প্রেমের টানে বিয়ে, স্বীকৃতির দাবিতে অনশন—শেষ পর্যন্ত গাছে বেঁধে মারধর
টাঙ্গাইলের সখীপুরে স্ত্রীর স্বীকৃতি দাবি করায় এক নারীকে (৩০) গাছে বেঁধে মারধরের অভিযোগ উঠেছে এক তরুণ ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার একটি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার ভিডিও ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
এ ঘটনায় শুক্রবার দুপুরে ওই নারীর বাবা বাদী হয়ে সখীপুর থানায় মামলা করেন। মামলায় মূল আসামি করা হয়েছে আবদুর রশিদ (২১) নামের এক তরুণকে। তাঁর পরিবারের আরও কয়েকজন সদস্যের বিরুদ্ধেও অভিযোগ আনা হয়েছে।
মামলার এজাহার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ফেসবুকে পরিচয়ের সুবাদে বছর খানেক আগে রশিদ ও ওই নারীর মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরে ছয় মাস আগে তাঁরা আদালতে গিয়ে নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে বিয়ে করেন। তবে কিছুদিন আগে রশিদ হঠাৎ যোগাযোগ বন্ধ করে দেন এবং বিয়ের বিষয়টি অস্বীকার করেন। স্ত্রী হিসেবে স্বীকৃতির দাবিতে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে রশিদের বাড়িতে গিয়ে অনশনে বসেন ওই নারী। দুপুরের দিকে রশিদ ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা তাঁকে গাছে বেঁধে কঞ্চি দিয়ে মারধর করেন বলে অভিযোগ ওঠে। এতে তিনি গুরুতর আহত হন।
ঘটনার খবর পেয়ে স্থানীয় এক গণমাধ্যমকর্মী সেখানে গেলে অভিযুক্তরা দ্রুত সটকে পড়েন। পরে ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে ওই নারীর বাবা তাঁকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই নারী বলেন,
“স্ত্রীর মর্যাদা ফিরে পেতে রশিদের বাড়িতে অনশনে বসেছিলাম। তাঁর পরিবারের সদস্যরা আমাকে গাছে বেঁধে প্রায় আধা ঘণ্টা ধরে কঞ্চি দিয়ে মারধর করেছেন। আমি এই নির্যাতনের বিচার চাই।”
অভিযোগের বিষয়ে আবদুর রশিদ মুঠোফোনে বলেন,
“ওই নারী প্রেম করার সময় বয়স, আগের বিয়ে ও সন্তান থাকার বিষয় গোপন করেছিলেন। কয়েক মাস আগে পরিকল্পিতভাবে আমাকে কাবিননামায় স্বাক্ষর করানো হয়। তিনি আমার চেয়ে বয়সে ১০ বছরের বড়। কয়েক দিন আগেও আমাদের বাড়িতে এসেছিলেন। বারবার বিরক্ত করায় তাঁকে গাছে বেঁধেছিলাম, তবে কোনো নির্যাতন করিনি।”
সখীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম ভূঁইয়া বলেন,
“ওই নারীর বাবার দায়ের করা মামলার পর আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।”
