প্রকাশিত : ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ০২:২৪
আগস্টে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৪২৮, আহত ৭৯১
এনামুল হক, শেরপুর, বগুড়াঃ

গত আগস্ট মাসে সারা দেশে ৪৫১টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪২৮ জন নিহত এবং ৭৯১ জন আহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে নারী ৬৮ জন এবং শিশু ৩৪ জন। রোড সেফটি ফাউন্ডেশন সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, আগস্টে মোট ১৪৪টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১৩২ জন নিহত হয়েছেন, যা মোট নিহতের ৩০.৮৪ শতাংশ। একই সময়ে ৮৩ জন পথচারী (১৯.৩৯%) এবং ৫২ জন চালক ও সহকারী (১২.১৪%) প্রাণ হারান।
শুধু সড়ক দুর্ঘটনাই নয়, আগস্টে ১৯টি নৌ-দুর্ঘটনায় ২৩ জন নিহত, ১৭ জন আহত ও ৯ জন নিখোঁজ রয়েছেন। পাশাপাশি ৩৭টি রেল দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ৩১ জন এবং আহত হয়েছেন ১১ জন।
সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতদের মধ্যে মোটরসাইকেল চালক ও আরোহী ১৩২ জন (৩০.৮৪%), থ্রি-হুইলার যাত্রী ৯৭ জন (২২.৬৬%), স্থানীয়ভাবে তৈরি যানবাহনের যাত্রী ৩৩ জন (৭.৭১%), বাসযাত্রী ৩০ জন (৭%), ট্রাক-কাভার্ডভ্যান-পিকআপ-ট্রলি-লরির আরোহী ২৭ জন (৬.৩০%), প্রাইভেটকার-মাইক্রোবাস-অ্যাম্বুলেন্স আরোহী ২১ জন (৪.৯০%) এবং বাইসাইকেল আরোহী ৫ জন (১.১৬%)।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের বিশ্লেষণ বলছে, দুর্ঘটনার ৪৭.৪৫% জাতীয় মহাসড়কে, ২৯.৯৩% আঞ্চলিক সড়কে, ১৩.৩০% শহরের সড়কে এবং ৯.৩১% গ্রামীণ সড়কে ঘটেছে। দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ২০৭টি (৪৫.৮৯%) নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে, ৯০টি (১৯.৯৫%) মুখোমুখি সংঘর্ষ, ৮৫টি (১৮.৮৪%) পথচারীকে ধাক্কা দেয়া এবং ৬২টি (১৩.৭৪%) পেছন থেকে আঘাতের কারণে ঘটে।
ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি ১১৯টি দুর্ঘটনায় ১১৭ জন নিহত হয়েছেন। সবচেয়ে কম দুর্ঘটনা ঘটেছে বরিশাল বিভাগে, যেখানে ১৮টি দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ১৬ জন। রাজধানী ঢাকায় ৩৭টি দুর্ঘটনায় ১৫ জন নিহত এবং ৪৬ জন আহত হয়েছেন।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, নিহতদের মধ্যে পুলিশ, সেনা ও ফায়ার সার্ভিস সদস্য রয়েছেন ১ জন করে। এছাড়া শিক্ষক ৯ জন, সাংবাদিক ৩ জন, ব্যাংক-বীমা কর্মকর্তা ৫ জন, ব্যবসায়ী ১৬ জন, বিক্রয় প্রতিনিধি ১১ জন, মৎস্যজীবী ৪ জন, পোশাক শ্রমিক ৩ জন, নির্মাণ শ্রমিক ৪ জন, শিক্ষার্থী ৫৭ জনসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ রয়েছেন।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশন জানিয়েছে, সড়ক দুর্ঘটনার প্রধান কারণ হলো—ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন, বেপরোয়া গতি, চালকের অদক্ষতা, মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন চলাচল, ট্রাফিক আইন না মানা, দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা এবং গণপরিবহন খাতে চাঁদাবাজি।
সংস্থাটি দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ, চালকদের বেতন-কর্মঘন্টা নির্ধারণ, বিআরটিএর সক্ষমতা বৃদ্ধি, মহাসড়কে সার্ভিস রোড নির্মাণ, গণপরিবহনে চাঁদাবাজি বন্ধ, রেল ও নৌ-পথ সংস্কার এবং সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ বাস্তবায়নের ওপর জোর দিয়েছে।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমান স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, অধিকাংশ দুর্ঘটনা অতিরিক্ত গতির কারণে ঘটে। এ অবস্থায় প্রযুক্তিনির্ভর নজরদারি ও চালকদের মানসিক-শারীরিক সুস্থতা নিশ্চিত করা জরুরি।