শেরপুরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে ১০ প্রতিষ্ঠানকে ৯২ হাজার টাকা জরিমানা

বগুড়ার শেরপুর উপজেলায় জনস্বাস্থ্য ও ভোক্তা অধিকার রক্ষায় পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে ১০টি প্রতিষ্ঠানকে মোট ৯২ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। মঙ্গলবার (৮ জুলাই) সন্ধ্যা সাড়ে ৫টা থেকে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় এই অভিযান পরিচালিত হয়।
অভিযানে ফার্মেসি ও ডেইরি পণ্যের দোকানগুলোর বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও আইন লঙ্ঘনের প্রমাণ পাওয়া যায়। এর মধ্যে পাঁচটি ফার্মেসিকে ৪৫ হাজার ৫০০ টাকা এবং পাঁচটি দই ও ডেইরি প্রতিষ্ঠানকে ৪৭ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
ফার্মেসিগুলোতে ঔষধ আইনের নানা অনিয়ম
ঔষধ ও প্রসাধনী আইন, ২০২৩ অনুযায়ী, পাঁচটি ফার্মেসিতে ফিজিশিয়ান স্যাম্পল বিক্রি, মেয়াদোত্তীর্ণ ড্রাগ লাইসেন্স, অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্টার ছাড়া বিক্রি এবং ওভার দ্য কাউন্টার (OTC) ঔষধ বিক্রির মতো অপরাধ প্রমাণিত হয়।
জরিমানাপ্রাপ্ত ফার্মেসিগুলো হলো:
রিফা মেডিসিন কর্নার: ৬,৫০০ টাকা
সিটি ফার্মেসি: ৮,০০০ টাকা
মেসার্স হক ফার্মেসি: ৩,০০০ টাকা
মা মেডিকেল হল (মির্জাপুর বাজার): ১০,০০০ টাকা
মেসার্স মীম ফার্মেসি: ১৫,০০০ টাকা
ডেইরি পণ্যে বিএসটিআই আইন লঙ্ঘন
বাংলাদেশ মান সংস্থা (বিএসটিআই) আইন, ২০১৮ অনুযায়ী, পাঁচটি দই ও ডেইরি প্রতিষ্ঠানে মোড়কজাত পণ্যে ওজন, পরিমাণ, প্রস্তুতকারকের নাম, উৎপাদন ও মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ উল্লেখ না করা এবং মেয়াদোত্তীর্ণ ঘি বিক্রির মতো গুরুতর অপরাধ ধরা পড়ে।
জরিমানাপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানগুলো হলো:
সাউদিয়া ডেইরি অ্যান্ড ফুড প্রোডাক্টস: ২৫,০০০ টাকা
আব্দুল্লাহ দই ও মিষ্টান্ন ভান্ডার: ১০,০০০ টাকা
প্রান্ত দধি অ্যান্ড মিষ্টান্ন ভান্ডার: ১০,০০০ টাকা
মুসলিমা দই ঘর প্লাস: ৫,০০০ টাকা
জয় দধি ভান্ডার: ১০,০০০ টাকা
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ভূমিকা
ফার্মেসি সংক্রান্ত মামলায় প্রসিকিউটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর বগুড়ার সহকারী পরিচালক মরুময় সরকার। বিএসটিআই আইনের আওতায় দায়ের করা মামলায় প্রসিকিউটর ছিলেন বিএসটিআই ফিল্ড অফিসার শাহানুর হোসেন খান। এছাড়া ওজন ও পরিমাপ সংক্রান্ত মামলায় প্রসিকিউটর ছিলেন পরিদর্শক (মেট্রোলজি) শাহ আলম পলাশ খান।
প্রশাসনের বক্তব্য
শেরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ আশিক খান জানান, “জনস্বাস্থ্য ও ভোক্তা অধিকার রক্ষায় এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে। আইন ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
তিনি আরও বলেন, “এই অভিযান স্থানীয় জনগণের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করবে এবং অস্বাস্থ্যকর ও অনিয়ন্ত্রিত ব্যবসার বিরুদ্ধে একটি স্পষ্ট বার্তা দেবে।”