প্রকাশিত : ৩ জুলাই, ২০২৫ ০১:৪১

মহাস্থান হাটে জমে উঠেছে কাঁঠালের বেচাকেনা, যাচ্ছে দেশের নানা অঞ্চলে

উপজেলা সংবাদদাতা, শিবগঞ্জ, বগুড়াঃ
মহাস্থান হাটে জমে উঠেছে কাঁঠালের বেচাকেনা, যাচ্ছে দেশের নানা অঞ্চলে
জমে উঠেছে ঐতিহাসিক মহাস্থান হাটে কাঁঠাল বেচাকেনা,যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন স্থানে। ছবি- সংবাদদাতা

বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার ঐতিহাসিক মহাস্থান হাটে কাঁঠালের বেচাকেনা এখন তুঙ্গে। প্রতি বছরের মতো, জ্যৈষ্ঠ মাস শেষে আষাঢ় মাসে জাতীয় ফল কাঁঠালের বাজারে এখন জমজমাট অবস্থা। সারা দেশে বিভিন্ন অঞ্চল থেকে কাঁঠাল সরবরাহ হলেও মহাস্থান হাট দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কাঁঠাল বাজার হিসেবে পরিচিত।

এ হাটে কাঁঠাল আসছে বগুড়া, জয়পুরহাট, গাইবান্ধা ও রংপুরসহ অন্যান্য জেলার ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে। তবে এবার কাঁঠালের আমদানি বেশিরভাগই স্বাভাবিক দামে বিক্রি হচ্ছে, ব্যবসায়ীরা এমনটাই জানিয়েছেন।

আগে মহাস্থান হাট থেকে প্রতিদিন ১২ থেকে ১৫ ট্রাক কাঁঠাল দক্ষিণের বিভিন্ন জেলায় রপ্তানি করা হতো, তবে এবার আমদানি কিছুটা কম বলে জানাচ্ছেন তারা। তবুও, আশানুরূপভাবে প্রতিদিন কাঁঠালের আমদানি অব্যাহত রয়েছে।

পাইকারদের ভিড়

মহাস্থান হাটের সরেজমিনে পরিদর্শন করতে গিয়ে দেখা যায়, বিকাল নাগাদ হাটে পাইকাররা ভিড় জমিয়ে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কাঁঠাল কেনাবেচা করছেন। শিবগঞ্জ উপজেলা ও আশেপাশের অঞ্চল থেকে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা ভ্যানে করে কাঁঠাল এনে সেখান থেকে আড়ৎদাররা কাঁঠাল কিনে, কমিশনে সারা দেশে সরবরাহ করছেন।

এ বছর প্রতিদিন ৮ থেকে ১০ ট্রাক কাঁঠাল দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

কাঁঠালের দাম ও বিক্রির পরিস্থিতি

বগুড়ার গাবতলী উপজেলার উজগ্রাম থেকে এনামুল হক, ৩২টি কাঁঠাল নিয়ে অটোভ্যানযোগে মহাস্থান হাটে বিক্রি করতে এসেছেন। তার কাঁঠালের দাম হাকানো হয়েছে ২৫৬০ টাকা।

শিবগঞ্জ উপজেলার অনন্তবালা গ্রামের ব্যবসায়ী মমিন মিয়া বলেন, “মহাস্থান হাটে কাঁঠালের ব্যবসা চলে তিন মাস। এই সময়েই কাঁঠালের সবচেয়ে ভালো দাম পাওয়া যায়।”

এছাড়াও, পীরগাছার ব্যবসায়ী আরিফুল জানান, “প্রতি কাঁঠাল ৪০-৫০ টাকা কিনে ৭০ টাকায় বিক্রি করি। কাঁঠালের আকার বড় হলে কিছুটা দাম বাড়ে।”

দেশের নানা প্রান্তে কাঁঠাল যাচ্ছে

মহাস্থান হাটের কাঁঠাল দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যাচ্ছে। সিলেট, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, লাকসাম, নোয়াখালী এবং সাতক্ষীরা সহ দেশের একাধিক অঞ্চলে কাঁঠাল রপ্তানি হচ্ছে।

সিলেট থেকে আসা পাইকাররা জানান, তাদের অঞ্চলে প্রচুর পরিমাণে কাঁঠাল উৎপাদিত হয়, তাই তারা মহাস্থান হাট থেকে ট্রাক ভর্তি কাঁঠাল কিনে নিয়ে যান।

আড়ৎ ব্যবসায়ীদের লাভবান হওয়ার কথা

মহাস্থান হাটের ভাই ভাই আড়ৎ এর স্বত্বাধিকারী আব্দুস সবুজ মিয়া বলেন, “প্রতি কাঁঠালে ৩ টাকা কমিশন পাই আমরা। মহাস্থান হাট থেকে বেপারীরা কাঁঠাল কিনে ট্রাক লোড করে তাদের মোকামে নিয়ে যায়। এখান থেকে তারা কাঁঠাল দ্বিগুণ দামে বিক্রি করে।”

তিনি আরও জানান, মহাস্থান হাটের কাঁঠাল বাজারের কারণে আড়ৎ ব্যবসায়ী, লেবার শ্রমিক, অটোভ্যান চালক এবং স্থানীয় ব্যবসায়ীরা লাভবান হচ্ছেন।

কৃষি কর্মকর্তা মন্তব্য

শিবগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল হান্নান বলেন, “বগুড়া জেলার শস্য ভান্ডার হিসেবে পরিচিত শিবগঞ্জ উপজেলা। এখানে কাঁঠালসহ সব মৌসুমি ফলের উৎপাদন ভালো হয়। এছাড়াও, বিভিন্ন জেলা থেকে পাইকাররা কাঁঠাল কিনতে আসেন।”

উপরে