‘মৃতদেহও রক্ষা পেল না’ - মর্গে তরুণীকে ধর্ষণের দায় স্বীকার করল লাশবাহক

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্তের জন্য রাখা এক তরুণীর মরদেহ ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার লাশবাহক আবু সাঈদ (১৯) আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। বুধবার বিকেলে তাঁকে ময়মনসিংহ অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. শরিফুল হকের আদালতে হাজির করা হলে তিনি এ স্বীকারোক্তি দেন।
গ্রেপ্তার আবু সাঈদ হালুয়াঘাট উপজেলার খন্দকপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। তিনি প্রায় তিন বছর ধরে হালুয়াঘাট থানা থেকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের মর্গে মরদেহ আনা–নেওয়ার কাজ করতেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, গত রোববার (১৯ অক্টোবর) রাতে হালুয়াঘাট উপজেলার এক গ্রাম থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় ২০ বছর বয়সী এক তরুণীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত তরুণী শেরপুর সরকারি কলেজের অনার্স শিক্ষার্থী ছিলেন। তাঁর মৃত্যুর ঘটনায় একটি অপমৃত্যুর (ইউডি) মামলা করা হয়।
মৃত্যুর আগে তরুণী একটি সুইসাইড নোট লিখে যান, যাতে লেখা ছিল, “আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়। এই দুনিয়া থেকে আমার মন উঠে গেছে।” পরদিন সোমবার সকালে তাঁর মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়।
ধর্ষণের অভিযোগ ও গ্রেপ্তার
পুলিশের ভাষ্য অনুযায়ী, সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মরদেহ মর্গে রেখে প্রথমবার বের হওয়ার পর দ্বিতীয়বার মর্গে প্রবেশ করেন আবু সাঈদ। ওই সময় তিনি তরুণীর মরদেহ ধর্ষণ করেন।
ময়নাতদন্ত করতে গিয়ে চিকিৎসক ধর্ষণের আলামত পেলে বিষয়টি পুলিশকে জানান। এরপর সোমবার রাতেই আবু সাঈদকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদে তিনি অপরাধ স্বীকার করেন।
চিকিৎসক ও পুলিশের বক্তব্য
ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এ এন এম আল মামুন বলেন,
“ময়নাতদন্তের সময় মরদেহে ধর্ষণের আলামত পাওয়া যায়। বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশকে জানানো হয়।”
ময়মনসিংহ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন,
“ধর্ষণের আলামত পাওয়ার পর তদন্ত শুরু হয়। আবু সাঈদ জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন যে, সুরতহাল রিপোর্ট আনার কথা বলে দ্বিতীয়বার মর্গে গিয়ে তিনি মরদেহ ধর্ষণ করেন। এটি তাঁর প্রথম অপরাধ বলে দাবি করেছে সে।”
পুলিশ জানায়, ঘটনাটিকে “অত্যন্ত নৃশংস ও মানবিকতার সীমা লঙ্ঘনকারী” অপরাধ হিসেবে দেখা হচ্ছে। আবু সাঈদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও মরদেহ অবমাননার ধারায় মামলা করা হয়েছে।