প্রকাশিত : ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ০০:৫৮

রংপুরে সাংবাদিক অপহরণ-বিরোধী গণআন্দোলন ও তিন দিনের আল্টিমেটাম

জালাল উদ্দিন,রংপুরঃ
রংপুরে সাংবাদিক অপহরণ-বিরোধী গণআন্দোলন ও তিন দিনের আল্টিমেটাম

রংপুরের সিনিয়র সাংবাদিক লিয়াকত আলী বাদলকে অপহরণ করে নির্যাতন, ক্ষমা চাইতে বাধ্য করার চেষ্টা এবং মিথ্যা মামলা রচনার অভিযোগে আসামীদের গ্রেফতারের দাবিতে মহানগর পুলিশ কমিশনার কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচি পালন করেছেন গণমাধ্যমকর্মীরা। তারা আগামী তিন দিনের মধ্যে আসামিদের গ্রেফতারের আল্টিমেটাম দিয়েছেন।

২৪ সেপ্টেম্বর বুধবার সম্মিলিত সাংবাদিক সমাজের ব্যানারে অনুষ্ঠিত এ কর্মসূচিতে রংপুর সাংবাদিক ইউনিয়ন-আরপিইউজে, প্রেস ক্লাব, সিটি প্রেস ক্লাব, রিপোর্টার্স ক্লাব, রিপোর্টার্স ইউনিটি, বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন, টেলিভিশন ক্যামেরা জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন ও অনলাইন জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনসহ দুই শতাধিক গণমাধ্যমকর্মী অংশ নেন।

রংপুর সাংবাদিক ইউনিয়ন-আরপিইউজের সভাপতি সালেকুজ্জামান সালেকের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সরকার মাজহারুল মান্নানের সঞ্চালনায় কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন ভুক্তভোগি ও সম্মিলিত সাংবাদিক সমাজের সদস্য সচিব লিয়াকত আলী বাদল, প্রেস ক্লাব ও সিটি প্রেস ক্লাবের নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিনিধিরা।

ঘটনার বিবরণে বলা হয়, ২১ সেপ্টেম্বর সকাল ১১টার দিকে নগরীর কাচারীবাজার থেকে “জুলাই যোদ্ধা” পরিচয়ের রকি নামে এক যুবকের নেতৃত্বে ২০–২৫ জন সন্ত্রাসী লিয়াকত আলী বাদলকে জোরপূর্বক অপহরণ করেন। পরে তাকে সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে নিয়ে গিয়ে সেখানে মারধর ও গালিগালাজ করা হয়। সাংবাদিকদের দ্রুত হস্তক্ষেপে তাকে উদ্ধার করা হয়, কিন্তু পরে সিটি করপোরেশনের প্রধান ফটকের সামনে তাকে আবারও আটকে নির্যাতন করা হয়।

ঘটনার পর লিয়াকত আলী বাদল সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে ফাতেমা, ট্রেড লাইসেন্স শাখার প্রধান মিজানুর রহমান মিজু, সাবেক কাউন্সিলর লিটন পারভেজসহ ১৪ জন ও ২০–২৫ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। তবে পুলিশের গ্রেফতারে মাত্র দু’জন আসামি অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন, বাকিরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লাইভ দিয়ে হুমকি প্রদর্শন করছে।

স্মারকলিপিতে সাংবাদিকরা দাবি করেন, তিন দিনের মধ্যে নামীয় ও অজ্ঞাত আসামিদের গ্রেফতার এবং মামলার চার্জশিট দ্রুত দাখিল করতে হবে। তা না হলে ধারাবাহিক আন্দোলনের ঘোষণা দেন তারা।

পুলিশ কমিশনার মোঃ মজিদ আলী ঘেরাও কর্মসূচিতে উপস্থিত হয়ে সাংবাদিকদের স্মারকলিপি গ্রহণ করেন এবং জানান, ইতিমধ্যেই দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেফতারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং দ্রুত চার্জশিট দাখিলের কাজ চলছে।

ঘটনার প্রেক্ষিতে সিটি করপোরেশনের প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনার শহিদুল ইসলাম ট্রেড লাইসেন্স শাখার প্রধান মিজানুর রহমান মিজু, প্রধান প্রশাসনিক কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর কবির শান্ত ও সহকারি রাজস্ব কর্মকর্তা তম্ময়কে বদলি করেছেন।

এদিকে, সাংবাদিক সমাজের নেতৃত্বে এ কর্মসূচি প্রধানত সংবাদপত্রে প্রকাশিত “রংপুরে জুলাই যোদ্ধার নামে অটো লাইসেন্স-বাণিজ্য” শিরোনামের প্রতিবেদন সম্পর্কিত ঘটনার প্রতিবাদ এবং সুষ্ঠু বিচার দাবির জন্য অনুষ্ঠিত হয়েছে।

উপরে