প্রকাশিত : ৩ জুলাই, ২০২৫ ০১:২৬

নীলফামারীর সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার শ্রমিকদের প্রশিক্ষণ ভাতা নিয়ে বিতর্ক

নীলফামারী জেলা সংবাদদাতাঃ
নীলফামারীর সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার শ্রমিকদের প্রশিক্ষণ ভাতা নিয়ে বিতর্ক

নীলফামারীর সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার শ্রমিকদের প্রশিক্ষণ ভাতা পুরোপুরি প্রদান না করে আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে বিভাগীয় তত্ত্বাবধায়ক শাহ সুফি নুর মোহাম্মদের বিরুদ্ধে। অভিযোগ রয়েছে, শ্রমিকদের জন্য নির্ধারিত নাস্তা এবং লাঞ্চের ব্যবস্থা করা হয়নি, যদিও এবাবদ অর্থ বরাদ্দ ছিল। এর ফলে শ্রমিকদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।

প্রতি বছর শ্রমিকদের দক্ষতা উন্নয়ন এবং নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে ‘ইন হাউজ ট্রেনিং’ কর্মসূচি পরিচালনা করা হয়। এবছরও ২০ লাখ টাকার বরাদ্দ দেয়া হয় এই প্রশিক্ষণের জন্য, যা ২৮টি সপের ৬৫০ জন স্থায়ী শ্রমিকের মাঝে বিতরণ করার কথা ছিল। তবে, এবছর প্রশিক্ষণের জন্য মাত্র ৫০০ টাকা সম্মানী প্রদান করা হলেও নাস্তা ও লাঞ্চের ব্যবস্থা করা হয়নি। সাধারণত, নাস্তা ও লাঞ্চের জন্য জনপ্রতি ৮০ টাকা বরাদ্দ থাকে, তবে এবছর তা প্রদান করা হয়নি।

শ্রমিকদের ক্ষোভ
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শ্রমিক জানিয়েছেন, "প্রতি বছরই প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠানে ভাতা, নাস্তা এবং খাবারের জন্য ১,০৮০ টাকা বরাদ্দ থাকত, কিন্তু এবছর তা ৫০০ টাকা এবং মাত্র ৮০ টাকা নাস্তা দেয়া হয়েছে। এটা খুবই অস্বাভাবিক এবং শ্রমিকদের মধ্যে ব্যাপক অসন্তোষ সৃষ্টি করেছে।"

কর্মবিরতি ও ভুড়িভোজের সিদ্ধান্ত
শ্রমিকরা একদিনের কর্মবিরতির সিদ্ধান্ত নেন, যার পরিপ্রেক্ষিতে ট্রেড ইউনিয়ন নেতাদের ডেকে ৩ লাখ ২৫ হাজার টাকার ভুড়িভোজের ব্যবস্থা করা হয়। এই অর্থ দিয়ে একদিনের ভুড়িভোজ আয়োজন করা হয়, যা নিয়ে আবারও বিতর্ক সৃষ্টি হয়। ট্রেড ইউনিয়নের এক নেতা জানান, "এই টাকা যেহেতু প্রশিক্ষণ বাবদ বরাদ্দ ছিল, সেহেতু তা শ্রমিকদের মধ্যেই বন্টন করা উচিত ছিল। সবাইকে একসাথে খাওয়ার ব্যবস্থা করা তার এখতিয়ার নয়।"

বিভাগীয় তত্ত্বাবধায়কের বক্তব্য
বিভাগীয় তত্ত্বাবধায়ক শাহ সুফি নুর মোহাম্মদ এ বিষয়ে বলেন, "২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরের জন্য ২০ লাখ টাকা বরাদ্দ হয়েছে। এর মধ্যে ১০ লাখ টাকা আগেই খরচ হয়ে গেছে। বাকি ১০ লাখ টাকা থেকে সাড়ে ৬০০ শ্রমিককে ৫০০ টাকা করে দেয়া হয়েছে। খাবারের জন্য ৫৮০ টাকা জমা রয়েছে, যা আমরা সবাই মিলিয়ে একদিনের ভুড়িভোজে খরচ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।"

তিনি আরও বলেন, "এটা প্রশিক্ষণের কার্যবিধির মধ্যে পড়ে কিনা, তা আমি জানি না। তবে, এবছর আমি নতুন একটি রীতি চালু করতে চাই, যাতে সবাই একসাথে খেতে পারে এবং মতবিনিময় করতে পারে। এর জন্য ট্রেড ইউনিয়ন নেতাদের সাথে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, এবং ভবিষ্যতেও এটি চালু থাকবে।"

বিতর্কের মধ্যে সম্মানী ও খাবারের বিতরণ
যদিও বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে এই ভুড়িভোজ আয়োজন করা হবে, কিন্তু প্রশিক্ষণের জন্য বরাদ্দ অর্থ কীভাবে খরচ করা হবে এবং শ্রমিকদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা না করায় সবার মধ্যে হতাশা দেখা দিয়েছে। শ্রমিকদের অনেকেই মনে করছেন, যদি খাবার এবং সম্মানী যথাযথভাবে দেয়া হতো, তবে পরিস্থিতি এমন হত না।

উপরে