প্রকাশিত : ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ২৩:৩১

শেরপুরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শেখ হাসিনার ছবি: প্রধান শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ

উপজেলা সংবাদদাতা, শেরপুর, বগুড়াঃ
শেরপুরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শেখ হাসিনার ছবি: প্রধান শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ
গত বৃহস্পতিবার ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে শেরপুর পাইলট উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের দুর্নীতিবিরোধী বিতর্ক প্রতিযোগিতা চলাকালীন সময়। ছবি- সংগৃহীত।

বগুড়ার শেরপুর উপজেলায় একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আয়োজিত দুর্নীতিবিরোধী বিতর্ক প্রতিযোগিতায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি সম্বলিত ল্যাপটপ ব্যবহারের ঘটনায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করেছেন।

ঘটনাটি ঘটে গত বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) শেরপুর পাইলট উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে, যেখানে উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির উদ্যোগে একটি দুর্নীতিবিরোধী বিতর্ক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি নিমাই ঘোষ, বিদ্যালয় অ্যাডহক কমিটির সভাপতি ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ মাহমুদুল হাসান, বগুড়া জেলা দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এর উপসহকারী পরিচালক রোকনুজ্জামান, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ নজরুল ইসলামসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।

বিতর্কের সূত্রপাত
ছাত্রছাত্রীদের পুরস্কার বিতরণের সময় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবি থেকে দেখা যায়, প্রতিযোগিতায় ব্যবহৃত একটি ল্যাপটপের পেছনে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি সম্বলিত একটি পোস্টার সংযুক্ত ছিল। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী (৫ আগস্ট ২০২৪ থেকে), পতিত সরকারের কোনো প্রধানমন্ত্রীর ছবি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে রাখা যাবে না। এই নির্দেশনা অমান্য করার অভিযোগে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ নজরুল ইসলাম প্রধান শিক্ষক মোঃ আবু সাঈদ শেখকে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করেন। প্রধান শিক্ষক রবিবার নোটিশ গ্রহণ করেছেন।

প্রতিক্রিয়া ও ব্যাখ্যা
বিদ্যালয় অ্যাডহক কমিটির সভাপতি ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ মাহমুদুল হাসান গণমাধ্যমকে বলেন, “আমি বিতর্ক প্রতিযোগিতায় উপস্থিত ছিলাম না। তবে সরকারি নির্দেশনা অমান্য করাকে গুরুতর অন্যায় মনে করি। সংশ্লিষ্ট বিভাগের প্রক্রিয়া ইতোমধ্যে শুরু করেছে। প্রমাণিত হলে শাস্তি হওয়া উচিত, যাতে ভবিষ্যতে কেউ এমন ঘটনা করার সাহস না পায়।” তিনি আরও বলেন, “শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আইনবহির্ভূত প্রতীক বা ছবি থাকা কখনো কাম্য নয়।”

প্রধান শিক্ষক মোঃ আবু সাঈদ শেখ বলেন, “শেখ হাসিনার ছবি সম্বলিত ল্যাপটপটি দীর্ঘদিন ব্যবহার হয়নি। ওইদিন বিতর্ক প্রতিযোগিতায় লক্ষ্য না করেই ল্যাপটপটি ব্যবহৃত হয়েছে। বিষয়টি নজরে আসার পরপরই ছবিটি সরিয়ে ফেলা হয়েছে। এটি ইচ্ছাকৃত নয়, একটি অসাবধানতা।” তিনি লিখিত জবাবে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়েছেন।

বগুড়া জেলা দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এর উপসহকারী পরিচালক রোকনুজ্জামান মুঠোফোনে জানান, তিনি বিতর্ক প্রতিযোগিতায় উপস্থিত ছিলেন, তবে বিতর্কিত ছবি বিষয়ে অবগত নন। পরে তিনি বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত মন্তব্য করবেন বলে জানান।

বগুড়া জেলা প্রশাসক হোসনে আফরোজা বলেন, “আমি যোগদানের পর থেকেই সকলকে ওয়েবসাইট আপডেট করতে এবং পূর্বের সব ছবি সরিয়ে ফেলতে নির্দেশ দিয়েছি। বিতর্কিত ছবি সম্বলিত ল্যাপটপ কীভাবে অনুষ্ঠানে এলো, এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষককে জবাব দিতে বলা হয়েছে এবং তার ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

উপরে