রকৌশলী আহসানুল কবির বলেন,

“এই পরিকল্পনা প্রকল্পের আওতায় বাস্তবায়ন করতে হবে। ফলে কিছু সময় লাগবে।”

 

ইতিহাস ও পটভূমি

১৯৯৮ সালের ২৩ জুন যমুনা নদীর ওপর ৪.৮ কিমি দীর্ঘ যমুনা সেতু আনুষ্ঠানিকভাবে যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়।

এরপর রেল সংযোগের দাবিতে আন্দোলনের মুখে, তৎকালীন সরকার সড়ক সেতুর এক পাশে লোহার এঙ্গেল দিয়ে রেললাইন স্থাপন করে।

২০০৪ সালের ১৫ আগস্ট থেকে রেল চলাচল শুরু হয় সড়ক সেতুর ওপর দিয়ে।

কিন্তু দ্রুতগতির ট্রেন চলাচলের কারণে ২০০৬ সালে সেতুতে ফাটল দেখা দেয়। এরপর থেকে ট্রেনের গতি সীমাবদ্ধ করে ঘণ্টায় ২০ কিমিতে নামিয়ে আনা হয়। ফলে একটি ট্রেনকে সেতু পার হতে ২২ মিনিট সময় লাগত।

এই ধীরগতির কারণে ট্রেন জট ও সময় ক্ষয় এড়াতে ২০২০ সালে ৩শ মিটার উজানে সমান্তরাল রেলসেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।

জাইকার অর্থায়নে প্রায় ১৬ হাজার কোটি টাকায় নির্মিত হয় নতুন ডুয়েলগেজ ডাবল লাইনের রেলসেতুটি, যা ২০২৫ সালের ১৮ মার্চ থেকে চালু হয়েছে।

উপরে