জয়পুরহাটে চিশতীয়া তরিকতের ফাতেহা শরিফে ভক্ত-অনুসারীদের ঢল

জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার হিন্দা শাহী মসজিদ প্রাঙ্গণে চিশ্তীয়া তরিকতের এক ভক্তের বার্ষিক ফাতেহা শরিফ উপলক্ষে শনিবার (১১ অক্টোবর) দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত হয় এক মহাসমাবেশ। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত মসজিদ চত্বরে ভক্ত-অনুসারীদের ঢল নামে। আয়োজকদের ভাষ্যমতে, এ বছর প্রায় ৪০ থেকে ৪৫ হাজার নারী-পুরুষ ভক্ত অংশ নেন অনুষ্ঠানে। তাদের আপ্যায়নে রান্না করা হয় প্রায় ৮০ মন চাল ও ৫০ মন ডাল।
জানা যায়, কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর উপজেলার পীরকাশীমপুর গ্রামের চিশ্তীয়া তরিকতের আধ্যাত্মিক সাধক হযরত খাজা শাহ মওলানা মোহাম্মদ আব্দুল গফুর চিশতী আলহাক (রহ.) জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার গেগুনগ্রামে তরিকতের প্রথম আশ্তানা প্রতিষ্ঠা করেন। তরিকতের বাণী প্রচারের অংশ হিসেবে তিনি কালাই ও ক্ষেতলাল উপজেলায় চারটি মাদ্রাসা, হিন্দা কসবা গ্রামে একটি ঈদগাহ মাঠ এবং বাংলা ১৩৬৫ সালে তাঁর তত্ত্বাবধানে মুঘল স্থাপত্যে নির্মিত পাঁচ গম্বুজবিশিষ্ট মনোরম ‘হিন্দা শাহী মসজিদ’ নির্মাণ করেন।
তাঁর এক নিবেদিতপ্রাণ ভক্ত ও মুরিদ পাগল সিফাতুল্লাহ ১৯৯৩ সালে মৃত্যুবরণ করলে তাঁকে হিন্দা শাহী ঈদগাহ মাঠের উত্তর-পশ্চিম কোণে সমাহিত করা হয়। তাঁর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে প্রতিবছরই আয়োজিত হয় ফাতেহা শরিফ, যেখানে দূর-দূরান্ত থেকে হাজারো ভক্ত-অনুসারী অংশ নেন।
অনুষ্ঠানকে ঘিরে সকাল থেকেই এলাকায় উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে পড়ে। আত্মীয়-স্বজন ও অতিথিদের আপ্যায়নে প্রতিটি পরিবারে চলে বিশেষ আয়োজন। মসজিদ প্রাঙ্গণ ও আশপাশে বসে শতাধিক অস্থায়ী দোকান—প্রসাধনী, খেলনা, মিষ্টি ও নানারকম পণ্যের পসরা সাজিয়ে। ফলে পুরো এলাকা পরিণত হয় এক মিলনমেলায়।
দিনভর ভক্তদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করে আয়োজক কমিটি। রাতে চিশ্তীয়া তরিকতের নিয়ম অনুযায়ী অনুষ্ঠিত হয় হালকায়ে জিকির, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল। শেষে ভক্তদের মধ্যে তাবারক বিতরণ করা হয়।
এদিকে, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে অনুষ্ঠানে কয়েকজন মনোনয়ন প্রত্যাশী রাজনীতিকের উপস্থিতিও লক্ষ্য করা গেছে। তাঁদের মধ্যে ছিলেন—বিএনপির জয়পুরহাট-২ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী ও সাবেক সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোস্তফা, কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ–সাংগঠনিক সম্পাদক (রাজশাহী বিভাগ) ওবায়েদুর রহমান চন্দন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রনেতা আব্বাস আলী।