প্রকাশিত : ১১ জুলাই, ২০২৫ ২৩:৫১

ঠাকুরগাঁওয়ে এসএসসি পরীক্ষায় ফেল: একজনের আত্মহত্যা, অপরজন হাসপাতালে

ঠাকুরগাঁও সংবাদদাতাঃ
ঠাকুরগাঁওয়ে এসএসসি পরীক্ষায় ফেল: একজনের আত্মহত্যা, অপরজন হাসপাতালে

এসএসসি পরীক্ষায় ফেল করায় ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় পৃথক দুটি আত্মহত্যার চেষ্টার ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে মিতু আক্তার রেশি (১৬) নামে এক ছাত্রী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। অপর ছাত্রী আরমিনা আক্তার (১৬) বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। বর্তমানে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

গত বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) দুপুর আড়াইটা থেকে বিকেল ৪টার মধ্যে উপজেলার চাড়োল ও দুওসুও ইউনিয়নে এই হৃদয়বিদারক ঘটনাগুলো ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বালিয়াডাঙ্গী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা।

নিহত মিতু আক্তার রেশি বালিয়াডাঙ্গী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি চাড়োল ইউনিয়নের দোগাছি ক্ষিরাপুকুর গ্রামের রুহুল আমিনের মেয়ে। চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগ থেকে অংশ নিয়ে গণিত, উচ্চতর গণিত ও রসায়ন বিষয়ে অকৃতকার্য হন তিনি।

ফল প্রকাশের সময় মিতু বাড়িতে একা ছিলেন। মোবাইলে ফলাফল দেখার পর হতাশ হয়ে শয়নঘরে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন। ছোট ভাই দরজা বন্ধ দেখে বাবা-মাকে খবর দেন। পরে দরজা ভেঙে তাকে উদ্ধার করে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

মিতুর বাবা রুহুল আমিন বলেন, “ফল প্রকাশের আগের দিনও মেয়েকে সাহস দিয়েছিলাম। সে নিজেই বলেছিল— ‘কোনো সমস্যা নেই বাবা।’ কিন্তু এমন কিছু করবে, কল্পনাও করিনি।”

মিতুর মৃত্যুর খবরে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

অন্যদিকে, দুওসুও ইউনিয়নের সনগাঁও কুয়াটল গ্রামের আনছারুল হকের মেয়ে আরমিনা আক্তার বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ে ফেল করায় মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে। মায়ের বকুনিতে ক্ষোভে ঘরে রাখা কীটনাশক পান করে সে। কিছুক্ষণ পর তার বমি শুরু হলে পরিবারের সদস্যরা তা বুঝতে পেরে দ্রুত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।

বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক ডা. আহাদুজ্জামান বলেন, “মিতু হাসপাতালে আনার আগেই মারা গিয়েছিল। আরমিনাকে আমরা দ্রুত ওয়াশ করে বিষমুক্ত করেছি। সে বর্তমানে পর্যবেক্ষণে রয়েছে।”

বালিয়াডাঙ্গী থানার অফিসার ইনচার্জ জানান, “দুইটি ঘটনাই অত্যন্ত মর্মান্তিক। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে এবং প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।”

উপরে