প্রকাশিত : ১১ জুলাই, ২০২৫ ১৪:৪৩

পাবনায় যৌতুক নির্যাতনের মামলায় লিগ্যাল এইডের মধ্যস্থতায় ৪ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ পেলেন সোনিয়া

পাবনা জেলা সংবাদদাতাঃ
পাবনায় যৌতুক নির্যাতনের মামলায় লিগ্যাল এইডের মধ্যস্থতায় ৪ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ পেলেন সোনিয়া

যৌতুকের দাবিতে নির্যাতনের শিকার হয়ে আইনের দ্বারস্থ হওয়া পাবনার ভাঙ্গুড়ার এক অসহায় নারী শেষ পর্যন্ত বিচার পেয়েছেন। জেলা লিগ্যাল এইড অফিসের মধ্যস্থতায় ৪ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন সোনিয়া খাতুন নামে এক নির্যাতিত নারী। বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) এই রায় কার্যকর হয়।

জেলা লিগ্যাল এইড কর্মকর্তা ও সিনিয়র সহকারী জজ আজহারুল ইসলাম সোনিয়ার হাতে ক্ষতিপূরণের অর্থ তুলে দেন। এই নিষ্পত্তির মাধ্যমে অভিযুক্ত স্বামী সুলাইমান হোসেন মামলার দায় থেকে মুক্তি পান। উভয়পক্ষই নিষ্পত্তির সিদ্ধান্তে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

বিয়ের পর থেকেই শুরু হয় নির্যাতন

জানা যায়, ২০২৩ সালের ৭ মার্চ পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার গোপীনাথপুর গ্রামের আবু দাউদের ছেলে সুলাইমান হোসেনের সঙ্গে বিয়ে হয় ভাঙ্গুড়া উপজেলার পাড়ভাঙ্গুড়া গ্রামের সোহরাব আলীর মেয়ে সোনিয়া খাতুনের। কাবিন ধরা হয় ৩ লাখ টাকা।

বিয়ের পর সুলাইমান চাকরি স্থায়ী করার অজুহাতে শ্বশুরবাড়ি থেকে ৫ লাখ টাকা ধার নেন। কিন্তু চাকরি স্থায়ী না হওয়ায় কিছুদিন পর স্ত্রী সোনিয়ার কাছে ফের আরও ৫ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। টাকা দিতে না পারায় সোনিয়ার ওপর চলে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন। একপর্যায়ে সোনিয়াকে বাবার বাড়ি রেখে তালাকনামা পাঠিয়ে দেন সুলাইমান।

লিগ্যাল অ্যাকশনে প্রতিকার

এ ঘটনায় নিরুপায় হয়ে সোনিয়ার পরিবার চলতি বছর পাবনার আমলী আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন। মামলা চলাকালে অভিযুক্ত সুলাইমান বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য জেলা লিগ্যাল এইড অফিসে আবেদন করেন। এরপর লিগ্যাল এইড অফিস উভয়পক্ষকে সমন পাঠায় এবং ১০ জুলাই উপস্থিতিতে বৈঠকের আয়োজন করা হয়।

জেলা লিগ্যাল এইড কর্মকর্তা আজহারুল ইসলাম দুই পক্ষের শুনানির পর ৪ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণের শর্তে মামলার নিষ্পত্তি ঘোষণা করেন। সুলাইমান হোসেন সেদিনই নগদ অর্থ সোনিয়া খাতুনকে প্রদান করেন।

সন্তোষ প্রকাশ ও মানবাধিকার সংগঠনের অভিনন্দন

ক্ষতিপূরণের টাকা পেয়ে সোনিয়া ও তার পরিবার সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং লিগ্যাল এইড অফিসের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। অন্যদিকে অভিযুক্ত সুলাইমানও মামলার নিষ্পত্তিতে স্বস্তি প্রকাশ করেন।

এই ঘটনার পর জেলা হিউম্যান রাইটস ডিফেন্ডার নেটওয়ার্ক এবং মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের ‘ইম্পাওয়ারহার’ প্রকল্পের পক্ষ থেকে লিগ্যাল এইড কর্মকর্তা আজহারুল ইসলামকে অভিনন্দন জানানো হয়।

উপরে