উল্লাপাড়ার এলংজানি মাদ্রাসায় টানা দুই বছর শূন্য পাস, অভিভাবক ও এলাকাবাসীর মধ্যে তীব্র ক্ষোভ

সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার এলংজানি দাখিল মাদ্রাসা পরপর দুই বছর ধরে দাখিল পরীক্ষায় একজন শিক্ষার্থীও পাস করতে পারেনি, যা নিয়ে অভিভাবক ও এলাকাবাসীর মধ্যে তীব্র ক্ষোভ এবং হতাশা বিরাজ করছে।
জানা গেছে, ২০২৪ সালে ১২ জন এবং ২০২৫ সালে ১৪ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিলেও কেউই উত্তীর্ণ হতে পারেনি। টানা দুবার শূন্য পাসের এই ঘটনা এলাকায় আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।
অভিযোগ: দুর্বল পাঠদান ও প্রশাসনিক গাফিলতি
শিক্ষার্থীদের দুর্বলতা ছাড়াও শিক্ষকদের অবহেলা, ক্লাস ফাঁকি এবং প্রশাসনিক গাফিলতিকেই এই ব্যর্থতার প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত করছেন অভিভাবক ও স্থানীয়রা।
এলাকার বাসিন্দা আল আমিন হোসেন বলেন, “এখানে শিক্ষার মান নিয়ে কেউ চিন্তিত না। সবাই নিয়োগ বাণিজ্য আর ব্যক্তিগত লাভের পেছনে ছুটছে। বর্তমান সুপার লাখ লাখ টাকা ঘুষ নিয়ে শিক্ষক নিয়োগ দিয়েছেন। শিক্ষকরা নিয়মিত ক্লাস না করে নিজেদের কাজেই ব্যস্ত থাকেন।”
এক অভিভাবক শহিদুল ইসলাম বলেন, “দুই বছর কেউ পাস না করায় এটা স্পষ্ট যে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ ব্যর্থ। শুধু শিক্ষার্থীদের নয়, শিক্ষকদেরও জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে। আমাদের সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিয়ে আমরা শঙ্কিত।”
মাদ্রাসা সুপারের ভাষ্য
মাদ্রাসার সুপার মো. শাহাদত হোসেন বলেন, “এটি প্রত্যন্ত অঞ্চলের মাদ্রাসা। শিক্ষার্থীরা নিয়মিত আসেন না, পাঠদানে আগ্রহও কম। কিছু সমস্যার কারণে ফলাফল খারাপ হয়েছে, তবে ভবিষ্যতে পরিস্থিতি উন্নয়নের চেষ্টা করছি।”
প্রশাসনের প্রতিক্রিয়া
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু সালেহ মোহাম্মদ হাসনাত বলেন, “ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। বিষয়টি মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে। দ্রুত তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
সমালোচনা ও প্রত্যাশা
স্থানীয়দের মতে, দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা ও দায়িত্বহীনতার কারণে শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ অন্ধকারে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। এলাকাবাসী দ্রুত এই মাদ্রাসায় শিক্ষকের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা, দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ ও মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন।