সৈয়দপুরে সমন্বয়ক পরিচয়ে সাংবাদিক লাঞ্ছিত: সংবাদ সম্মেলনে নিন্দা ও বিচারের দাবি

রেলওয়ের জমিতে বহুতল ভবন নির্মাণ সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে সাংবাদিকরা লাঞ্ছনার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার প্রতিবাদ ও দোষীদের শাস্তির দাবিতে নীলফামারীর সৈয়দপুরে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে।
সোমবার (৩০ জুন) দুপুরে সৈয়দপুর প্রেসক্লাবে তিন ভুক্তভোগী সাংবাদিক—জহুরুল ইসলাম খোকন (প্রতিদিনের সংবাদ), এম এ করিম মিস্টার (মানবজমিন) এবং এম আর রাজু আহমেদ (ঘোষণা)—এই যৌথ সংবাদ সম্মেলন করেন।
ভিত্তিহীন ভিডিও ও মানহানির অভিযোগ
লিখিত বক্তব্যে সাংবাদিক জহুরুল ইসলাম খোকন জানান, “গতকাল (রোববার) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে 'এসআরএস' নামের একটি আইডি থেকে আমাদের নিয়ে একটি ভিত্তিহীন ভিডিও পোস্ট করা হয়। ভিডিওটি অনেকেই যাচাই না করেই লাইক, কমেন্ট ও শেয়ার করেছেন, যা জনমনে বিভ্রান্তি ও আমাদের পেশাগত মর্যাদায় আঘাত করেছে।”
তিনি বলেন, “শহরের নিচু কলোনি এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা রেলওয়ের জমিতে নির্মাণাধীন অবৈধ ভবন সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করতে যাই। সেখানে সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা তারিক রেলের জমিতে বহুতল ভবন নির্মাণ করছেন। সত্যতা পাওয়ার পর ছবি তোলা ও ভিডিও করার সময় এক যুবক আমাদের উদ্দেশ্যে তীব্র ভাষায় প্রশ্ন তোলে, ‘আপনারা এখানে কেন এসেছেন?’ নিজেকে ‘সমন্বয়ক’ পরিচয়ে দাবি করে সে আমাদের পেশাগত দায়িত্ব পালনে বাধা দেয় এবং উত্তেজিত আচরণ করে।”
অজ্ঞাতে ভিডিও ধারণ ও মানহানিমূলক প্রচার
সাংবাদিকরা অভিযোগ করেন, কথোপকথনের সময় গোপনে ভিডিও ধারণ করে তা সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, যেখানে তাদের “ভুয়া সাংবাদিক” বলা হয়েছে। এতে তারা চরম মানসিক ও পেশাগতভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
সমন্বয়কের বিরুদ্ধে ঘুষ ও সহায়তার অভিযোগ
সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকরা দাবি করেন, ওই যুবক স্থানীয় মইন ড্রাইভারের ছেলে সজিব, যিনি মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে “সমন্বয়ক” পরিচয় দিয়ে রেলের জমিতে নির্মাণকাজ চালাতে অবৈধভাবে সহায়তা করছেন। বিষয়টি রেল কর্তৃপক্ষকে জানানো হলে, আইডাব্লিউ অফিসের কর্মকর্তাদের সাথেও সে দুর্ব্যবহার করেছে বলে অভিযোগ করা হয়।
আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের ঘোষণা
ভুক্তভোগী তিন সাংবাদিক বলেন, “আমরা দীর্ঘদিন ধরে সাংবাদিকতা পেশায় যুক্ত থাকলেও এমন অনভিপ্রেত ঘটনার সম্মুখীন হইনি। সাম্প্রতিক সময়ে ‘নব্য ফ্যাসিস্টদের’ দৌরাত্ম্যে সংবাদকর্মীদের নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়েছে। বিষয়টি আমরা আইনি প্রক্রিয়ার আওতায় আনতে যাচ্ছি। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মানহানির অভিযোগে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছি।”
তারা অবিলম্বে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান।