প্রকাশিত : ১২ জুলাই, ২০২৫ ০০:০১

পটুয়াখালির কলাপাড়ায় টানা বৃষ্টির পর ১৫ দিন পর দেখা মিললো সূর্যের, জলাবদ্ধতায় কৃষিতে ব্যাপক ক্ষতি

এ এম মিজানুর রহমান বুলেট, কলাপাড়া, পটুয়াখালী
পটুয়াখালির কলাপাড়ায় টানা বৃষ্টির পর ১৫ দিন পর দেখা মিললো সূর্যের, জলাবদ্ধতায় কৃষিতে ব্যাপক ক্ষতি

পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় টানা দুই সপ্তাহের ভারী বৃষ্টিপাত শেষে শুক্রবার (১২ জুলাই) সকালে দেখা মিলেছে সূর্যের। দীর্ঘদিন পর সূর্যের আলো দেখে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে এলাকাবাসীর মধ্যে। তবে এ দুই সপ্তাহের লাগাতার বৃষ্টিতে উপজেলার শত শত গ্রাম পানিতে প্লাবিত হয়েছে, সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা। এতে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে কৃষি ও মাছচাষ।

জানা গেছে, বর্ষাকালীন সবজি যেমন শসা, চিচিঙ্গা, ঢেঁড়শ, করলা, কাঁচা মরিচসহ নানা ফসল পানির নিচে তলিয়ে গেছে এবং ক্ষেত পঁচে নষ্ট হয়ে গেছে। জলাবদ্ধতার কারণে রোপা আমন চাষাবাদও ব্যাহত হচ্ছে। পাশাপাশি ভেসে গেছে বহু চাষি ও ঘের মালিকের কোটি টাকার মাছ।

নানাজন অভিযোগ করেছেন, উপজেলার বিভিন্ন খালে স্থানীয় প্রভাবশালী মহল বাঁধ দিয়ে মাছ শিকার করছে, যার ফলে স্বাভাবিক পানি নিষ্কাশন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। তারা বলছেন, এসব বাঁধ অপসারণ না হলে জলাবদ্ধতা আরও দীর্ঘস্থায়ী হবে এবং কৃষিক্ষেত্রে ভয়াবহ ক্ষতি ডেকে আনবে।

সবজির বাজারে আগুন:
কৃষি উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় বাজারে সবজির সরবরাহ কমে গেছে। ফলে বেড়েছে সবজির দাম। কাঁচা মরিচ যেখানে আগে ৬০-১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছিল, এখন তা ৩০০ টাকা ছাড়িয়েছে। অন্যান্য সবজির দামও ১০-২০ টাকা কেজি হারে বেড়েছে।

কলাপাড়ার কুমিরমারা গ্রামের কৃষক মো. সুলতান জানান, অতিরিক্ত বৃষ্টিতে তার অধিকাংশ সবজির ক্ষেতই পানিতে তলিয়ে গেছে। পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় এ ক্ষতির মুখে পড়েছেন তিনি।

চাকামইয়া ইউনিয়নের চুঙ্গাপাশা গ্রামের কৃষক মো. খলিলুর রহমান জানান, “অবিরাম বৃষ্টির কারণে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে। আবার বিভিন্ন খালে বাঁধ থাকার কারণে পানি নেমে যেতে পারছে না। প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপ ছাড়া এই সমস্যা থেকে পরিত্রাণ সম্ভব নয়।”

প্রশাসনের আশ্বাস:
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রবিউল ইসলাম বলেন, “কৃষকদের স্বার্থে কিছু খালের বাঁধ ইতোমধ্যেই অপসারণ করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে অন্যান্য বাঁধও কেটে জলাবদ্ধতা নিরসনের উদ্যোগ নেওয়া হবে।”

স্থানীয়রা দ্রুত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা নিশ্চিত ও প্রভাবশালীদের বাঁধ অপসারণে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।


প্রয়োজনে আপনি প্রতিবেদনের সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্তদের ছবি বা মন্তব্য যুক্ত করতে পারেন পাঠকদের মনোযোগ আরও বাড়াতে।

উপরে