প্রকাশিত : ২০ আগস্ট, ২০২৫ ০১:৩৮

কাজিপুরে এতিমখানা বন্ধ ৪ বছর, তবুও তুলেছে ১৩ লাখ টাকা বরাদ্দ

চলনবিল সংবাদদাতা:
কাজিপুরে এতিমখানা বন্ধ ৪ বছর, তবুও তুলেছে ১৩ লাখ টাকা বরাদ্দ

সিরাজগঞ্জের কাজিপুরে ‘মোহাম্মদ আলী শিশুসদন’ নামে একটি এতিমখানা চার বছর ধরে বন্ধ থাকলেও নিয়মিত সরকারি বরাদ্দের টাকা উত্তোলন করে আসছে প্রতিষ্ঠানটির কমিটি। ভুয়া এতিম শিশু দেখানো ও ভুয়া বিল-ভাউচার দাখিলের মাধ্যমে ওই টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে।

উপজেলার মাইজবাড়ী ইউনিয়নের চকপাড়া দারুল উলুম হাফিজিয়া কওমি মাদ্রাসার পাশে অবস্থিত এতিমখানাটি ২০২১ সাল থেকেই কার্যত পরিত্যক্ত। সম্প্রতি সেখানে গিয়ে দেখা যায়, দরজায় ঝুলছে তালা, বারান্দায় খড় ও লাকড়ির গাদা, আর ভেতরে ঝোলানো একটি ব্যানার ছাড়া এতিমখানার কোনো অস্তিত্ব নেই।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, চার-পাঁচ বছর ধরে এখানে কোনো এতিম বা শিক্ষককে দেখা যায়নি। তবে বরাদ্দের টাকা উত্তোলন করেছেন কমিটির সভাপতি জহুরুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আব্দুল খালেক। উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০২২-২৩, ২০২৩-২৪ ও ২০২৪-২৫ অর্থবছরে এতিমখানার নামে মোট ১৩ লাখ ২০ হাজার টাকা উত্তোলন করা হয়েছে।

এ বিষয়ে সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আব্দুল খালেক স্বীকার করে বলেন, “২০২১ সালের পরে আসলে এতিম নেই। তবে কাগজপত্র জমা দিয়েছি, তদন্ত চলছে।” সভাপতি জহুরুল ইসলামও বরাদ্দ তোলার বিষয়টি অস্বীকার না করে বলেন, “আমাকে সময় দেন, এতিম নিয়ে আসব।”

তদন্তে গঠিত কমিটির প্রধান উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা ফয়সাল আহমেদ বলেন, “আমরা পরিদর্শনে গিয়ে কোনো এতিম পাইনি। পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে এতিমখানাটি। তদন্ত প্রতিবেদনে প্রকৃত তথ্যই তুলে ধরা হবে।”

উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা সোহেল রানা বলেন, “আমরা নিয়মিত পরিদর্শন করতে পারিনি। তদন্তে যদি আমার গাফিলতি ধরা পড়ে, তবে আমাকেও শাস্তি ভোগ করতে হবে।”

এ ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তারা বলছেন, এতিমখানার নামে টাকা তোলা হলেও এতিমদের কোনো সেবা দেওয়া হয়নি।

উপরে