নন্দীগ্রামে গো-খাদ্যের তীব্র সংকট: খড়ের আগুনছোঁয়া দাম, বিপাকে খামারি ও কৃষক

বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলায় গো-খাদ্য খড়ের ভয়াবহ সংকট দেখা দিয়েছে। এতে মারাত্মক বিপাকে পড়েছেন স্থানীয় খামারি ও কৃষকরা। অনেকেই বিকল্প হিসেবে রান্নার কাজে ব্যবহৃত গত বছরের আমন ধানের নাড়া (ধানের গোড়া) এমনকি কাঁচা ধান কেটে গরুকে খাওয়াতে বাধ্য হচ্ছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গরুর প্রধান গো-খাদ্য হিসেবে খড়ের চাহিদা সর্বাধিক। কিন্তু এবছর আমন ধানের ফলন কম হওয়ায় খড়ের উৎপাদনও ব্যাপকভাবে হ্রাস পেয়েছে। ফলে খড়ের জোগান সংকুচিত হয়ে পড়েছে এবং বাজারে দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রতি কেজি প্রায় ৩০ টাকা। ছোট একটি খড়ের বোঝা বিক্রি হচ্ছে ১,৮০০ থেকে ২,০০০ টাকায়। তাও পর্যাপ্ত সরবরাহ না থাকায় বেশি দাম দিয়েও খড় কিনতে পারছেন না অনেকে।
নন্দীগ্রাম উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজার ঘুরে দেখা গেছে, খড়ের অভাবে হতাশ কৃষকরা অনেকেই গরু বিক্রির সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। কেউ কেউ দুধ উৎপাদন কমে যাওয়ায় ক্ষতির মুখে পড়েছেন।
খামারি জয়নাল আবেদীন বলেন,
“আগে এক বোঝা খড় ৬০০-৭০০ টাকায় পাওয়া যেত, এখন দুই হাজার টাকায়ও ঠিকমতো পাওয়া যায় না। গরুকে খাওয়াবো কী দিয়ে? বাধ্য হয়ে একটা গরু বিক্রি করে দিয়েছি।”
আরেক খামারি নাজমুল হোসেন জানান,
“খড় নেই, ঘাস নেই—সবাই মাঠ থেকে ঘাস কেটে নিচ্ছে। এখন গরুকে শুধু পানি খাওয়াই, তাও কষ্ট লাগে।”
খড়ের এমন তীব্র সঙ্কটের কারণে ছোট ছোট খামার বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয় খামারিরা। খড়ের দাম নিয়ন্ত্রণে না এলে গো-খাদ্যের এই ঘাটতি দীর্ঘমেয়াদে দেশের গবাদি পশু উৎপাদন খাতের ওপর মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
তবে অনেক খামারি ইতোমধ্যে বিকল্প গো-খাদ্য হিসেবে ন্যাপকিয়ার ঘাস, ভুট্টার খড়, ডালের খোসা ও খৈলজাত খাবার ব্যবহারের দিকে ঝুঁকছেন।